দেশের উভয় পুঁজিবাজারে বিদায়ি সপ্তাহে অর্থাৎ ১৮ থেকে ২২ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। সেই সঙ্গে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে বাজার মূলধন কমেছে ৩৫ হাজার ২২২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। পাশাপাশি আলোচ্য সময়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) টাকার পরিমাণে লেনদেন কমেছে। সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্য মতে, সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২০৩.৯২ পয়েন্ট বা ৩.৪৫ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৬৯৯ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৮৮.৭৬ পয়েন্ট বা ৪.০৭ শতাংশ কমে ২ হাজার ৯০ পয়েন্টে, ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৪৫.৬৪ পয়েন্ট বা ৩.৬১ শতাংশ কমে ১ হাজার ২১৯ পয়েন্টে এবং ডিএসএমইএক্স সূচক (এসএমই ইনডেক্স) ৫৮.৪২ পয়েন্ট বা ৪.৫২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৩৩ পয়েন্টে।
বিদায়ি সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৯২ হাজার ৮৩১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আর বিদায়ি সপ্তাহের আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৮ হাজার ৯৬৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ১৬ হাজার ১৩২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
বিদায়ি সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ১২২ কোটি ৫ লাখ টাকা। আর বিদায়ি সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৬ হাজার ৪১১ কোটি ১১ লাখ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ৩ হাজার ২৮৯ কোটি ৭ লাখ টাকা।
বিদায়ি সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯৪টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৩২টির, দর কমেছে ৩৫৭টির ও দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫টির। আর লেনদেন হয়নি ১৯টির।
অপর পুঁজিবাজার সিএসইতে বিদায়ি সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৬৫৩.৫২ পয়েন্ট বা ৩.৮৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৩৭৮ পয়েন্টে। সিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে সিএসই-৩০ সূচক ৩.২১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৯১৫ পয়েন্টে, সিএসসিএক্স ৩.৮৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৮৬৫ পয়েন্টে, সিএসআই সূচক ৩.৯৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৮ পয়েন্টে এবং এসইএসএমইএক্স (এসএমই ইনডেক্স) ১০.২২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৬১ পয়েন্টে।
বিদায়ি সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ২১ হাজার ৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। আর বিদায়ি সপ্তাহের আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৪০ হাজার ৯৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ১৯ হাজার ৯০ কোটি ১ লাখ টাকা।
লেনদেন হয়েছে ৫১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আর বিদায়ি সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৯৫ কোটি ২ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন কমেছে ৪৩ কোটি ২২ লাখ টাকা।
বিদায়ি সপ্তাহে সিএসইতে মোট ৩০০টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ২৮টির, দর কমেছে ২৬০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১২টির শেয়ার ও ইউনিট দর।
সপ্তাহটিতে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে মিডল্যান্ড ব্যাংক পিএলসির। সপ্তাহজুড়ে ব্যাংকটির শেয়ার দর বেড়েছে ১২.০৯ শতাংশ।
সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংকের ৯.৩৩ শতাংশ, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের ৮.৩১ শতাংশ, ইসলামী ব্যাংকের ৭.৭৭ শতাংশ, দুলামিয়া কটনের ৬.০০ শতাংশ, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ৫.৩৩ শতাংশ, অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেনের ৫.০০ শতাংশ, রংপুর ফাউন্ড্রির ৪.৩১ শতাংশ, কেএন্ডকিউয়ের ৩.৫৯ শতাংশ এবং জিকিউ বলপেন ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩.৪৬ শতাংশ শেয়ার দর বেড়েছে।
সপ্তাহটিতে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে এসইএমএল এফবিএলএসএল গ্রোথ ফান্ডের। সপ্তাহজুড়ে ফান্ডটির ইউনিট দর ১৪.৫২ শতাংশ কমেছে।
সাপ্তাহিক দর পতনের শীর্ষ তালিকায় স্থান পাওয়া অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ওরিয়ন ইনফিউশনের ১৪.০৫ শতাংশ, হাইডেবার্গ ম্যাটেরিয়ালসের ১৪.০৩ শতাংশ, রূপালী লাইফ ইন্সু্যরেন্সের ১৪.০২ শতাংশ, খান ব্রাদার্সের ১৩.৮৬ শতাংশ, বেক্সিমকো ফার্মার ১৩.৮২ শতাংশ, ক্রিস্টাল ইন্সু্যরেন্সের ১৩.৭৭ শতাংশ, প্যারামাউন্ট ইন্সু্যরেন্সের ১৩.৭৩ শতাংশ, ওরিয়ন ফার্মার ১৩.৬৩ শতাংশ এবং সোনালী পেপার এন্ড বোর্ড মিলস লিমিটেডের ১৩.৫৬ শতাংশ শেয়ার দর কমেছে।