'লুটপাটকারীদের' বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রম্নতি এনবিআর চেয়ারম্যানের

প্রকাশ | ১৯ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

অর্থ-বাণিজ্য রিপোর্ট
আব্দুর রহমান খান
আওয়ামী লীগের ১৫ বছরে শাসনামলে আর্থিক খাতে যারা লুটপাট ও অর্থপাচার করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান। তিনি বলেছেন, '১৫ বছরের অপরাধীদের নিয়ে আমরা কাজ করব। হয়তো একটু সময় লাগবে। প্রস্তুতি নিচ্ছি। সবকিছু স্থির হলে কাজ শুরু করব।' এনবিআরের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার পর রোববার দুপুরে ঢাকার আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন আব্দুর রহমান খান। তার আগে সকালে তিনি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, 'অর্থ পাচার নিয়ে বিএফআইইউ কাজ করছে, এনবিআরের সিআইসিও কাজ করবে। যখনই কোনো ইঙ্গিত পাব, তা অনুসন্ধান করা হবে।' সাংবাদিকদেরও তিনি এসব বিষয়ে তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে অনুরোধ করেন এবং মতিউরের (ছাগলকান্ডে আলোচিত রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমান) মতো দুর্নীতিবাজ যেন তৈরি না হয়, সেজন্য এনবিআর কর্মকর্তাদের দুর্নীতি শক্ত হাতে দমনের হুঁশিয়ারিও দেন। এনবিআর 'দুর্নীতির কারখানা' এবং এখানে 'মতিউর তৈরি হয়'- এক সাংবাদিকের এমন মন্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, 'তাদের (কর্মকর্তাদের) মেসেজ দেওয়া হয়েছে। নিজেদের পরিবর্তন করতে না পারলে বের করে দেওয়া হবে। বড় ছোট না, সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুর্বৃত্ত যেন তৈরি না হয় সেটা দেখা হবে।' ক্ষমতার পালাবদলের পর কালো টাকা সাদা করার সুযোগ নিয়ে ফের প্রশ্ন আসছে। সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আব্দুর রহমান খান বলেন, 'কালো টাকার বিষয়টি নিয়ে উপদেষ্টার সঙ্গে আলাপ করব। তবে এনবিআর চেয়ারম্যান হিসেবে নয়, ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, এগুলা অগ্রহণযোগ্য। এর ফলে সৎ করদাতা নিরুৎসাহিত হয়।' যে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটেছে, সেই 'অভু্যত্থানের' চেতনা কাজে লাগিয়ে এনবিআরের সংস্কার করার প্রতিশ্রম্নতি দেন নতুন চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য গতিশীল করতে শিগগিরই আইনগুলোর আধুনিকায়ন হবে। রাজস্ব আদায় করতে গিয়ে ব্যবসার যেন ক্ষতি না হয়, সেদিকেও সতর্ক থাকতে হবে কর্মকর্তাদের। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, 'উন্নয়নের প্রয়োজনীয় অর্থ আহরণ হচ্ছে না। পাকিস্তানও আমাদের চেয়ে এগিয়ে। রাজস্ব বাড়ানোই তাই এখন মূল ফোকাস।' তার মতে, বিগত সরকারের সময়ে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য দেওয়ার যে প্রক্রিয়া ছিল, তা 'ত্রম্নটিপূর্ণ'। ঋণ ও ঘাটতি বাড়িয়ে বাজেট করা 'অনৈতিক' তাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বৈষম্যের শিকার হয়। গরিবদের থেকেই বেশি কর আদায় হচ্ছে। কারণ পরোক্ষ করের পরিমাণ বেশি। ৬৭ শতাংশ পরোক্ষ। পরোক্ষ কর গরিব ও সাধারণ মানুষের ওপর বৈষম্য তৈরি করে। গরিবকে ট্যাক্স করা যাবে না। এটা সভ্য দেশের লক্ষণ নয়। এটাকে ঠিক করতে হবে। এজন্য দরকার কঠোর শ্রম। 'করের আওতা বাড়ানোর অনেক সুযোগ রয়েছে। ট্যাক্স পেয়ার সার্ভিসে জোর দেব। এটা আমার স্বপ্ন। কর দেওয়া গৌরবের। এটা মানুষকে বোঝাতে হবে। পাঠ্য শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করতে কাজ করব। গণঅভু্যত্থানের সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।'