রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

৫৭ ব্রোকারেজ হাউজের ৪০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৭ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
৫৭ ব্রোকারেজ হাউজের ৪০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ৫৭টি স্টক ব্রোকার ও ডিলার শেয়ারবাজারের বাইরে ৪শ' কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। তাদের মূল ব্যবসার বাইরে ব্যাংকে আমানত, জমি কেনা, একই গ্রম্নপের অন্য প্রতিষ্ঠানকে ঋণ প্রদান, অতালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিনিয়োগ, পরিচালকদের গাড়ি কেনার জন্য ঋণসহ বিভিন্ন খাতে এসব বিনিয়োগ করা হয়।

জানা গেছে, আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে স্টক ব্রোকার ও ডিলার প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্য খাতে বিনিয়োগ ফিরিয়ে আনতে সময় বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এই ৫৭ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারবাজারের বাইরে ৩৯৯ কোটি ৪৯ লাখ ৫২ হাজার ৫৫২ টাকা বিনিয়োগের প্রমাণ পেয়েছে বিএসইসি।

আগামী অক্টোবরে মধ্যে এই অর্থ প্রতিষ্ঠানগুলোয় ফিরিয়ে আনতে ডিএসইকে নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি। বিপুল পরিমাণ অর্থ ফিরিয়ে আনলে শেয়ারবাজারে তারল্য সঙ্কট আরও কমে আসবে। তবে ব্রোকারেজ হাউজ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শেয়ারবাজারে মন্দা পরিস্থিতি থাকায় তারা বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করে রেখেছেন। এতে মাস শেষে কিছু মুনাফা আসে। সেই মুনাফা দিয়ে পরিচালন ব্যয় বহন করা হয়। বর্তমানে লেনদেন কম হওয়ায় অনেকের পরিচালন ব্যয়ে ঘাটতি থাকে।

সম্প্রতি এই বিষয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে বলা হয়েছে, ডিএসইর কমপস্নায়েন্স প্রতিবেদন এবং স্টক ব্রোকার ও ডিলার প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী থেকে দেখা গেছে, এসব প্রতিষ্ঠান তাদের নিবন্ধিত মূল ব্যবসার বাইরে অন্য উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠানের অর্থ ব্যয় করছে।

শেয়ারবাজারের স্বার্থে এই বিষয়ে ডিএসইকে দু'টি নির্দেশনা দিয়েছে বিএসইসি। এর মধ্যে রয়েছে আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে স্টক ব্রোকার ও ডিলার প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্য খাতে বিনিয়োগ করা অর্থ ফিরিয়ে এনে মূল ব্যবসায় ব্যবহার করতে হবে। অর্থ ফিরিয়ে এনে বিনিয়োগ করার বিষয়টি নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ডিএসইকে।

এই বিষয়ে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে অর্থ ফেরত আসার ৭ কার্যদিবসের মধ্যে বিএসইসির কাছে কমপস্নায়েন্স প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হয়েছে ডিএসইকে। অবিলম্বে এই নির্দেশনা কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বিএসইসি।

শেয়ারবাজারের অন্য খাতে অর্থ বিনিয়োগ করা স্টক ব্রোকার ও ডিলার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আকিজ ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট ৩৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা অন্য প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেছে। মাল্টি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড সার্ভিসেস ৩১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা বিভিন্ন নন-লিস্টেড কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে। রয়েল গ্রিন সিকিউরিটিজ ১৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকা বিভিন্ন নন-লিস্টেড কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে, পাশাপাশি জমি ও ভবন ক্রয়ের জন্যও ব্যয় হয়েছে।

লতিফ সিকিউরিটিজ ১১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা সরকার স্টিল নামে একটি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে। মো. ফখরুল ইসলাম সিকিউরিটিজ মোহনা টিভি, পারাবত সোস্যাল এবং রূপায়ন গোল্ডেন এজে ১৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা, সালতা ক্যাপিটাল ২০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বিএমএসএল ইনভেসমেন্টে, দায়তুন হোল্ডিংস ৫ কোটি টাকা আমান স্পিনিং মিলসে, আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ ১৬ কোটি ৩৭ লাখ টাকা বিএলপি ইয়ার্ন ফ্যাশনে বিনিয়োগ করে।

এসিই ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা কার পার্কিংয়ের জমি কেনার জন্য অগ্রিম দিয়েছে। ইতিহাদ সিকিউরিটিজ ২ কোটি ৭০ লাখ জমিতে, সুরমা সিকিউরিটিজ হোল্ডিংস কোম্পানি হিল ভিউ কনভেনশন সেন্টার এবং মেসার্স জেএন্ডএস প্যাকেজিং এ ৭.৩২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। মশিহুর সিকিউরিটিজ একটি সহযোগী কোম্পানিতে ২১.৯১ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।র্ যাপিড সিকিউরিটিজ ৬ কোটি ২১ টাকা জমি কেনার জন্য ব্যয় করেছে। দৌলতুন্নেসা ইকুইটিজ ৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে রেখেছে।

এরিজ সিকিউরিটিজ ৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এরিস এগ্রোতে বিনিয়োগ করে। এম-সিকিউরিটিজ ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা জমি কেনা, ভবন তৈরি ও অন্যান্য খাতে খরচ করেছে।

এবি ইস্পাহানি সিকিউরিটিজ তাদের অপর সহযোগী প্রতিষ্ঠান এম এম ইস্পাহানি লিমিটেডকে ৫৩ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়েছে। ফার্স্ট ক্যাপিটাল সিকিউরিটিজ তাদের একজন পরিচালককে গাড়ি এবং জমি কেনার জন্য ঋণ দিয়েছে। মিডওয়ে সিকিউরিটিজ ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছে বাবুল্যান্ড নামে একটি পার্কে।

\হরশীদ ইনভেস্টমেন্ট সার্ভিসেস ২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা রশিদ কনসোর্টিয়ামে বিনিয়োগ করেছে, এ টাকা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি জমি কিনেছে এবং ব্যবসা পরিচালনা করছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে