শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১

পুঁজিবাজারে পতন ঠেকাতে ৫০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের দাবি

বাজারের স্থিতিশীলতা রক্ষায় আগামী বাজেটে ৫০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দসহ ১২ দফা দাবি জানিয়েছে পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী জাতীয় ঐক্য ফাউন্ডেশন
যাযাদি রিপোর্ট
  ৩০ মে ২০২৪, ০০:০০
পুঁজিবাজারে পতন ঠেকাতে ৫০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের দাবি

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বর্তমান পর্ষদের দূরদর্শিতার অভাবে পুঁজিবাজার থেকে বড় অংকের অর্থ বের হয়ে গেছে। এ জন্য অব্যাহত দরপতনের কারণে প্রতিদিনই পুঁজি হারাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। বাজারের স্থিতিশীলতা রক্ষায় আগামী বাজেটে ৫০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দসহ ১২ দফা দাবি জানিয়েছে পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী জাতীয় ঐক্য ফাউন্ডেশন।

বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন- সংগঠনের সভাপতি রুহুল আমিন আকন্দ।

রুহুল আমিন আকন্দ বলেন, 'দেশের শিল্পপতিরা পুঁজিবাজার থেকে পুঁজি সংগ্রহ করে শিল্পের বিকাশ ঘটাচ্ছেন। এতে করে বেকারত্ব লাঘব হচ্ছে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে ও প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে। ফলে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধশালী হচ্ছে। কিন্তু পুঁজিবাজার এখন চরম হুমকির মধ্যে বিনিয়োগকারীরা তাদের পুঁজি হারাচ্ছে। অনেকেই ইতোমধ্যে বিনিয়োগ করে সর্বস্বান্ত হয়ে পথে বসেছে।'

রুহুল আমিন আকন্দ অভিযোগ করে বলেন, 'পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার বর্তমান পর্ষদ দায়িত্ব নেওয়ার পর তাদের নানা আশ্বাস ও আহ্বানে নতুন করে অনেকে বিনিয়োগ করেছে। কিন্তু দূরদর্শিতার অভাবে কিছু বিতর্কিত গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে খারাপ কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন দিয়ে বাজার থেকে বেহিসাবি (বিশাল আকারের) অর্থ বের করে নেওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। এতে করে দীর্ঘদিন ধরে পুঁজিবাজারে অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে।'

রুহুল আমিন আকন্দ সাংবাদিকদের জানান, 'এ অবস্থায় আমরা বিনিয়োগকারীরা খুব অসহায় অবস্থায় রয়েছি। তাই প্রধানমন্ত্রী সরাসরি হস্তক্ষেপ করে যেন বিনিয়োগকারীদের বাঁচার মতো পরিবেশ তৈরি করে দেন, সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন রুহুল আমিন আকন্দ।'

পুঁজিবাজারে বর্তমান মন্দা পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে ১২ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো-

পুঁজিবাজার স্থিতিশীল করতে আগামী বাজেটে ৫০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দের ব্যবস্থা করতে হবে। ২. পুঁজিবাজার ভালো করতে আগামী এক বছর সকল ধরনের আইপিও অনুমোদন বন্ধ রাখতে হবে। ৩. বর্তমান নেতিবাচক পুঁজিবাজারে টেকনো ড্রাগস লিমিটেডের আইপিও দ্রম্নত বন্ধ করতে হবে। ৪. ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স আরোপ বন্ধ করতে হবে। ৫. বাইব্যাক আইন কার্যকর করতে হবে। ৬. শেয়ার দর বৃদ্ধি পেলে যেমন কারণ দর্শানো হয়, তেমনি কমলেও এর কারণ দর্শানোর নোটিশের ব্যবস্থা করতে হবে। ৭. পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তনের ইসু্য দেখিয়ে যেসব কোম্পানির শেয়ার দর আকাশচুম্বী করা হয়েছে, সেসব কোম্পানির শেয়ার কারসাজি চক্রের বিরুদ্ধে দ্রম্নত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ৮. মিউচু্যয়াল ফান্ড উন্নয়নে দৃশ্যমান কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে ও আর্থিক সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও নো ডিভিডেন্ড দেওয়া কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। ৯. ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড বাজার উন্নয়নে ব্যবহার করতে হবে। ১০. পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারীদের পুঁজির নিরাপত্তা ও সুরক্ষা তহবিল গঠন করতে হবে। ১১. স্মার্ট বাংলাদেশে স্মার্ট পুঁজিবাজার ও স্বচ্ছতা আনয়নে বিএসইসিতে বিনিয়োগকারীদের প্রতিনিধি রাখার ব্যবস্থা করতে হবে এবং ১২. আসন্ন বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ সম্পূর্ণ নিঃশর্তভাবে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে