যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ) চলতি বছর বৈশ্বিক চাল উৎপাদনের পূর্বাভাস সংশোধন করেছে। আগের পূর্বাভাস থেকে ৪ লাখ ৬৪ হাজার টন চাল কম উৎপাদন হতে পারে বলে জানিয়েছে তারা। তবে সংশোধনের পরও ২০২৪-২৫ সালে রেকর্ড পরিমাণ চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখছে ইউএসডিএ। ফলে চালের দামও কমে আসতে পারে।
ইউএসডিএর রাইস আউটলুক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪-২৫ সালে বৈশ্বিক চাল উৎপাদনের আগের পূর্বাভাস কমিয়ে ৫২ কোটি ৭৭ লাখ টনে নামিয়ে এনেছে ইউএসডিএ। তবে পূর্বাভাস কিছুটা কমানো হলেও রেকর্ড উৎপাদন হবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ইকোনমিক রিসার্চ সার্ভিস (ইআরএস)।
মার্কিন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভিয়েতনাম, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনে চাল উৎপাদনের পূর্বাভাস কমানো হয়েছে, তবে রাশিয়া ও কাজাখস্তানে বাড়ানো হয়েছে। বিশ্বব্যাপী চালের ঘরোয়া ও অন্যান্য ব্যবহার ২০২৪-২৫ সালে রেকর্ড ৫২ কোটি ৭০ লাখ টন হতে পারে বলে পূর্বাভাসে বলা হয় যা আগের পূর্বাভাসের তুলনায় সামান্য কম।
ইআরএস জানায়, ২০২৪ সালে মোট ৫ কোটি ৫২ লাখ টন চাল আমদানি-রপ্তানি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে যা আগের পূর্বাভাস থেকে ১ লাখ ১২ হাজার টন বেশি। এ বছর থাইল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে রপ্তানি বাড়বে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিগত মাসগুলোয় থাইল্যান্ডের নিয়মিত (সুগন্ধিযুক্ত নয়) চালের দাম ১-২ শতাংশ কমেছে। ভিয়েতনামের ৫ শতাংশ খুদযুক্ত চালের দাম গত মাসে কিছুটা বেড়েছে। অন্যদিকে আর্জেন্টিনা ছাড়া দক্ষিণ আমেরিকা থেকে রপ্তানি হওয়া চালের দাম গত মাসের তুলনায় বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মোটা ও মাঝারি চালের দাম গত মাসে অপরিবর্তিত ছিল। যদিও দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের মোটা এবং ক্যালিফোর্নিয়ার মাঝারি এবং চিকন চালের দাম ক্রমাগত কমেছে।
কিছুদিন আগে চাল সরবরাহের পূর্বাভাস কমিয়েছে ইউএসডিএ। বিষয়টি উলেস্নখ করে মার্কিন চাল উৎপাদক সমিতি (ইউএসআরএ) বলছে, এ সত্ত্বেও গত বছরের তুলনায় ফলন বাড়ায় সরবরাহ ১৪ শতাংশ বাড়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তাদের ভাষ্য, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন ও কেনিয়ায় চালের ব্যবহার কমেছে। ফলে বৈশ্বিক ব্যবহারও সামান্য কমেছে। ইউএসডিএ বলছে, ব্রাজিল থেকে কোনো চাল রপ্তানি না হওয়া, ভিয়েতনামের রপ্তানিতে ধীরগতি এবং অভ্যন্তরীণ কারণে ভারতের রপ্তানি ব্যাহত হওয়ায় চালের বৈশ্বিক বাণিজ্য কমেছে।
ইউএসআরএ জানিয়েছে, গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রতি টন চালের দাম কমে ৭৭০ ডলারে নেমে গেছে। গত মার্চের পর চালের দাম ৭৯০ ডলারের আশপাশে ওঠানামা করছে। ফলন বাড়ার পূর্বাভাস থাকায় লাতিন আমেরিকায় চালের চাহিদা থাকা সত্ত্বেও খাদ্যশস্যটির দাম কমেছে। প্রতিবেদন অনুসারে, ব্রাজিল ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্রয় কমায় উরুগুয়ের চালের দাম প্রতি টন ৮০৩ ডলারে নেমে এসেছে।
এদিকে ইন্টারন্যাশনাল ট্রেইনস কাউন্সিল (আইজিসি) জানিয়েছে, প্রধান উৎপাদক দেশগুলোয় সামঞ্জস্যপূর্ণ দামের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে চালের গড় দাম আগের মাসের তুলনায় তেমন পরিবর্তন হয়নি।