খাতুনগঞ্জে কমতে শুরু করেছে ভোগ্যপণ্যের দাম

গত সপ্তাহে প্রায় সব ধরনের ডালের দাম হঠাৎ ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওঠে। এর মধ্যে ভারত থেকে আমদানি হওয়া মোটা মসুর ডাল কেজিপ্রতি ৫-৬ টাকা বেড়ে ১২৮ টাকায় বিক্রি হয়

প্রকাশ | ১৩ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
অনেকটাই স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে চট্টগ্রামের ভোগ্যপণ্যের বাজার। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনুপস্থিতিতে গত এক সপ্তাহ কার্যত লেনদেন বন্ধ ছিল। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় পাইকারিতে পণ্যের দাম বাড়লেও বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরছে। এরই মধ্যে কমতে শুরু করেছে প্রধান প্রধান ভোগ্যপণ্যের দাম। দেশের ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে পণ্য পরিবহণ নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে পাইকারি ব্যবসায়ীরা পণ্য ক্রয়ে অনাগ্রহী ছিলেন। পরিবহণের সময় লুটতরাজ কিংবা মজুত অবস্থায় ডাকাতির আশঙ্কায় পণ্য সংগ্রহ করেননি তারা। এ কারণে খুচরা পর্যায়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের দাম কেজিপ্রতি ২-৫ টাকা পর্যন্ত বেড়ে যায়। এছাড়া দেশের পরিস্থিতি নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকায় বড় পাইকারি ব্যবসায়ীরাও পণ্য বিক্রিতে 'ধীরে চলো' নীতি গ্রহণ করেছিলেন। তবে দেশব্যাপী থানাগুলোর কার্যক্রম শুরু হওয়ায় ব্যবসায়ীরা লেনদেনে ফিরছেন। খাতুনগঞ্জের পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলেন, '৫ আগস্টের পর পাইকারি ভোগ্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করেছিল। তবে শনিবার থেকে বাজার কিছুটা স্থিতিশীলতায় ফিরেছে। যেসব পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে, সেগুলো ধারাবাহিকভাবে কমছে। কারখানাগুলোয় উৎপাদন স্বাভাবিক ও সরবরাহ শৃঙ্খল সক্রিয় হলে ভোগ্যপণ্যের দাম আরও কমতে পারে।' পাইকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং ফার্মগুলোর দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, এক সপ্তাহের মধ্যে পাইকারিপর্যায়ে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) চিনির দাম প্রায় ৩০০ টাকা বেড়ে ৬ হাজার ৩০০ টাকায় উঠে যায়। তবে শনিবার পর্যন্ত চিনির দাম বস্তাপ্রতি ২০০-২৫০ টাকা কমে লেনদেন হয়েছে। পাম অয়েলের মণপ্রতি (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) দাম ২০০-২৫০ টাকা বেড়ে গিয়েছিল। গতকাল তেলপণ্যটির দাম মণপ্রতি ৫০ টাকা কমে ৪ হাজার ৯৫০ টাকায় লেনদেন হয়েছে। একইভাবে সয়াবিনের মণপ্রতি দাম ৫০-৭০ টাকা, সুপার পাম অয়েলের মণপ্রতি দাম প্রায় ১০০ এবং গমের দাম মণপ্রতি ৪০-৫০ টাকা কমেছে। তবে ডালজাতীয় নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী অবস্থায় স্থিতিশীল। চালের দামও কিছুটা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। গত সপ্তাহে প্রায় সব ধরনের ডালের দাম হঠাৎ ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওঠে। এর মধ্যে ভারত থেকে আমদানি হওয়া মোটা মসুর ডাল কেজিপ্রতি ৫-৬ টাকা বেড়ে ১২৮ টাকায় বিক্রি হয়। অন্যদিকে মটর, ছোলা, মুগসহ বিভিন্ন ডালজাতীয় ভোগ্যপণ্য স্বাভাবিকের চেয়ে কেজিপ্রতি দুই-আড়াই টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে লেনদেন হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলেন, 'ব্যাংকিং চ্যানেলে লেনদেনে সমস্যা, পরিবহণ সংকট ও নিরাপত্তার অভাবে পাইকারি বাজারে ভোগ্যপণ্যের দাম হঠাৎ বেড়ে গিয়েছিল। ব্যাংকগুলোয় কয়েক দিন ধরে নগদ উত্তোলনে সমস্যা হচ্ছে। এ কারণে পাইকারি বাজারের লেনদেন অনেক কমে যায়। এতে নগদে পণ্য ক্রয়ে বাড়তি দাম হাঁকছেন মজুদদার ব্যবসায়ীরা। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় লেনদেন কিছুটা স্বাভাবিক হচ্ছে। একই কারণে অধিকাংশ পণ্যের দাম নিম্নমুখী। ব্যাংকিং চ্যানেলে লেনদেন শতভাগ স্থিতিশীল হলে ভোগ্যপণ্যের দাম আরও কমে আসবে।'