বিনিয়োগকারীদের জন্য ভালো যায়নি ঈদুল আজহার আগের সপ্তাহটি। তবে পতন থেমে শেষ দুই দিন সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকায় কিছুটা স্বস্তির দেখা পেয়েছে বিনিয়োগকারীরা। ঈদের পর বাজার পরিস্থিতি ভালো হবে এ আশায় বুক বেঁধেছেন তারা।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে অর্থাৎ ৯-১৩ জুন পর্যন্ত প্রধান সূচক, ডিএসই-৩০ ও শরিয়াহ্ সূচক কমেছে। পাশাপাশি লেনদেনও কমেছে সাড়ে তিনশ' কোটি টাকা।
এদিকে লেনদেন আগের সপ্তাহের তুলনায় ৪১৯ কোটি টাকা কমেছে। দৈনিক গড় লেনদেন ৫৪৯ কোটি থেকে কমে ৪৬৩ কোটি টাকায় চলে এসেছে। যদিও গত সপ্তাহে ব্যাংক হলিডের জন্য একদিন কম লেনদেন হয়েছে। এ কারণে লেনদেন এত কমেছে। সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা করে এ তথ্য জানা গেছে।
ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট এক হাজার ৮৮২ কোটি ২৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আর আগের সপ্তাহে মোট দুই হাজার ২৫৮ কোটি দুই লাখ টাকা লেনদেন হয়েছিল। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ৩৫৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
সপ্তাহটিতে ডিএসইর প্রধান সূচক ১১৯.৫১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫,১১৭.৮১ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ্ সূচক ২৮.৭ পয়েন্ট কমে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৩৬.০৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১,১০৮.০৬ পয়েন্টে এবং ১,৮২১.৮৯ পয়েন্টে।
বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৪১২টি প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে ৫৪টির দর বেড়েছে, ৩২৩টির দর কমেছে, ১৭টির দর অপরিবর্তিত ছিল এবং ১৮টির লেনদেন হয়নি।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনের নেতৃত্বে উঠে এসেছে বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড়ে ২৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা ছিল ডিএসইর মোট লেনদেনের ৭.৫৬ শতাংশ।
লেনদেনের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তাওফিকা ফুডস এন্ড লাভেলো আইসক্রিম পিএলসি। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড়ে ১৫ কোটি ৫ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ৩.৯৯ শতাংশ।
তৃতীয় স্থানে রয়েছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড়ে ১৩ কোটি ৯০ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ৩.৬৯ শতাংশ।
এছাড়া প্রতিদিন গড় লেনদেনে সাপ্তাহিক শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে সি পার্ল হোটেলের ১২ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার টাকা, ইউনিলিভার কনজু্যমারের ১২ কোটি ১০ লাখ ৯০ হাজার টাকা, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ১১ কোটি ৬১ লাখ ৪০ হাজার টাকা, রূপালী লাইফ ইন্সু্যরেন্সের ১০ কোটি ৪৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা, ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোবাকোর ৯ কোটি ৮৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা, স্কয়ার ফার্মার ৯ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ৯ কোটি ৪২ লাখ ৪০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহটিতে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে সমতা লেদার কমপেক্স লিমিটেডের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ১৮.১৮ শতাংশ।
সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে এটলাস বাংলাদেশের ১৬.৭৫ শতাংশ, মিথুন নিটিংয়ের ১৬.১৮ শতাংশ, সাফকো স্পিনিংয়ের ১৪.৬৮ শতাংশ, ইউনিলিভার কনজু্যমারের ১৩.৮৩ শতাংশ, ক্রিস্টাল ইন্সু্যরেন্সের ১২.৪৬ শতাংশ, ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের ১০.৬২ শতাংশ, গেস্নাবাল হেভি কেমিক্যালসের ১০.৩৯ শতাংশ, ভিএফএস থ্রেড ডাইংয়ের ৯.৯৫ শতাংশ এবং সেনা কল্যাণ ইন্সু্যরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৮.৫৫ শতাংশ শেয়ার দর বেড়েছে।
সপ্তাহটিতে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের লিমিটেডের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর ১৫.৫৬ শতাংশ কমেছে।
সাপ্তাহিক দর পতনের শীর্ষ তালিকায় স্থান পাওয়া অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে গেস্নাবাল ইসলামী ব্যাংকের ১৪.৬৭ শতাংশ, সোনালী আঁশের ১৩.৯৮ শতাংশ, খান ব্রাদার্সের ১৩.৯৪ শতাংশ, কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের ১৩.৪৩ শতাংশ, এনসিসি ব্যাংকের ১৩.৬১ শতাংশ, রূপালী ব্যাংকের ১২.৩২ শতাংশ, এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামিক মিউচু্যয়াল ফান্ডের ১১.৯০ শতাংশ, ন্যাশনাল পলিমারের ১১.৫০ শতাংশ এবং বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেডের ১১.৪৩ শতাংশ শেয়ার দর কমেছে।