ডিকার্বনাইজেশন প্রবিধানের উদ্যোগ

পণ্য পরিবহণে বাড়বে শিপিং ব্যয়

প্রকাশ | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ঠেকাতে সারাবিশ্বেই কার্বন নিঃসরণ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি হয়েছে। এর প্রভাব পড়ছে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারে। পরিবহণ খাত বিবেচনায় নিলে সড়কে বিদু্য চালিত নতুন নতুন যানের উদ্ভাবন নিট-শূন্য কার্বন নিঃসরণ লক্ষ্যমাত্রাকে অনেকটাই এগিয়ে দিচ্ছে। তবে তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে রয়েছে বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনের অন্যতম মাধ্যম শিপিং শিল্প। এরই মধ্যে এ খাতে ভারসাম্য তৈরিতে ডিকার্বনাইজেশন প্রবিধানের উদ্যোগ নিয়েছে একাধিক পক্ষ। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এ খাতে যেকোনো ধরনের পরিবর্তনে জাহাজ মালিক ও অপারেটর কোম্পানিগুলো সামনের বছরগুলোয় অতিরিক্ত খরচের সম্মুখীন হবেন। এমনকি শিপিং খরচ দ্বিগুণ হয়ে যেতে পারে। জাহাজ শিল্পে বিকল্প জ্বালানির পরীক্ষা ও বাস্তবায়নের জন্য নতুন ধরনের প্রযুক্তি ও পরিকাঠামোর বিকাশ প্রয়োজন, যা বাণিজ্যিক জাহাজ কোম্পানিগুলোর ঘাড়ে বড় ধরনের খরচ ঝুলিয়ে দিতে পারে। সেই খরচ পুষিয়ে নিতে বাড়তে পারে পণ্যের দাম। নিট-শূন্য কার্বন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও) সম্প্রতি ২০৫০ সাল মেয়াদি উদ্যোগ নিয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষক সংস্থা ডেট নর্স্ক ভেরিটাস এএসের (ডিএনভি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইএমওর লক্ষ্য পৌঁছানোর জন্য কার্বন অপসারণ ও পরিবেশের ওপর শিপিংয়ের প্রভাব কমাতে নতুন প্রযুক্তি ও জ্বালানি প্রয়োজন, যা সামগ্রিকভাবে শিপিং ও ভোক্তাদের জন্য ব্যয়বহুল হবে। এতে কনটেইনারবাহী জাহাজের ভাড়া আগামী ২৫ বছরে দ্বিগুণ হতে পারে। আর বাড়তি অর্থের চাপ শেষ পর্যন্ত ক্রেতাদের ওপরই আসবে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শিপিং রুট যেমন গুরুত্বপূর্ণ, ভবিষ্যতে তেমনই থাকবে বলে পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে। কিন্তু গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণে জাহাজ শিল্প অন্যতম ও ক্রমবর্ধমান উৎস। ইউরোপীয় কমিশনের মতে, ২০১৮ সালে মানুষের কারণে সৃষ্ট বিশ্বব্যাপী কার্বন নিঃসরণের প্রায় ২ দশমিক ৯ শতাংশের জন্য দায়ী ছিল জাহাজ শিল্প। পণ্যের চাহিদা বাড়ায় শিপিংয়ের চাহিদাও প্রতি বছর বাড়ছে। এর সঙ্গে পালস্না দিয়ে ক্রমবর্ধমান উচ্চ তাপমাত্রা ও চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ায় প্রভাব ফেলছে এ শিল্প। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বৈশ্বিক পরিসরে সবচেয়ে বড় সমঝোতা হলো প্যারিস চুক্তি। ২০১৬ সালের এ চুক্তিকে মান্যতা দিয়েই সাধারণত জলবায়ু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, শিপিংয়ের কারণে যদি জলবায়ু পরিবর্তনের চলমান প্রভাব অব্যাহত থাকে, তবে এটি প্যারিস চুক্তির উদ্দেশ্যকে ক্ষুণ্ন করবে। কারণ প্রাক-শিল্প যুগ-পরবর্তী বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে সীমিত করার পরিকল্পনা ব্যাহত হবে।