কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার কারণে পোশাক রপ্তানিকারকদের সঙ্গে অন্যান্য খাতের ব্যবসায়ীকেও ৭ দিনের বন্দর ড্যামারেজ চার্জ মওকুফ (পণ্য খালাসের বিলম্বের কারণে চার্জ) করেছে সরকার। গত বুধবার এ সুবিধা দিয়ে নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বন্দর) বিধায়ক রায় চৌধুরী বলেন, প্রথমে বিজিএমইএর ব্যবসায়ীদের ৭ দিনের পোর্ট ড্যামারেজ মওকুফ করা হয়েছিল। পরে এফবিসিসিআই ও এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করে অন্যদের ক্ষেত্রেও এ সুবিধা দেওয়ার দাবি জানানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সব ব্যবসায়ীকে জন্য ৭ দিনের এ চার্জ মওকুফের সিদ্ধান্ত জানিয়ে গত বুধবার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গত ১৬ জুলাই থেকে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত যেসব আমদানি চালান চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ থেকে নামানো হবে, সেসব পণ্যেই কেবল এই ছাড় পাওয়া যাবে। তবে ছাড় পাওয়ার জন্য ১৪ আগস্টের মধ্যে পণ্যের চালান বন্দর থেকে খালাস করে নিতে হবে।
জাহাজ থেকে নামানোর চার দিন পর্যন্ত বিনাচার্জে বন্দরে পণ্য রাখা যায়। এর বেশিদিন বন্দরে পণ্য রাখলে অতিরিক্ত চার্জ দিতে হয়, যাকে বলা হয় পোর্ট ড্যামারেজ চার্জ বা স্টোররেন্ট। নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের চিঠি অনুযায়ী এখন অতিরিক্ত ৭ দিনের জন্য ছাড় পাওয়া যাবে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ১১ দিনের জন্য ছাড় পাচ্ছেন আমদানিকারকরা।
গত ২৮ জুলাই সচিবালয়ে ক্ষতিপূরণ নিয়ে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) নেতারা নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে বিজিএমইএ নেতারা জানান, সহিংসতার কারণে বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে প্রায় ৩৭ হাজার আমদানি পণ্যবাহী কন্টেইনার খালাসের অপেক্ষায় আছে। এর মধ্যে ১৩ হাজার কন্টেইনার তৈরি পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট। এ ছাড়া এরই মধ্যে প্রায় ৫ থেকে ৭ কোটি টাকার পোর্ট ডেমারেজ চার্জ তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানিকারকদের ওপর ধার্য হয়েছে।
বৈঠক শেষে পোশাক রপ্তানিকারকদের ৭ দিনের বন্দর ড্যামারেজ চার্জ মওকুফ (পণ্য খালাসের বিলম্বের কারণে চার্জ) করার সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিকদের জানান নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী।
এ সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্ত অন্য ব্যবসায়ীরা বৈষম্যের অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারাও এ ছাড় পেতে নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন।