জ্বালানি তেল উত্তোলন কমিয়ে আনার নীতি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওপেক পস্নাস। অক্টোবর থেকে উত্তোলন কমানোর নীতি ধীরে ধীরে শিথিল করার পরিকল্পনাও জানিয়েছে জ্বালানি তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংগঠনটি। তবে বাজারের অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এ পরিকল্পনা স্থগিত করা কিংবা উত্তোলন আবারও কমিয়ে দেয়ার মতো সিদ্ধান্তও আসতে পারে। সম্প্রতি ওপেক পস্নাসের জয়েন্ট মিনিস্টারিয়াল মনিটরিং কমিটির (জেএমএমসি) এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে অনলাইনে যুক্ত হন সংগঠনটির সদস্য দেশগুলোর মন্ত্রীরা। খবর রয়টার্স।
ওপেক পস্নাস বর্তমানে দৈনিক ৫৮ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল হারে জ্বালানি তেল উত্তোলন কমিয়ে আনছে, যা বৈশ্বিক চাহিদার প্রায় ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। এর আগে বৈশ্বিক চাহিদা নিয়ে তৈরি আশঙ্কা এবং ওপেক পস্নাস বহির্ভূত দেশগুলোর সরবরাহ বাড়ায় ২০২২ সালে বাজারে অবস্থান শক্তিশালী করতে বেশকিছু পদক্ষেপ নেয় সংগঠনটির সদস্য দেশগুলো। এরই অংশ হিসেবে জ্বালানি তেল উত্তোলন কমিয়ে আনছে তারা।
বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে বলা হয়, সদস্য দেশগুলো সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দৈনিক ২২ লাখ ব্যারেল হারে উত্তোলন কমাতে পারবে। তবে তা বাধ্যমতামূলক নয়। অক্টোবর থেকে উত্তোলন কমানোর নীতি থেকে ধীরে ধীরে সরে আসতে পারে ওপেক পস্নাস। তবে বাজারের অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত স্থগিত করে উত্তোলন আবারও কমিয়ে আনা হতে পারে।
চলতি বছর এপ্রিলে প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেলের দাম সর্বোচ্চ ৯২ ডলারে পৌঁছেছিল। কিন্তু চাহিদা কমার কারণে পরে তা কমে ৮১ ডলারের নিচে নেমে আসে। চলতি সপ্তাহে ইসমাইল হানিয়াসহ হামাস ও হিজবুলস্নাহর কয়েকজন নেতার মৃতু্যর জেরে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়ে। এতে বৃহস্পতিবার জ্বালানি তেলের দাম আবারও বেড়েছে।
রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক জানান, জ্বালানি তেলের বর্তমান দাম রাশিয়ার বাজেট বাজারের অন্য অংশীদারদের জন্য স্বস্তিকর। বর্তমানে চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্য বজায় আছে। এ ভারসাম্য ইতিবাচক থাকলেও চলতি বছরের চতুর্থ প্রান্তিক (অক্টোবর-ডিসেম্বর) থেকে উত্তোলন কিছুটা বাড়ানো সম্ভব।
ওপেক পস্নাসের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, উত্তোলন বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরুর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে ওপেক পস্নাসের হাতে আরও কয়েক সপ্তাহ সময় আছে।
আলজেরিয়ার জ্বালানিবিষয়ক মন্ত্রী মোহামেদ আরকাব বলেন, 'বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলে জ্বালানি তেলের বাজারে প্রভাব ফেলে, এমন অনিশ্চয়তা বেশি দিন থাকবে না। জ্বালানি তেলের চাহিদা আগামী সপ্তাহগুলোয় ধারাবাহিকভাবে ঊর্ধ্বমুখী হবে বলে আশা করা হচ্ছে।'
এর আগে জুনে চলতি বছরের অক্টোবর থেকে আগামী বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দৈনিক ২২ লাখ ব্যারেল হারে উত্তোলন কমিয়ে আনার পরিকল্পনা নিয়েছিল ওপেক পস্নাস। এছাড়া দৈনিক ৩৬ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল হারে উত্তোলন কমানোর আগের পরিকল্পনাও ২০২৫ সালের শেষ পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্তও নেয়া হয়।