শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
ইউএসডিএ এর প্রতিবেদন

বাংলাদেশে চালের উৎপাদন হ্রাসের পূর্বাভাস

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
  ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বাংলাদেশে চালের উৎপাদন হ্রাসের পূর্বাভাস

বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি অঞ্চল সম্প্রতি স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয়েছে। বন্যার অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধানের আবাদযোগ্য জমি। এ কারণে পূর্বাভাসে বাংলাদেশের চালের উৎপাদন প্রক্ষেপণ কমিয়ে এনেছে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিস (এফএএস)।

সংস্থাটি সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানায়, ২০২৪-২৫ বিপণন বর্ষে দেশে ধানের আবাদযোগ্য অঞ্চল ১ কোটি ১৫ লাখ হেক্টর ও চাল উৎপাদন ৩ কোটি ৬৮ লাখ টনে নেমে যেতে পারে।

এফএএসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৩১ জুলাইয়ের পর থেকে সরকারি বা বেসরকারি খাত বাংলাদেশে চাল আমদানি করেনি। এছাড়া ভারত নন-বাসমতি সাদা চালের রপ্তানি সীমিত করেছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকায় বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকেও বাংলাদেশের চাল আমদানি করার সম্ভাবনা কম। কারণ এতে আমদানি খরচ স্থানীয় মূল্যের তুলনায় বেশি হবে। কম উৎপাদন ও চাল আমদানির চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় দেশের চালের মূল্য শিগগিরই বাড়তে থাকবে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে এফএএস।

বাংলাদেশে চালের নিম্নমুখী উৎপাদন ও বাড়তি দামের কারণে চালের চাহিদার পূর্বাভাসও সংশোধন করেছে এফএএস। প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানায়, ২০২৪-২৫ বিপণনবর্ষে দেশে প্রধান ভোগ্যপণ্যটির চাহিদা ৩ কোটি ৭৭ লাখ টনে নেমে যেতে পারে। চাহিদার এ পূর্বাভাস আগের দেওয়া প্রাক্কলনের তুলনায় তিন লাখ টন কম।

এফএএস আরও জানায়, ২০২২ সালের আগস্ট থেকে বাংলাদেশ টানা মূল্যস্ফীতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এতে ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতায় প্রভাব পড়ছে।

বাংলাদেশে চালের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রধান খাদ্যপণ্য গম। এফএএস জানায়, দেশে চালের চাহিদা কমে গেলে ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে গমের চাহিদা। কারণ গমের আটা (আটা) চালের তুলনায় একটি সস্তা বিকল্প। গমের স্থানীয় উৎপাদন মোট চাহিদার ১৫ শতাংশ পূরণ করে। এফএএসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ বিপণনবর্ষে বাংলাদেশে গমের আবাদযোগ্য অঞ্চল ৩ লাখ ১০ হাজার হেক্টর ও উৎপাদন ১১ লাখ টন হতে পারে। এছাড়া এ সময় দেশে গম আমদানির পরিমাণ হতে পারে ৬৬ লাখ টন, যা এর আগে দেওয়া পূর্বাভাসের তুলনায় ৬ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে গমের স্থিতিশীল দাম, প্রয়োজনীয় সরবরাহ ও চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী থাকায় গমের আমদানি বৃদ্ধির এমন পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।

অন্যদিকে এফএএস বাংলাদেশ খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত চূড়ান্ত বাণিজ্য তথ্যের ভিত্তিতে ২০২৩-২৪ বিপণন বর্ষের জন্য গম আমদানি পূর্বাভাস ৬৮ লাখ টনে সংশোধন করেছে। ২০২২-২৩ বিপণন বর্ষের তুলনায় এ পূর্বাভাস ৩৩ শতাংশ বেশি।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের মে মাসে ভারত গম রপ্তানি নিষিদ্ধ করার পর বাংলাদেশের আমদানিকারকরা বিকল্প দেশগুলো থেকে গম আমদানি করছেন। রাশিয়াসহ ইউক্রেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও ব্রাজিল থেকে বাংলাদেশ বর্তমানে গম আমদানি করছে।

এফএএসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বাংলাদেশে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গমের চাহিদা হতে পারে ৭৭ লাখ টন। এর আগের বিপণনবর্ষে যা ছিল ৭৫ লাখ টন ও ২০২২-২৩ বিপণনবর্ষে এর পরিমাণ ছিল ৬৭ লাখ টন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে