চলমান বৈদেশিক মুদ্রা সংকটের মধ্যেই চলতি বছরের মে মাসে বিগত ২৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ ঋণপত্র (এলসি) খোলা হয়েছে। যার পরিমাণ ৬ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এর আগে ২০২২ সালের জুনে সর্বোচ্চ এলসি খোলার রেকর্ড হয়েছিল। যা ৭ দশমিক ০২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছিল। এরপর থেকে ডলারের বিনিময় হার ও টাকার মূল্যমানের ওঠানামায় এলসি খোলা কমতে থাকে।
২০২৪ সালের এপ্রিলে ৫ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলারের এলসি খোলা হয়। এপ্রিলের তুলনায় মে মাসের পরিসংখ্যানে ২০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি দেখা যায়। ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় মে মাসে এলসি ওপেনিং বেড়েছে ১৯ দশমিক ৫ শতাংশ।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষে কর সুবিধা এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে বিভিন্ন পণ্যের ওপর কর ছাড় প্রত্যাহারের প্রত্যাশাসহ বেশ কয়েকটি কারণে এই প্রবণতা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ ও বাজার বিশ্লেষকরা।
বিষয়টি ব্যাখ্যা করে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, অর্থবছরের শেষের দিকে কিছু পণ্যের ওপর আরও নমনীয় আমদানি নীতি মে মাসে এলসি খোলার বাড়ার অন্যতম কারণ বলা যায়।
এছাড়া ২০২৪ সালের ৮ মে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের বিনিময় হার ৭ টাকা বাড়ানোর পর ব্যবসায়ীরা ডলারের বিনিময় হার আরও বাড়ার আশঙ্কায় এলসি খোলার দিকে ছুটে যান।
বাণিজ্য বিশ্লেষক ড. এম মাসরুর রিয়াজ বলেন, রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক ঋণ বিতরণের কারণে ডলারের সরবরাহ বাড়ার কারণে দীর্ঘদিন পর এলসি খোলার পরিমাণ বেড়েছে।
বাংলাদেশে চলমান সামষ্টিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা সত্ত্বেও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাণিজ্যের পরিমাণ ও ব্যবসায়িক লেনদেন বেড়েছে। মূলধন আমদানিতে সরকারের নীতি সহায়তাও এলসি খোলার ওপর প্রভাব ফেলেছিল বলেও জানান ড. রিয়াজ।
এছাড়াও ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে নতুন করের ঘোষণার ফলে এলসি খোলা বাড়াতে অবদান রেখেছিল।
ড. রিয়াজ বলেন, মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি এতদিন করমুক্ত ছিল।