দেশে আমানতের চেয়ে ঋণের প্রবৃদ্ধি বেশি

প্রকাশ | ২০ জুন ২০২৪, ০০:০০

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
ব্যাংকিং ব্যবস্থার অধীন সরকারি ও বেসরকারি খাতে যাওয়া ঋণের পরিমাণ বেড়ে ২০ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। পাঁচ বছর আগের তুলনায় ঋণ বেড়েছে সাত লাখ কোটি টাকা। তবে শুধু ঋণ নয়, পালস্না দিয়ে বেড়েছে আমানতও। ব্যাংক খাতে আমানতের পরিমাণ গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল সাড়ে ১৭ লাখ কোটি টাকা। পাঁচ বছর আগের তুলনায় ব্যাংক খাতে আমানত বেড়েছে পাঁচ লাখ কোটি টাকা। সেই হিসাবে, দেশে আমানতের চেয়ে ঋণের প্রবৃদ্ধি বেশি। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২৪ বিশ্লেষণ করে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে। সমীক্ষা প্রতিবেদনটি ৬ জুন জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। এতে আমানতের তথ্য ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এবং ঋণের তথ্য ২০২৪ সালের ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত উলেস্নখ করা হয়েছে। অর্থনৈতিক সমীক্ষা প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বলেছেন, আমানতের হালনাগাদ অর্থাৎ চলতি বছরের ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত তথ্য পাওয়া গেলে এই চিত্র কিছুটা ভিন্ন হতে পারে। আগামী ডিসেম্বর মাসে নতুন সমীক্ষা প্রকাশিত হরে পুরোচিত্র পাওয়া যাবে। সাধারণভাবে আমানতের চেয়ে ঋণ বেশি হতে পারে না। তবে ব্যাংকের আমানতের বাইরেও সরকার অনেক সময় টাকা ছাপিয়ে ঋণ নেয়। এ অঙ্ক আমানতের বাইরে থাকে। সে ক্ষেত্রে ঋণের পরিমাণ বেশি হতে পারে। ঋণ বেশি হওয়ার কারণ সম্পর্কে জানা যায়, বিনিয়োগের হিসাবকে ঋণে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিনিয়োগ মূলত এক ব্যাংক আরেক ব্যাংকে যে টাকা ধার দেয় সেটা, আবার এই টাকা সরকারি খাতে ধার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ফলে বিনিয়োগের টাকা প্রকৃত ঋণ নয়। সমীক্ষায় পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, প্রতিবছর এক লাখ কোটি টাকা আমানত বাড়ছে। কিন্তু ঋণ বাড়ছে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা করে। এদিকে ব্যাংক খাতে মোট আমানতের এক-তৃতীয়াংশের বেশি এসেছে স্থায়ী হিসাবে (এফডিআর)। আর ঋণের এক-চতুর্থাংশ গেছে সরকারের কাছে। অর্থনৈতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংক খাতের আমানত ছিল ১৭ লাখ ৪৯ হাজার ১৩২ কোটি টাকা। আর এ বছরের ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ২০ লাখ ৪ হাজার ১০৯ কোটি টাকা। পাঁচ বছর আগে আমানতের পরিমাণ ছিল ১২ লাখ ৬৪ হাজার ১৬৭ কোটি টাকা। আর ঋণের পরিমাণ ছিল ১৩ লাখ ৭ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা। সমীক্ষায় সরকারি-বেসরকারি উভয় খাতের ঋণের তথ্য উলেস্নখ করা হয়েছে। যেমন বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত সরকারের কাছে ব্যাংক খাতের ঋণ ছিল ৪ লাখ ২৭ হাজার ১৭২ কোটি টাকা। অথচ পাঁচ বছর আগেও এ ঋণ ছিল ২ লাখ ১০ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা। অন্যদিকে গত ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ব্যাংকে ঋণ দাঁড়ায় ১৫ লাখ ৭৬ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকা, যা ৫ বছর আগে ছিল ১০ লাখ ৯৭ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা।