স্বস্তি মিলছে না চালের বাজারে

প্রকাশ | ১২ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

অর্থ-বাণিজ্য রিপোর্ট
নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হলেও কমছে না চালের দাম। এমনকি চাহিদার তুলনায় প্রায় দুই লাখ টন বাড়তি চালের মজুতও প্রভাব ফেলছে না বাজারে। এর বিপরীতে দেড় মাসের ব্যবধানে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে অন্তত ৫-৮ টাকা। পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতাকে কাজে লাগিয়ে মিল পর্যায়ে অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়ানোর ফলে বাজারে দাম বাড়তির দিকে রয়েছে খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেন জানান, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি কিছুটা বাধা তৈরি করলেও দ্রম্নত সংকট কাটিয়ে চালের বাজার স্বাভাবিক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, 'কয়েকটি সমস্যা হয়েছে। একটি হলো পরিবহণ ব্যবস্থা স্বাভাবিকভাবে কাজ করছিল না, যার ফলে পরিবহণ খরচ বেড়েছে। এ ছাড়া অনেক রাইসমিল মালিকদের সংগঠনের নেতৃত্বে আছেন সাম্প্রতিক ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। এর ফলে অনেক নেতা গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছেন। আরেকটি কারণ হতে পারে যে, খোলাবাজার বিক্রি (ওএমএস) কার্যক্রম গত সপ্তাহে বন্ধ ছিল। তবে রোববার থেকে ওএমএস কার্যক্রম পুরোদমে আবার শুরু হচ্ছে। আমরা সক্রিয়ভাবে এটি নিয়ে কাজ করছি। আমি আশাবাদী, খুব শিগগিরই চালের বাজার আগের অবস্থায় ফিরে আসবে'। দেশে খাদ্যশস্যের বর্তমান মজুতকে 'সন্তোষজনক' মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা। তাদের ভাষ্যমতে, চাল উৎপাদন ভালো হওয়ায় নূ্যনতম প্রয়োজনের চেয়ে বেশি সরকারি মজুত রয়েছে। এ কারণে সদ্য দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য বাজার ব্যবস্থাপনায় বেগ পেতে হবে না। অন্যদিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হওয়ায় পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থাও সচল হয়েছে। ফলে পণ্যের চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ সংকটের কোনো শঙ্কা আপাতত নেই। এ কারণে চাল আমদানিরও কোনো প্রয়োজন পড়বে না। তবে মসলাপণ্য ও সার আমদানির জন্য বিকল্প উৎস তৈরির পাশাপাশি ডলার সংকট কাটিয়ে উঠতে হবে। এদিকে বর্তমানে দেশের সরকারি গুদামগুলোতে পর্যাপ্ত খাদ্যশস্যের মজুত রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান খাদ্যশস্য চালের মজুত চার মাসে দেড় গুণেরও বেশি বেড়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, দেশে চালের মজুত এখন প্রায় ১৩ লাখ টন। এর সঙ্গে ধান ও গম মিলিয়ে খাদ্যশস্যের মোট মজুত দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ টনেরও বেশিতে। অথচ রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পাইকারি আড়তে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রি২৮ জাতের চাল বিক্রি হয়েছে ৫৭-৫৮ টাকায়। এ ছাড়া ব্রি২৯ চাল ৬০ টাকা, জিরাশাইল বা মিনিকেট ৬৬-৭০ টাকা, পাইজাম ৫৮ টাকা, নাজিরশাইল ৭২-৭৬ টাকা, সিদ্ধ কাটারি ৭৫-৭৬ টাকা এবং বাসমতি ৮৮-৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। খুচরা বাজারগুলোতে এসব চাল পাইকারির চেয়ে কেজিতে অন্তত ৩-৪ টাকা বেশি দামে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। ব্যবসায়ীরা জানান, কোরবানির ঈদের পরপর, অর্থাৎ জুনের তৃতীয় সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে চালের দাম অন্তত ৫-৮ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গত মাসে দাম এক দফা কমে আবার বাড়তে শুরু করে। সর্বশেষ গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ২-৩ টাকা।