আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম ঊর্ধ্বমুখী
প্রকাশ | ১০ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বেড়েছে। এর অন্যতম প্রধান কারণ মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা। এছাড়া স্বর্ণ খাতের ব্যবসায়ীরা যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করছেন।
স্পট মার্কেটে শুক্রবার প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। আউন্সপ্রতি মূল্য দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩৯৮ ডলার ৬৩ সেন্টে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ফিউচার মার্কেটে স্বর্ণের দাম দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি আউন্সের মূল্য পৌঁছেছে ২ হাজার ৪৩৭ ডলার ২০ সেন্টে।
স্পট মার্কেটে রুপার দাম আগের দিনের তুলনায় ১ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি আউন্সের মূল্য স্থির হয়েছে ২৬ ডলার ৮৬ সেন্ট। পস্নাটিনামের দাম দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্সের দাম ৯২২ ডলার ৩৫ সেন্টে পৌঁছেছে। প্যালাডিয়ামের দাম বেড়েছে ১ দশমিক ১ শতাংশ। প্রতি আউন্সের মূল্য স্থির হয়েছে ৮৯২ ডলার ২৫ সেন্ট।
এদিকে শুক্রবার ডলারের বিনিময় মূল্যও কমেছে দশমিক ১ শতাংশ, যা বিদেশি ক্রেতাদের জন্য বুলিয়নকে আরও সাশ্রয়ী করে তুলেছে। এছাড়া ১০ বছর মেয়াদি মার্কিন ট্রেজারি বন্ডের ইয়েল্ডও কমেছে।
এ বিষয়ে স্যাক্সো ব্যাংকের কমোডিটি স্ট্র্যাটেজির প্রধান ওলে হ্যানসেন বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক মন্দার ভয়ে বিশ্বব্যাপী বেচাকেনা কমে যাওয়ায় সোমবার স্বর্ণের দাম ৩ শতাংশের মতো কমে গেছে। তবে ক্রমাগত মার্কিন অর্থনীতি ও ঋণ নিয়ে উদ্বেগেও শেষ পর্যন্ত স্বর্ণের দাম স্থিতিশীল থাকতে পারে।'
বিশ্বব্যাপী স্বর্ণকে দেখা হয় আপৎকালীন বিনিয়োগ হিসেবে। চলতি বছরের শুরু থেকেই ঊর্ধ্বমুখী ছিল মূল্যবান এ ধাতুর দাম। বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত পণ্যটির দাম বেড়েছে অন্তত ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ। এর মধ্যে ১৭ জুলাই স্বর্ণের দাম বেড়ে আউন্সপ্রতি ২ হাজার ৪৮৩ ডলার ৬০ সেন্টে পৌঁছে। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দামের এ ঊর্ধ্বমুখী ধারার কারণে আগামী দিনগুলোয় কমে যেতে পারে এর চাহিদা।
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের (ডবিস্নউজিসি) গত সপ্তাহের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বিশ্বব্যাপী স্বর্ণের চাহিদা ছিল ১ হাজার ২৫৮ দশমিক ২ টন, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ শতাংশ বেশি। তবে সংশ্লিষ্টদের মতে, চাহিদার পরিসংখ্যানের কিছু বিশ্লেষণের পর দেখা যায়, আগামী মাসগুলোয় কমতে পারে বিশ্বব্যাপী স্বর্ণের চাহিদা।
বিশ্বের দুই বৃহত্তম স্বর্ণ ব্যবহারী দেশ চীন ও ভারত। বিশ্বের প্রায় অর্ধেক স্বর্ণ এ দুই দেশ ব্যবহার করে থাকে। এ দুই দেশেও গহনার চাহিদা নিয়ে বিশেষ উদ্বেগ রয়েছে। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে চীনে গহনার চাহিদা ৩৫ শতাংশ কমে ৮৬ দশমিক ৩ টনে নেমেছে। ভারতে চাহিদা কমেছে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ শতাংশ। ব্যবহার নেমেছে ১০৬ দশমিক ৫ টনে।
এছাড়া চীনে জুনে স্বর্ণের নিট আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৮ শতাংশ কমেছে। এ সময় দেশটি মোট স্বর্ণ আমদানি করেছে ২১ দশমিক ৯২ টন, মে মাসে যা ছিল ২৬ দশমিক ৭২ টন।
তবে আমদানি শুল্ক কমানোর ফলে ভারতে স্বর্ণের চাহিদা বাড়তে পারে। যদিও বিশ্লেষকরা মনে করছেন এটি চাহিদার এককালীন উন্নতি, দীর্ঘমেয়াদি চাহিদার পরিবর্তন নয়।