দুই কারণে বেড়েছে তেলের দাম

প্রকাশ | ২১ মে ২০২৪, ০০:০০

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
বিশ্ববাজারে তেলের দাম আরও কিছুটা বেড়েছে। হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃতু্য এবং সৌদি আরবের উত্তরাধিকারী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বাদশাহ সালমানের স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে জাপান সফর বাতিল করার পর তেলের দাম বেড়ে যায়। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, সোমবার বিশ্ব বাজারে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ৩২ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৮৪ দশমিক ৩০ ডলারে উঠেছে। মে মাসের ১০ তারিখের পর এটাই ব্রেন্ট ক্রুডের সর্বোচ্চ দাম। এ ছাড়া ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুড বা ডবিস্নউটিআই ক্রুডের দাম ৫ সেন্ট বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৮০ দশমিক ১১ ডলারে উঠেছে। এর আগে ১ মে এই তেলের দাম ছিল ব্যারেলপ্রতি ৮০ দশমিক ২৩ ডলার। রোববার আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও অনুষ্ঠানে ছিলেন। সেখান থেকে তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন ইব্রাহিম রাইসি ও তার সঙ্গে থাকা অন্য কর্মকর্তারা। ফেরার পথে এক পার্বত্য এলাকায় হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়। পরে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, ইরানি প্রেসিডেন্ট মারা গেছেন। অন্যদিকে, সোমবার জাপান সফরে যাওয়ার কথা ছিল যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের। কিন্তু বাদশাহ সালমানের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ থাকায় যুবরাজ তার সফর বাতিল করেছেন। জাপানের মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইয়োশিমাসা হায়াসি এ কথা জানান। সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা রোববার জানিয়েছে, ৮৮ বছর বয়সি বাদশাহর ফুসফুস সংক্রমিত হয়েছে; তার চিকিৎসা চলছে। এই পরিস্থিতিতে বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এ অবস্থায় তেলের বাজারে এমনিতেই যে অনিশ্চয়তা আছে, তা আরও ঘনীভূত হবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ডবিস্নউটিআই ক্রুডের দাম ২০০ দিনের গড় দাম ৮০ দশমিক শূন্য ২ ডলার অতিক্রম করেছে; এখন তা ৮৩ দশমিক ৫০ ডলারে উঠে যেতে পারে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইজি মার্কেটসের বিশ্লেষক টনি সিকামোর রয়টার্সকে বলেন, ডবিস্নউটিআই ক্রুডের দাম বেড়ে যাওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। শুধু ইরানি প্রেসিডেন্টের দুর্ঘটনা ও সৌদি বাদশাহর স্বাস্থ্যগত কারণে নয়, চীন আবাসন খাতকে টেনে তুলতে গত সপ্তাহে যে প্রণোদনা ঘোষণা করেছে, এর প্রভাবে তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে। চীন বিশ্বের বৃহত্তম তেল আমদানিকারক। এই দেশের চাহিদার ওপর বিশ্ব বাজারে তেলের দাম অনেকাংশে নির্ভর করে। গত সপ্তাহে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ১ শতাংশ বাড়ে। গত তিন সপ্তাহের মধ্যে এই প্রথম সাপ্তাহিক হিসাবে ব্রেন্টের দাম বেড়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাজারের ইতিবাচক খবরের জেরে ডবিস্নউটিআই ক্রুডের দাম গত সপ্তাহে দুই শতাংশ বেড়েছে। আজ নতুন সপ্তাহের শুরুর দিন সেই ধারা আরও বেগবান হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে নানা উত্তেজনা সত্ত্বেও তেলের দাম সামান্যই বেড়েছে। তেলের দাম প্রায়ই বাড়ছে-কমছে, যদিও এই হ্রাস-বৃদ্ধি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যেই আছে। এর অর্থ হলো, বাজার স্থিতিশীল আছে। আগামী ১ জুন ওপেক ও সহযোগী দেশগুলোর বৈঠক হবে। তেলের উৎপাদনের বিষয়ে উৎপাদকরা কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা দেখার জন্য বিশ্লেষকরা এখন সেই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছেন। ওপেকের সমন্বয় করার সক্ষমতা থাকায় ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা যতই থাক না কেন, তেলের বাজার অস্থিতিশীল হচ্ছে না।