ডিএসইতে দুই হাজার কোটি টাকার লেনদেন

প্রকাশ | ০১ জুন ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
পুঁজিবাজার থেকে মূলধনী মুনাফার ওপর করারোপ (গেইন ট্যাক্স) করা হচ্ছে এমন খবরে গত দুই সপ্তাহ অস্থির ছিল। বিদায়ী সপ্তাহে অর্থাৎ ২৬-৩০ মে পর্যন্ত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সব ধরনের সূচক কমেছে। পাশাপাশি লেনদেনও সামান্য কম হয়েছে। ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, আলোচিত সপ্তাহে টাকার অঙ্কে মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৭০ কোটি টাকা। লেনদেন কমেছে ১১৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৬০ পয়েন্ট বা ১.১৪ পয়েন্ট। বিগত সপ্তাহে ডিএসইএক্স কমে ৫ হাজার ২৫১ দশমিক ৯৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহে ডিএসইএক্স ছিল ৫ হাজার ৩১২ দশমিক ৪০ পয়েন্ট। বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৪১২টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ১১৫টির দর বেড়েছে, ২৪৮টির দর কমেছে, ২৭টির দর অপরিবর্তিত ছিল এবং ২২টির লেনদেন হয়নি। ডিএসইতে পিই রেশিও (সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত) কমেছে। আগের সপ্তাহের তুলনায় ডিএসইর পিই রেশিও ১.৫১ শতাংশ বা দশমিক ০.১৫ পয়েন্ট কমেছে। আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইর পিই রেশিও ৯.৭৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের সপ্তাহে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ৯.৯৩ পয়েন্ট। ডিএসইতে বিদায়ী সপ্তাহে টাকার অঙ্কে ৫ খাতে লেনদেন বেড়েছে। একই সময়ে টাকার অঙ্কে লেনদেন কমেছে ১৬ খাতে। লেনদেন বৃদ্ধি পাওয়া খাতগুলো হলো- ব্যাংক, আর্থিক, লাইফ ইন্সু্যরেন্স, বিদু্যৎ ও জ্বালানি এবং চামড়া। জানা যায়, গত সপ্তাহে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন বেড়েছে বিদু্যৎ ও জ্বালানি খাতে। এ খাতে সপ্তাহজুড়ে মোট লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ৮৭ লাখ ৩০ হাজার টাকার যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ১০ কোটি ৮৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা ১৩৫.০৮ শতাংশ বেশি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন বেড়েছে ব্যাংক খাতে। সপ্তাহজুড়ে এ খাতে মোট ৩৭ কোটি ২৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা বা ২২.৪৩ শতাংশ বেশি। তৃতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন বেড়েছে আর্থিক খাতে। সপ্তাহজুড়ে এ খাতে লেনদেন হয়েছে ৫ কোটি ১১ লাখ ৯০ হাজার টাকা যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ৭০ লাখ ৯০ হাজার টাকা বা ১৬.০৬ শতাংশ বেশি। চতুর্থ সর্বোচ্চ লেনদেন বেড়েছে চামড়া খাতে। সপ্তাহজুড়ে এ খাতে লেনদেন হয়েছে ৫ কোটি ৮ লাখ ২০ হাজার টাকা যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ৪৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা বা ৯.৩৮ শতাংশ বেশি। পঞ্চম সর্বোচ্চ লেনদেন বেড়েছে লাইফ ইন্সু্যরেন্স খাতে। সপ্তাহজুড়ে এ খাতে লেনদেন হয়েছে ২৩ কোটি ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ১ কোটি ১৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা বা ৫.৪৪ শতাংশ বেশি। ডিএসইতে লেনদেনের নেতৃত্বে উঠে এসেছে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড়ে ১৬ কোটি ২৫ লাখ ১০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা ছিল ডিএসইর মোট লেনদেনের ৪.১৭ শতাংশ। লেনদেনের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড়ে ১৪ কোটি ৪২ লাখ ১০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ৩.৭০ শতাংশ। তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ফার্মা। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড়ে ১৩ কোটি ৮০ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ৩.৫৪ শতাংশ। এছাড়া প্রতিদিন গড় লেনদেনে সাপ্তাহিক শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের ১২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, লাভেলো আইসক্রিমের ১২ কোটি ৫৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা, ইউনিলিভার কনজু্যমারের ১১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, রূপালী লাইফ ইন্সু্যরেন্সের ১১ কোটি ৩৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা, রিলায়েন্স ওয়ান দ্যা ফার্স্ট স্কিম অব রিলায়েন্স ইন্সু্যরেন্স মিউচুয়াল ফান্ডের ১০ কোটি ১৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা, ওরিয়ন ইনফিউশনের ৮ কোটি ৯৭ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের ৮ কোটি ৬৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সপ্তাহটিতে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেডের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৪৬.৩৪ শতাংশ। সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে গেস্নাবাল হেভি কেমিক্যালের ৩৫.৩৪ শতাংশ, খুলনা প্রিন্টিংয়ের ২৫.১৩ শতাংশ, হামিং ইন্ডাস্ট্রিজের ১৭.৬৮ শতাংশ, সিএপিএম বিডিবিএল মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ানের ১৭.১৪ শতাংশ, ফারইস্ট ফাইন্যান্সের ১৬.২২ শতাংশ, সোনারগাঁও টেক্সটাইলসের ১৩.৬৫ শতাংশ, রূপালী লাইফ ইন্সু্যরেন্সের ১১.৬৪ শতাংশ, মতিন স্পিনিংয়ের ১১.১৬ শতাংশ এবং তুং হাই নিটিং এন্ড ডাইং লিমিটেডের ১১.১১ শতাংশ শেয়ার দর বেড়েছে। সপ্তাহটিতে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে পাইওনিয়ার ইন্সু্যরেন্স লিমিটেডের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর ১৯.৫৪ শতাংশ কমেছে। সাপ্তাহিক দর পতনের শীর্ষ তালিকায় স্থান পাওয়া অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে যমুনা ব্যাংকের ১৭.৩১ শতাংশ, প্রগতি ইন্সু্যরেন্সের ১৪.৩১ শতাংশ, ইজেনারেশনের ১৩.৫৪ শতাংশ, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের ১৩.১৫ শতাংশ, খান ব্রাদার্সের ১২.৯৫ শতাংশ, সালভো কেমিক্যালের ১২.০২ শতাংশ, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ১১.৯০ শতাংশ, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ১১.৩০ শতাংশ এবং ন্যাশনাল লাইফ ইন্সু্যরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ১১.১০ শতাংশ শেয়ার দর কমেছে।