ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেশের পুঁজিবাজার। দীর্ঘ চার মাস টানা দরপতনের পর গেল সপ্তাহটি বিনিয়োগকারীদের জন্য ভালোই কেটেছে। আলোচিত সপ্তাহে অর্থাৎ ২৩-২৭ জুন পর্যন্ত দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক বেড়েছে ১১১ পয়েন্ট। লেনদেন বেড়েছে ৯শ' কোটি টাকার বেশি। আর সপ্তাহটিতে মোট লেনদেনের ৩৪ শতাংশই ছিল ১০ কোম্পানির দখলে।
জানা গেছে, গত সপ্তাহে ৩৯৬ কোম্পানির সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে গত সপ্তাহের মোট লেনদেনের ৩৪.১৭ শতাংশ হয়েছে ১০ কোম্পানির শেয়ারে।
দশ কোম্পানির মধ্যে সপ্তাহটিতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ইউনিলিভার কনজু্যমারের শেয়ার। কোম্পানিটির গত সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে ৪৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা গত সপ্তাহের মোট লেনদেনের ৮.৬৪ শতাংশ।
ডিএসইতে গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে- রেনেটার ৫.১৩ শতাংশ, রূপালী লাইফ ইন্সু্যরেন্সের ৩.২৭ শতাংশ, ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের ৩.১০ শতাংশ, সি পার্লের ২.৮১ শতাংশ, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ২.৪৫ শতাংশ, সিটি জেনারেল ইন্সু্যরেন্সের ২.৩০ শতাংশ, বিচ হ্যাচারির ২.১৯ শতাংশ, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ২.১৭ শতাংশ ও স্কয়ার ফার্মার ২.১১ শতাংশ লেনদেন হয়েছে।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৩৯৬টি প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে ৩০০টির দর বেড়েছে, ৬৪টির দর কমেছে, ৩২টির দর অপরিবর্তিত ছিল। আর ১৬টি কোম্পানির শেয়ারের কোনো লেনদেন হয়নি।
এদিকে বিগত সপ্তাহে লেনদেন আগের সপ্তাহের তুলনায় ৯১৯ কোটি টাকা বেড়েছে। দৈনিক গড় লেনদেন ৩৭৬ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৫৬০ কোটি টাকায় উঠে এসেছে। ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট দুই হাজার ৮০২ কোটি ১৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আর আগের সপ্তাহে মোট এক হাজার ৮৮২ কোটি ২৭ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছিল। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ৯১৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।
সপ্তাহটিতে ডিএসইর প্রধান সূচক ১১১.২৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫,৩৫৫.৪১ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ্ সূচক ৩৭.৪৬ পয়েন্ট বেড়ে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৪৭.০৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১,১৮৩.৫২ পয়েন্টে এবং ১,৯২২.৫৭ পয়েন্টে। এবং ডিএসই এসএমই সূচক ৬৯.৩৩ পয়েন্ট বেড়ে ১,৫৫২.৭০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনের নেতৃত্বে উঠে এসেছে ইউনিলিভার কনজু্যমার কেয়ার লিমিটেড।
সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড়ে ৪৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা ছিল ডিএসইর মোট লেনদেনের ৮.৬৪ শতাংশ। লেনদেনের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রেনাটা লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড়ে ২৮ কোটি ৭৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ৫.১৩ শতাংশ।
তৃতীয় স্থানে রয়েছে রূপালী লাইফ ইন্সু্যরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড়ে ১৮ কোটি ৩৪ লাখ ২০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ৩.২৭ শতাংশ।
এছাড়া প্রতিদিন গড় লেনদেনে সাপ্তাহিক শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের ১৭ কোটি ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, সি পার্ল হোটেলের ১৫ কোটি ৭৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা, ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকোর ১৩ কোটি ৭৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা, সিটি জেনারেল ইন্সু্যরেন্সের ১২ কোটি ৮৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা, বিচ হ্যাচারির ১২ কোটি ২৬ লাখ ১০ হাজার টাকা, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ১২ কোটি ১৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ১১ কোটি ৭৯ লাখ ৮০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহটিতে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৪৬.২০ শতাংশ। সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের ৩৯.২০ শতাংশ, লিনডে বিডির ৩৫.৬৬ শতাংশ, পেপার প্রসেসিংয়ের ৩৩.৮২ শতাংশ, মনোস্পুল পেপারের ৩৩.৬৮ শতাংশ, ওয়াটা কেমিক্যালের ৩১.১৯ শতাংশ, হাইডেলবার্গ সিমেন্টের ৩০.৩৮ শতাংশ, ইউনিলিভার কনজু্যমারের ২৭.০৩ শতাংশ, পিপুলস ইন্সু্যরেন্সের ২৪.২১ শতাংশ এবং রেনাটা লিমিটেডের ২৩.৯৩ শতাংশ শেয়ার দর বেড়েছে।