শেয়ারবাজারে ভিন্ন পস্নাটফর্মে নামছে দুর্বৃত্তরা

প্রকাশ | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
ব্যাংক খাতের বাইরে দেশের অর্থনীতির আরেকটি বড় ক্ষেত্র শেয়ারবাজার। গত দেড় দশকে আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের সময় সেই শেয়ার বাজারও রেহাই পায়নি দুর্বৃত্তায়নের হাত থেকে। একের পর এক কেলেঙ্কারি ও কারসাজির ঘটনায় বারবার বিপর্যস্ত হয়েছে শেয়ারবাজার, সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। গত কয়েক বছরে বেশির ভাগ কারসাজির ঘটনায় নাম এসেছে সমবায় অধিদপ্তরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার আবুল খায়ের হিরো। একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়েও শেয়ারবাজার কারসাজি ও লুটপাটের নেতৃত্ব দিয়েছেন হিরো। তার বেপরোয়া কর্মকান্ড নিয়ে সমালোচনার শেষ নেই। কিন্তু হিরোকে শেয়ারবাজারের খলনায়ক বানিয়ে তোলার পেছনে মূল কারিগর যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বরাবরই রয়ে গেছেন আড়ালে। হিরোর সঙ্গে যোগসাজশে শেয়ারবাজার থেকে কোটি কোটি টাকা লোপাট করেছেন তিনি। শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক বিতর্কিত চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামেরও অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন মিজান। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শিবলী এবং হিরোরা বেকায়দায় পড়লেও অধ্যাপক মিজান আছেন বহাল তবিয়তে। ভোল পাল্টে এখন নতুন প্রেক্ষাপটে মিশে যাওয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছেন তিনি। গত সোমবার একটি বেসরকারি ব্যাংকের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের জন্য বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ত্রাণ তহবিলে টাকা হস্তান্তর করা হয়। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ড. মিজান। কিন্তু তিনি ওই ব্যাংকটির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। প্রশ্ন উঠেছে, ব্যাংকের কেউ না হয়ে সেই অনুষ্ঠানে মিজান কীভাবে উপস্থিত হলেন? জানা গেছে, নিজের অপকর্ম ঢাকতে এবং বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের আনুকূল্য পেতে ওই ব্যাংকের বিতর্কিত চেয়ারম্যানের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওই আয়োজনে উপস্থিত হয়েছিলেন মিজান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান একসময় বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু সহকর্মীর সঙ্গে খারাপ আচরণ এবং গায়ে হাত তোলার ঘটনায় তাকে ২০২৩ সালের এপ্রিলে ঢাবি সাদা দলের সবপর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। হিরোর মতো বিতর্কিত ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুম ও টিচারস লাউঞ্জ আধুনিকায়ন করেও সমালোচনার জন্ম দেন মিজান। সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, শেয়ারবাজারে অনৈতিক প্রভাব বিস্তারে একটি সিন্ডিকেট হয়ে কাজ করতেন হিরো ও মিজান। শেয়ার কারসাজির মাধ্যমে শতশত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন তারা। নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পরিকল্পিতভাবে সমাজের প্রভাবশালীদের সুসম্পর্ক গড়ে তুলত এই সিন্ডিকেট।