কৃষি ঋণ বিতরণে দালালদের আধিপত্য রোধে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করবে বলে জানিয়েছেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, কৃষি ঋণ বিতরণ নিয়ে আমরা স্ট্যাডি করব, দেখব প্রকৃত কৃষক এই ঋণ পাচ্ছে কিনা। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বিকালে কৃষি ও পলস্নী ঋণনীতি ঘোষণাকালে এসব কথা জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। এ সময় ডেপুটি গভর্নর, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাসহ বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে জিডিপির প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশে কৃষি খাতে পর্যাপ্ত ঋণ প্রবাহের গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে ব্যাংকসমূহের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ৩৮ হাজার কোটি টাকা কৃষি ও পলস্নী ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এ লক্ষ্যমাত্রা বিগত ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ৩৫ হাজার কোটি টাকার তুলনায় ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেশি।
এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকসমূহের জন্য ১২ হাজার ৬১৫ কোটি টাকা। আর বেসরকারি ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের জন্য ২৫ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা কৃষি ও পলস্নী ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
গভর্নর আরও বলেন, কৃষি ঋণ বিতরণে দালালদের আধিপত্য রোধে কাজ করতে চাই। আমরা একটা স্ট্যাডি করতে চাই, সেখানে দেখব প্রকৃত কৃষক কৃষি ঋণ পাচ্ছেন কিনা। এর মাধ্যমে দালালদের দৌরাত্ম্য আসলে কতটুকু, সেটা দেখব।
তিনি বলেন, এখন আমদানি বাড়ছে দিন দিন। কৃষি ঋণ বিতরণের কারণে যদি উৎপাদন বাড়ে, তাহলে আমদানি কমে আসবে। তবে আমদানি চাহিদা বাড়ছে- এটা বাড়তে থাকবে। এ জন্য ব্যাংকগুলোকে বলেছি, এই ঋণ বিতরণে টার্গেট যেন পূরণ করা হয়।
গভর্নর আরও বলেন, বিদ্যমান মূূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ দেশের দারিদ্র্য বিমােচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রান্তিক ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আয় বৃদ্ধি ও টেকসই অর্থনীতি লক্ষ্যে কৃষি ও পলস্নী খাতে যথাসময় পর্যাপ্ত অর্থের জোগান একান্ত প্রয়োজন। দেশের কৃষিপণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এবং গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান ও আয় বৃদ্ধিতে; সর্বাপরি সামষ্টিক অর্থনীতির ব্যবস্থাপনা ও টেকসই উন্নয়নে প্রতিষ্ঠার নীতিমালা ও কর্মসূচি কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করে।