দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের প্রায় ১৯ শতাংশ যায় অপ্রচলিত বাজারের ১৫টি দেশে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) এসব দেশে পোশাক রপ্তানি প্রবৃদ্ধির হার ইতিবাচক হলেও কমেছে শুধু ভারতে। রপ্তানি উন্নয়ন বু্যরোর (ইপিবি) পরিসংখ্যান থেকে পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সংকলিত তথ্যে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
ইপিবির তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানির মোট অর্থমূল্য ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছিল ৫ হাজার ৫৫৫ কোটি ডলার। এর মধ্যে ৪ হাজার ৬৯৯ কোটি ডলারের পণ্যই ছিল তৈরি পোশাক। অপ্রচলিত বাজারগুলোয় রপ্তানি হয়েছিল ৮৩৭ কোটি ৪৮ লাখ ৭০ হাজার ডলারের পোশাক।
তৈরি পোশাকের অপ্রচলিত বাজারের মধ্যে রয়েছে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), মেক্সিকো, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, তুরস্ক, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, চিলি, ব্রাজিল ও অন্যান্য দেশ। এ বাজারগুলোয় চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ। বাজারগুলোয় মোট পোশাক রপ্তানির অর্থমূল্য ছিল ৮১৮ কোটি ৭৫ লাখ ডলার।
২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো ভারতে পোশাক রপ্তানি ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলারের মাইলফলক ছাড়িয়েছিল। তবে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১১ মাসে দেশটিতে রপ্তানি হয়েছে ৭২ কোটি ৮৮ লাখ ৫০ হাজার ডলারের পোশাক। গত অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি হয় ৯৪ কোটি ৭৮ লাখ ৬০ হাজার ডলারের পোশাক। এ হিসাবে চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে ভারতে পোশাক রপ্তানি কমেছে ২৩ দশমিক ১১ শতাংশ। ভারতে রপ্তানি কমার কারণ সম্পর্কে বিজিএমইএর সভাপতি এম এ মান্নান কচি বলেন, 'বৈশ্বিকভাবে ঋণের সুদহার বাড়ার কারণে সব দেশেই একটা অস্থিতিশীলতা দেখা দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ভারতেও সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। ফলে বিক্রিও কমেছে সেখানে, যার প্রভাব পড়েছে আমাদের আমদানিতে।' তার মতে, দেশে শ্রমিকদের মজুরি ২০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। গ্যাস-বিদু্যতের সংকটের পাশাপাশি দামও বেড়েছে। ফলে উৎপাদন খরচ ও সময় দুটোই বেশি লাগছে। এসব কারণে দেশের তৈরি পোশাক শিল্প আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা করার সক্ষমতা দিনকে দিন হারাচ্ছে।
বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, 'বাজেটে আমাদের চাওয়া-পাওয়াকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি, আমরা কিছুই পাইনি। সাড়ে ৮ বিলিয়ন ডলারের অপ্রচলিত বাজার। আমরা ম্যান মেড ফাইবারের বিষয়ে সরকারের কাছে সহায়তা চেয়েছি। সেটিও এখনো হয়নি।