রেমিট্যান্স বাড়াতে প্রবাসীদের প্রণোদনা দেওয়ার তাগিদ

সংসদীয় কমিটির বৈঠক

প্রকাশ | ২৫ মে ২০২৪, ০০:০০

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
প্রবাসীদের জন্য সরকারের স্বল্প সুদের ঋণ ও অন্য সুবিধার প্রচার বাড়ানোর পাশাপাশি তাদের আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে আরও উৎসাহিত করতে অর্থের বাইরে আরও 'প্রণোদনা' দেওয়ার তাগিদ এসেছে একটি সংসদীয় কমিটির কাছ থেকে। বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়, যেখানে প্রবাসী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সামাজিক মর্যাদা বাড়ানোর বিষয়ে কথা হয়। বৈঠকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করে, সেখানে অর্থ বহির্ভূতপ্রণোদনা দেওয়ার প্রস্তাব রাখা হয়, যেটিকে 'অ-আর্থিক প্রণোদনা' হিসেবে তুলে ধরা হয়। কমিটির সদস্যরা প্রস্তাবটি নিয়ে আগ্রহ দেখান। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রবাসীদের আয় বাড়ানোর জন্য রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের 'অ-আর্থিক সুবিধা' দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে সরকার। কারণ প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ দেশের অর্থনীতিতে গত প্রায় তিন দশক ধরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বর্তমান সরকারের ২০০৯-১০ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ সময়কালে গড়ে প্রতি বছর দেশের আমদানি ব্যয় ৪৬ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। একই সময় গড়ে প্রতি বছর প্রবাসী আয় এসেছে ১৫ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ এ সময় প্রতি বছর গড় আমদানি ব্যয়ের ৩৪ দশমিক ৩ শতাংশের সমপরিমাণ প্রবাস আয় দিয়ে মেটানো হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা ধীর হয়ে যাওয়া প্রবাসী আয়ের গতি বাড়াতে নতুন নীতি-সহায়তা দিলে তা ভালো ফল বয়ে আনতে পারে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় মনে করছে। এ লক্ষ্যে কতগুলো পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। সুপারিশের মধ্যে আছে- রেমিট্যান্স পাঠানো কোনো প্রবাসী স্থায়ীভাবে দেশে ফিরলে তার জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অগ্রাধিকার দেওয়া, বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা দেওয়া, ইমিগ্রেশন, কাস্টমস ও অন্য আনুষ্ঠানিকতা দ্রম্নত শেষ করে দিতে বিশেষ ডেস্ক স্থাপন করা, তার ও তার পরিবারের সদস্যদের জন্য বিশেষ স্মার্ট কার্ড দিয়ে নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসায় বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া, সব সরকারি অফিসে সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া। রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের পাশে থাকতে আরও কিছু সুপারিশ করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে- রেমিটার স্মার্ট কার্ড দেওয়া, রেমিটারদের সন্তানদের জন্য শিক্ষা কোটা চালু করা, ওয়ার্ক পারমিট নবায়নের ফি কমানো, পাসপোর্টসহ দূতাবাসে সেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া। কমিটির সদস্য সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বৃহস্পতিবার বলেন, 'রেমিট্যান্স বাড়ানোর জন্য প্রবাসীদের স্মার্ট কার্ড দেওয়ার বিষয়ে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে সুপারিশ করেছি। তিনি আরও বলেন, 'প্রবাসীরা বিদেশ থেকে আসার পর দেশে যাতে উপযুক্ত কর্মপরিবেশ পায়, সেজন্য খুবই অল্পসুদে ঋণ দেওয়া হয়, তাদের জন্য অফশোর ব্যাংকিং সুবিধা রয়েছে। কিন্তু প্রচারের অভাবে এসব তথ্য প্রবাসীরা ঠিকমতো জানে না। এজন্য আমরা প্রচার বাড়ানোর সুপারিশ করেছি।' আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য ও অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, এম.এ. মান্নান, আহমেদ ফিরোজ কবির, আবুল কালাম আজাদ ও রুনু রেজা অংশ নেন।