রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

আতঙ্ক কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে শেয়ারবাজার

লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৮৬ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৬ প্রতিষ্ঠানের। এ ছাড়া ৪০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৯২ পয়েন্ট বেড়ে পাঁচ হাজার ৪১৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে
অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
  ২৬ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
আতঙ্ক কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে শেয়ারবাজার

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে আতঙ্কে মাত্রাতিরিক্ত বিক্রির চাপে বুধবার দেশের শেয়ারবাজারে বড় ধরনের ক্রেতা সংকট দেখা দেয়। এতে মূল্যসূচকের বড় পতনের পাশাপাশি দেড় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়। তবে বৃহস্পতিবার আতঙ্ক কেটে শেয়ারবাজারে ফের ফিরেছে ক্রেতা। ফলে মূল্যসূচকের বড় উত্থানের পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।

তবে বুধবারের মতো বৃহস্পতিবারও কাজ করেনি মোবাইল অ্যাপ। ফলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীরা লেনদেন করতে পারেননি। একই সঙ্গে ইন্টারনেটেও ধীরগতি। অবশ্য, সবগুলো ব্রোকারেজ হাউস নির্ধারিত সময়ে লগইন করে লেনদেনে অংশ নিতে পেরেছেন এবং ব্রোকারেজ হাউসগুলো থেকে লেনদেনে সমস্যা হয়নি।

বাজার-সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বুধবার ব্রডব্যান্ড নেট আসলেও কিছু কিছু জায়গায় সমস্যা ছিল। তবে গতকাল ইন্টারনেটের গতি কম থাকলেও গতকাল পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে দেশে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, এতে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছিল। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় সে আতঙ্ক কেটে গেছে। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে শেয়ারবাজারে।

এদিকে, রোববার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলেও বুধবার থেকে সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়া হয়েছে সরকারি-বেসরকারি অফিস। সীমিত পরিসরে চলছে ব্যাংকিং কার্যক্রম। ব্যাংক খোলায় শেয়ারবাজারেও লেনদেন চালু করা হয়। তবে স্বাভাবিক সময়ের মতো নয়, শেয়ারবাজারে লেনদেনের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত।

বুধবার নির্ধারিত সময় বেলা ১১টায় শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয়। তবে কিছু কিছু জায়গায় ইন্টারনেটে সমস্যা হওয়ায় লেনদেনে তার প্রভাব পড়ে। একই সঙ্গে অকেজো হয়ে পড়ে মোবাইল অ্যাপ। পাশাপাশি কয়েকদিন ধরে চলা তান্ডবের আতঙ্কও ছিল বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। ফলে ডিএসইতে লেনদেন কমে ২০০ কোটি টাকার নিচে নেমে যায়। একই সঙ্গে দাম কমার তালিকায় স্থান পায় সিংহভাগ প্রতিষ্ঠান। ফলে সূচকের বড় পতন হয়।

তবে বৃহস্পতিবার সে আতঙ্ক অনেকটাই কেটে গেছে। মোবাইল অ্যাপ কাজ না করলেও বিনিয়োগকারীরা বাজারমুখী হয়েছেন। এতে বেড়েছে ক্রেতা। ফলে ঘুরে দাঁড়িয়েছে শেয়ারবাজার। দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। মূল্যসূচকেরও বড় উত্থান হয়েছে।

এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৩৪ পয়েন্ট কমে যায়। ফলে আবারও পতনের আতঙ্ক পেয়ে বসে বিনিয়োগকারীদের। অবশ্য, সে আতঙ্ক কাটতে খুব বেশি সময় লাগেনি। বাজারে ক্রেতার চাপ বাড়ায় অল্প সময়ের মধ্যেই দাম বাড়ার তালিকায় চলে আসে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। লেনদেনের সময় গাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দাম বাড়ার তালিকাও বড় হয়।

এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৮৬ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৬ প্রতিষ্ঠানের। এ ছাড়া ৪০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৯২ পয়েন্ট বেড়ে পাঁচ হাজার ৪১৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৩ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ১৮৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এ ছাড়া বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২৪ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৯৩২ পয়েন্টে উঠে এসেছে।

সূচকের বড় উত্থানের পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের গতি। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৯৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৫৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৩৩৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।

ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৫ কোটি ৯ লাখ টাকার। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ইনফিউশনের ২৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লাভেলো আইসক্রিম।

এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- অগ্নি সিস্টেম, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, এনআরবি ব্যাংক, রংপুর ফাউন্ড্রি, ব্র্যাক ব্যাংক, ইউনিলিভার কনজু্যমার কেয়ার এবং ফারইস্ট নিটিং।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৫৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৭ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৭৯টির। বিপরীতে দাম কমেছে ৮৯টির এবং ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে তিন কোটি ৫৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় দুই কোটি ৫১ লাখ টাকা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে