রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
চালু হয়নি এটিএম ইন্টানেট ব্যাংকিং

ব্যাংকে টাকা তোলার হিড়িক

ব্যাংকগুলোর সব শাখা না খোলায় কিছুটা বিপত্তিও ছিল। অনেক গ্রাহককে এদিন টাকা তোলার জন্য দূরের শাখায় ছুটতে হয়েছে। সব শাখা খোলা না থাকায় বাড়তি চাপ পড়ে খোলা থাকা শাখাগুলো
যাযাদি রিপোর্ট
  ২৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
টানা পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর বুধবার কারফিউ শিথিলের সময় খুলে দেওয়া হয় ব্যাংক। টাকা তোলার জন্য বিভিন্ন শাখায় দীর্ঘলাইন

টানা পাঁচদিন পর ব্যাংকিং কার্যক্রম সীমিত আকারে চালু হয়েছে। এদিন ব্যাংকের শাখাগুলোতে শুধু টাকা জমা ও উত্তোলন করা গেছে। ছিল না ইন্টারনেটভিত্তিক লেনদেন বা অনলাইন ট্রান্সফার সুবিধা। ফলে গ্রাহকদের মধ্যে নগদ টাকা তোলার হিড়িক ছিল। শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির পাশাপাশি আরও তিন দিন সাধারণ ছুটির পর অফিস-আদালতের সঙ্গে এদিন খুলেছে ব্যাংকগুলো।

এদিকে সরকারি-বেসরকারি কয়েকটি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে যোগাযোগ করে জানা গেছে, ব্যাংকে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পুনরায় চালু হয়েছে। ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোও একই তথ্য জানিয়েছে। ব্যাংকগুলোর রেমিটেন্স শাখার কার্যক্রম শুরু হয়েছে জোরেশোরে। রেমিট্যান্সের বিপরীতে অর্থও দেওয়া হয়েছে।

কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনায় টানা পাঁচদিন সারাদেশে বন্ধ ছিল ইন্টারনেট। এমন পরিস্থিতি কাটিয়ে বুধবার সরকারি-বেসরকারি অফিস মাত্র চার ঘণ্টার জন্য খুলে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে খুলেছে দেশের ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও শেয়ারবাজার।

এদিন সকাল থেকেই ব্যাংকগুলোর শাখায় শাখায় গ্রাহকরা ভিড় করেছেন। ব্যাংকগুলোতে সেবাগ্রহীতাদের অধিকাংশ গ্রাহকই গেছেন টাকা উত্তোলন করতে। বুধবার রাজধানীর ব্যাংকপাড়া মতিঝিল ও দিলকুশা এলাকা ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।

এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মোবাইল ফিন্যান্স কোম্পানি ও এটিএম বুথ থেকে গ্রাহকরা টাকা ?উত্তোলন করতে পারেনি। এতে করে নগদ টাকায় টান পড়েছে গ্রাহকের। এর ফলে এদিন অধিকাংশ গ্রাহকই ব্যাংকে টাকা উত্তোলন করেছেন।

মতিঝিলের সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের অপেক্ষায় থাকা এক গ্রাহক বলেন, গত কয়েকদিনে নগদ টাকার জন্য বেশ অস্বস্তিতে ছিলাম। এটিএম বুথ থেকেও টাকা তুলতে পারিনি। কয়েকটি বুথ ঘুরে দেখেছি সেখানে টাকা না থাকায় আমার মতো আরও অনেকেই বেশ সমস্যায় পড়েছেন। ব্যাংক খোলার কথা শুনেই চলে এসেছি।

বুধ ও বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যস্ত কারফিউ শিথিলের ঘোষণার পর এই দু'দিন বেলা ১১টা থেকে ৩টা পর্যস্ত ব্যাংকগুলোতে লেনদেন চলবে বলে জানিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। বুধবার ব্যাংকের ৫০ শতাংশ ও বৃহস্পতিবার ৭৫ শতাংশ শাখা খোলা রাখতে হবে বলে জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, কারফিউ শিথিল থাকার সময়ে বেলা ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে নির্ধারিত শাখায় সীমিত আকারে ব্যাংকিং সেবা দিতে হবে। ব্যাংকগুলো তাদের সুবিধামতো শাখা খোলা রাখার উদ্যোগ নেবে।

সহিংসতার মধ্যে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যাংকিং সেবাও বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় এটিমএম বুথগুলোও। এরপর রোববার থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় আর খোলেনি ব্যাংকগুলোর দরজা।

মঙ্গলবার রাতে ইন্টারনেট সেবা ধীরে ধীরে ফিরতে থাকায় এবং কারফিউ শিথিলের সময় বাড়ানোর ঘোষণা আসায় ব্যাংক এবং শেয়ারবাজার সচল হওয়ার পথ খোলে।

বুধবার সকালে রাজধানীর সোনালী, জনতা, রূপালি, অগ্রণী এবং বেসরকারি কয়েকটি ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা ঘুরে গ্রাহকদের টাকা উত্তোলন করতে দেখা গেছে। টাকা উত্তোলনে গ্রাহকদের কোনো সমস্যায়ও পড়তে দেখা যায়নি। অনেকে আসেন বিদু্যৎ ও গ্যাস বিল পরিশোধও করেছেন ব্যাংকে।

তবে ব্যাংকগুলোর সব শাখা না খোলায় কিছুটা বিপত্তিও ছিল। অনেক গ্রাহককে এদিন টাকা তোলার জন্য দূরের শাখায় ছুটতে হয়েছে। সব শাখা খোলা না থাকায় বাড়তি চাপ পড়ে খোলা থাকা শাখাগুলোতে। ফলে সেসব শাখায় দেখা গেছে গ্রাহকের দীর্ঘ লাইন।

কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার রাত থেকে কারফিউ জারি করে সরকার, যা এখনো বহাল আছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে