কাজের গতি ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যে সরকারি ছুটির দিন শনিবারে (১৭ আগস্ট) চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ পুরোদমে চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংক খোলা না রেখে কাস্টম হাউজ খোলা রাখলে বিশেষ কোনো সুবিধা পাওয়া যাবে না।
জানা যায়, ইন্টারনেট না থাকায় স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে শুল্কায়ন, বন্দরের আমদানি-রপ্তানি পণ্যের ডকুমেন্টেশন, পণ্যের ঘোষণা অনুযায়ী ইনস্পেকশন, কনটেইনার রাখার স্থান নির্ধারণ, ডিউটি আদায়সহ সব কার্যক্রম টানা পাঁচ দিন স্থবির ছিল। নিজস্ব নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম সীমিতভাবে সচল রাখা হলেও শুল্কায়ন নথি না পৌঁছায় পণ্য ডেলিভারি ও জাহাজীকরণ কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া সংঘাত ও কারফিউর কারণে মহাসড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দর অনেকটাই কাস্টমসের ওপর নির্ভরশীল। কাস্টমস থেকে শুল্কায়নের পর ছাড়পত্র পেলেই শুধু বন্দর থেকে পণ্য বের করার অনুমতি দেওয়া হয়। একইভাবে রপ্তানি পণ্যও শুল্কায়নের পর জাহাজে তোলা হয়। শুল্কায়নের পুরো কাজটি করে থাকে কাস্টম।
কাস্টম সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনারের পক্ষে ডেপুটি কমিশনার ইমাম গাজ্জালী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে শনিবার (১৭ আগস্ট) অফিস খোলা রেখে দাপ্তরিক কার্যক্রম সচল রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান বলেন, স্বাভাবিক সময়ের মতোই কাজ চলছে। বরং কাজ আগের চেয়ে আরও বেশি হচ্ছে। পণ্য ডেলিভারি, জাহাজীকরণ থেকে শুরু করে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে।
তিনি বলেন, ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় জমে থাকা কাজের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এর আগেও শুক্রবার এবং শনিবার কাস্টমস কর্মকর্তারা অফিস করেছেন। তাই কাজের গতি ফিরিয়ে আনার জন্য এই শনিবারও (১৭ আগস্ট) কাস্টম হাউজ খোলা থাকবে। বরং অন্য সময়ের চেয়ে এখন বন্দরের কর্মতৎপরতা বেশি বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু বলেন, শনিবার চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস খোলা থাকলেও ব্যাংক খোলা থাকবে কি না জানা যায়নি। ব্যাংক খোলা না থাকলে কাস্টম হাউস খোলা রাখার বিশেষ কোনো সুবিধা মিলবে না।
প্রসঙ্গত, বৈশ্বিক অর্থনীতিতে নানা সংকটের মধ্যেও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ৬৮ হাজার ৮৬৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকার রাজস্ব আয় করেছে, যা এর পূর্বের বছরের তুলনায় ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি এবং এ যাবৎকালের মধ্যে কোনো একক বছরের সর্বোচ্চ আয়।