দেশের ব্যাংক খাত সংস্কারে বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ১ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ১৭৫ কোটি ডলারের ঋণ দিচ্ছে। এর মধ্যে এডিবি তিন ধাপে ১৩০ কোটি ডলার আর বিশ্বব্যাংক দেবে ৪০ থেকে ৪৫ কোটি ডলার।
ব্যাংকখাত সংস্কারের পাশাপাশি এ ঋণসহায়তা বাংলাদেশ ব্যাংকের আধুনিকায়ন এবং সক্ষমতা বাড়ানোর কাজেও ব্যয় করা হবে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে। ঋণসহায়তা মিলতে পারে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকেও। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র বলছে, বিশ্বব্যাংক থেকে ৪০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণের বিষয়ে আলোচনা শুরু হলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে ঋণের পরিমাণ বাড়িয়ে ৪৫ কোটি ডলার করা নিয়ে এখন আলোচনা চলছে। ব্যাংকখাত সংস্কারে এডিবি ১৩০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে। এ ঋণ দুর্বল ব্যাংকগুলোকে পুনর্মূলধন হিসেবে দেওয়া যায় কি না, তা নিয়েও আলোচনা শুরু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ভঙ্গুর হয়ে পড়ে দেশের ব্যাংকখাত। নাজুক পরিস্থিতি তৈরি হয় অন্তত ১০টি ব্যাংকে। সরকার পতনের পর ব্যাংকখাত সংস্কারে জোর দেয় অন্তর্র্বর্তী সরকার।
নতুন গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর ১০টি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করেন। যার মধ্যে ৯টির নিয়ন্ত্রণ ছিল শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রম্নপের হাতে। এসব ব্যাংক থেকে গ্রম্নপটি নামে-বেনামে প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা বের করে নিয়েছে। বিপুল পরিমাণ এ ঋণ আদায় করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে নতুন পর্ষদ। এ অবস্থায় চরম তারল্য সংকটে পড়েছে এসব ব্যাংক।
সরকার ব্যাংকখাত সংস্কারে কমিশন গঠনের পরিবর্তে দ্রম্নত তিনটি টাস্কফোর্স করার পরিকল্পনা করছে। কমিশন গঠনে দীর্ঘ সময় লেগে যাবে, এ কারণে টাস্কফোর্সের মাধ্যমে শিগগির সংস্কার শুরু করতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক। টাস্কফোর্সগুলো যেন যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারে, সেজন্য দেশি-বিদেশি সর্বোচ্চ কারিগরি জ্ঞান ও সহায়তা নেওয়া হতে পারে।
ব্যাংকখাত সংস্কারে বিশ্বব্যাংক ৪০ কোটি ডলার দিতে পারে, যার সুদহার হবে ৬ থেকে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশের মধ্যে। একই সুদহারে এডিবি থেকে ১৩০ কোটি ডলার ঋণ পাওয়া নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তিন দফায় এডিবি প্রথম বছরে ৫০ কোটি ডলার, দ্বিতীয় বছরে ৫০ কোটি ও তৃতীয় বছরে ৩০ কোটি ডলার দিতে পারে।