খামারিদের সুরক্ষায় হাজার কোটি টাকা চায় পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন

প্রকাশ | ২৬ মে ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
ডিম-মুরগির সংকট কাটাতে বন্ধ খামারগুলোকে উৎপাদনে ফেরাতে সরকারের কাছে এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বিপিএর সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রান্তিক খামারিদের সুরক্ষায় এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের দাবি জানাচ্ছি। যাতে বন্ধ হওয়া হাজার হাজার খামার বিভিন্ন ব্যাংক থেকে জামানতবিহীন ঋণ সুবিধা নিতে পারে এবং উৎপাদনে ফিরে আসতে পারে। তাহলে দেশের ডিম-মুরগির সংকট কখনো হবে না।' সম্মেলনে বিপিএ জানায়, বর্তমানে একটি ডিমের উৎপাদন খরচ সাড়ে ৯ থেকে সাড়ে ১০ টাকা, যা এখন খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১২ টাকা থেকে সাড়ে ১২ টাকায়। সুমন হাওলাদার এই দামকে যৌক্তিক হিসেবে উলেস্নখ করে বলেন, 'এখন ডিমের বাজার স্থির আছে। উৎপাদক ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে, ভোক্তাও ন্যায্যমূল্যে খাচ্ছে। এই বাজারকে ধরে রাখতে রাজধানীসহ সারাদেশের ডিম সমিতি ও ডিম ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটকে শাস্তির আওতায় নিতে হবে।' ডিমের দাম ওঠানামা করার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, 'ডিম উৎপাদন করে প্রান্তিক খামারিরা। দাম নির্ধারণ করে তেজগাঁও ডিম সমিতি। মোবাইলে এসএমএস ও ফেসবুকের মাধ্যমে দেশব্যাপী তথ্য ছড়িয়ে দিয়ে তারাই ৭ টাকা করে আবার বাড়িয়ে দিয়ে ১৩ টাকায় পৌঁছায়। কাপ্তান বাজার ডিম সমিতি, সাভার, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, পাবনা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, রংপুর সব জায়গায় তেজগাঁওয়ের কথা মতো দাম বাস্তবায়ন করে।' এরপর তারা কম দামে ডিম কিনে নিয়ে কোল্ড স্টোরেজ করে পরে সেই ডিম সিন্ডিকেট করে বেশি দামে বিক্রি করে অতি মুনাফা করে। অন্যদিকে উৎপাদক ন্যায্যমূল্য না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে উৎপাদন থেকে সরে যাচ্ছে। আর খামারিদের একই পাইকারের কাছে ডিম বিক্রি করতে হয়। বিপিএ সভাপতি সুমন হাওলাদার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কিছু কর্মকর্তাকে দায় দিয়ে বলেন, তাদের দুর্নীতি ও অবহেলায় পোলট্রি ফিড ও মুরগির বাচ্চার দাম বেড়েছে। তিনি বলেন, 'প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর করপোরেট গ্রম্নপগুলোকে সুবিধা দিয়ে ২৮ টাকার উৎপাদন খরচের মুরগির বাচ্চার দাম নির্ধারণ করে দেয় ৬৭ টাকা। সরকার মুরগির দাম বেঁধে দেওয়ায় ডিম-মুরগিতে কারসাজি করতে পারছে না। তাই করপোরেট গ্রম্নপ সেই বাচ্চা সংকট তৈরি করে পরিবেশক বা খামারিদের কাছে বিক্রি না করে কালোবাজারে বিক্রি করেন ৮০ টাকা থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত।' বিপিএ জানায়, হাতেগোনা কয়েকটি পোলট্রি ফিড কোম্পানি ও মুরগির বাচ্চা উৎপাদনকারী হাতিয়ে নিচ্ছে শত শত কোটি টাকা। করপোরেট গ্রম্নপগুলো বছরে ৮০ লাখ টন পোলট্রি ফিড উৎপাদন করে। কিন্তু উৎপাদন খরচ প্রকাশ করে না। যদি প্রতি কেজিতে ৫ টাকা বেশি নেওয়া হয়, ৮০ লাখ টন পোলট্রি ফিডে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা তারা বছরে লুট করে নেয় বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিপিএর উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য ও বাংলাদেশ এসএমই ফোরামের সভাপতি চাষি মামুন, বিপিএর সহ-সভাপতি বাপ্পি কুমার দে ও সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খন্দকার।