দেশের মেগাপ্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম রূপপুর পারমাণবিক বিদু্যৎকেন্দ্র। এ বিদু্যৎকেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়ান ফেডারেশন থেকে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলারের ঋণ নিয়েছে বাংলাদেশ। এ ঋণের প্রথম কিস্তি পরিশোধ করার কথা ছিল ২০২৭ সালের ১৫ মার্চ থেকে। নানা সংকটে আনুষ্ঠানিকভাবে দুই বছর বাড়তি সময় দেওয়ার অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ। বর্তমান সরকার ২০২৯ সালের ১৫ মার্চ প্রথম কিস্তি দিতে চায়। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদু্যৎকেন্দ্র, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেল, পদ্মা রেলসেতু বা এক্সপ্রেসওয়ের মতো মেগাপ্রকল্পগুলো দেশের অবকাঠামো ও যোগাযোগব্যবস্থার বড় পরিবর্তন এনেছে। এসব প্রকল্পে ঋণ পরিশোধ শুরু হলে চাপে পড়বে বাংলাদেশ।
\হযদিও ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে সরকারি খাতে বৈদেশিক ঋণের দায় (আউটস্ট্যান্ডিং বা বকেয়া) বেড়ে ৬৯ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলার হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ১১ দশমিক ৬ বা ৭ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার বেশি।
ইআরডির প্রাথমিক হিসাব থেকে জানা যায়, করোনা মহামারির প্রভাব, চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি, যন্ত্রপাতি ও মালামাল পরিবহণে রুশ সংস্থাগুলোর ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা এবং বিদু্যৎ সঞ্চালন লাইন নির্মাণের মন্থর গতির মতো বিষয়গুলোর কারণে বাড়তি সময় চায় বাংলাদেশ।
ইআরডির যুগ্ম সচিব (ফাবা-১) সৈয়দ আশরাফুজ্জামান বলেন, এখন আউটস্ট্যান্ডিং ৬৯ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলার। তবে মুদ্রা বিনিময় হারের তারতম্যের কারণে কিছুটা কমবেশি হতে পারে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঋণ পরিশোধ প্রসঙ্গে বলেন, '২০২৭ সালে ঋণ পরিশোধ শুরু হওয়ার কথা ছিল। আমরা আরও দুই বছর বাড়তি সময় চেয়েছি, এটা এখন ২০২৯ সাল পর্যন্ত গেছে।'
ইআরডি জানায়, ২০২২-২৩ অর্থবছওে বৈদেশিক ঋণের বকেয়া ছিল ৬২ দশমিক ৪০৬ বিলিয়ন ডলার। গত ৫ বছরে বৈদেশিক ঋণের দায় বেড়েছে ৫৮ শতাংশ। বৈদেশিক ঋণের আউটস্ট্যান্ডিং বাড়ায় ঋণ পরিশোধেরও চাপ বাড়বে। গত অর্থবছরে সরকার ৩ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করেছে। এরমধ্যে আসল হিসাবে পরিশোধ করেছে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি। আগামী দুই বছরে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ ৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে ধারণা ইআরডির।
সদ্য প্রকাশিত ইআরডির প্রাথমিক হিসাবে দেখা যায় ২০২৩-২৪ অর্থবছওে বৈদেশিক ঋণে ছাড় দেখানো হয়েছে ৯ দশমিক ২৬৭ বিলিয়ন ডলার। রূপপুর পারমাণবিক বিদু্যৎ প্রকল্প, মেট্রোরেল এমআরটি ৬, পদ্মা রেল সংযোগ, কর্ণফুলী টানেল, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শেষ হয়েছে বা শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এ কারণে বড় প্রকল্পে উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থছাড় বেড়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে পাইপলাইনে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৪ দশমিক ৬৯৮ বিলিয়ন ডলার। এরমধ্যে সামান্য কিছু বাদ দিলে পুরোটাই ঋণ। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে পাইপলাইনে বৈদেশিক সহায়তার পরিমাণ ছিল ৪৩ দশমিক ৮৩৭ বিলিয়ন ডলার।