টানা বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাস ব্যাহত
প্রকাশ | ২৪ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
টানা বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য খালাসের হার ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় কম। তবে কনটেইনার খালাসে জটিলতা হয়নি। বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃষ্টির কারণে বহির্নোঙরে পণ্য খালাস কম হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ডুবে যাওয়ার কারণে ব্যবসায়ীরাও পণ্য খালাস করেনি।
বন্দর থেকে পণ্য খালাসে সমস্যা না হলেও চট্টগ্রাম থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে পণ্য পরিবহণ ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী, কুমিলস্না ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলাকায় বন্যার কারণে সড়কে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। ডুবে গেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। ফলে পণ্য নিয়ে সড়কে আটকা পড়ে আছে পণ্যবাহী যানবাহন। এদিকে চট্টগ্রাম থেকে রেলযোগাযোগ বন্ধ থাকায় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রেলপথেও পণ্য পরিবহণ বন্ধ হয়ে গেছে।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি হওয়া কনটেইনারের ৩ শতাংশ রেলপথে, ১ শতাংশের কম নৌপথে এবং বাকি ৯৬ শতাংশ সড়কপথে আনা-নেওয়া হয়। চট্টগ্রাম থেকে সড়কপথে অধিকাংশ পণ্য ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক হয়ে বিভিন্ন স্থানে যাওয়া-আসা করে। মহাসড়কে বন্যার পানি উঠে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পণ্য আনা-নেওয়া থেমে আছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, বৃষ্টির কারণে বহির্নোঙরে পণ্য কম ছিল। এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন স্থান ডুবে যাওয়ার কারণে বন্দর থেকে ব্যবসায়ীরা পণ্য খালাস করেননি।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ডুবে যাওয়ায় মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সড়কেই আটকা পড়েছে পণ্যবাহী ট্রাকগুলো। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে পণ্য পরিবহণ করে এসব ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থান থেকে ফিরতি পথেও আটকা পড়ছে যানবাহন।
মালিক সমিতিগুলো বলছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এক হাজারের মতো পণ্যবাহী ছোট-বড় ট্রাক আটকা পড়ে আছে। চট্টগ্রামে মিরসরাই উপজেলা থেকে কুমিলস্না জেলা পর্যন্ত সড়কে পানি বেশি। বিশেষ করে ফেনী জেলায় বন্যার পানি বেশি। ফলে স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি সময় লাগবে পণ্য পরিবহণে।
চট্টগ্রাম পণ্য পরিবহণ মালিক ফেডারেশনের সভাপতি আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন, চৌদ্দগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সমিতির দুটি গাড়ি উল্টে গেছে। আটকে আছে প্রায় এক হাজারের মতো গাড়ি। ফলে পণ্য পরিবহণে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেক বেশি লাগছে।
চট্টগ্রাম বন্দর ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক ও কনট্রাক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জাহিদুল আলম বলেন, বন্দর থেকে পণ্য নিতে সমস্যা হয়নি। ডেলিভারি নেওয়ার পর শুকনা পণ্যগুলো পরিবহণ করা হচ্ছে। তবে সড়ক ডুবে যাওয়া ও বৃষ্টির কারণে কাঁচামাল পরিবহণ করা হচ্ছে না।
দেশের বৃহত্তম ভোগ্যপণ্যের বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ এলাকা। আশপাশের চাক্তাই ও আসদগঞ্জসহ এই এলাকায় প্রতিদিন পণ্যবাহী গাড়ি প্রবেশ করে। সাম্প্রতিক সময়ে কারফিউ ও সড়কে সহিংসতার কারণে পণ্য সরবরাহ কমে যায়। এরপর টানা বর্ষণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ডুবে গেলে আরও মন্থর হয় পণ্য পরিবহণ।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সর্বশেষ বুধবার রাতে বাজারে পণ্যবাহী গাড়ি ঢুকেছে। গতকাল সকালে কিছু গাড়ি প্রবেশ করলেও মহাসড়ক ডুবে যাওয়ার পর বাজারে পণ্যবাহী ট্রাক আসেনি। টানা বৃষ্টি হলেও অধিকাংশ মোকাম খোলা আছে। পণ্য পরিবহণ কম হওয়ায় বাজারে সংকট হবে বলেও আশঙ্কা করছেন তারা।