আজকের যায়যায়দিন

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে অর্থাৎ ৫ থেকে ৯ মে অধিকাংশ মূল্যসূচকের উত্থানের পাশাপাশি বাজার মূলধন বেড়েছে। বেড়েছে টাকার অঙ্কে লেনদেনও। দেশের আরেক শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) একই চিত্র দেখা গেছে। ডিএসই-সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ডিএসই সূত্র বলছে, সদ্য বিদায়ী সপ্তাহে টাকার অঙ্কে লেনদেন হয়েছে ৪ হাজার ৮০২ কোটি ৭২ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে যা ছিল ২ হাজার ৮২৩ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ১ হাজার ৯৭৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। বিদায়ী সপ্তাহে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৯৬০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে যা ছিল ৭০৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।

ডিএসইতে মোট ৪১২টি কোম্পানি লেনদেনে অংশগ্রহণ করেছিল। যার মধ্যে দর বেড়েছে ২৪০টির, অপরিবর্তিত ছিল ২৫টির ও দর কমেছে ১২৮টি কোম্পানির। আর ১৯টি কোম্পানির কোনো লেনদেন হয়নি।

ডিএসই সূত্র বলছে, বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসই প্রধান সূচক-ডিএসইএক্স ৪৫ পয়েন্ট বেড়ে হয়েছে ৫৬৬১ পয়েন্ট। এর আগের সপ্তাহে যা ছিল ৫৬১৫ পয়েন্ট। ডিএস৩০ সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে হয়েছে ২০১৫ পয়েন্ট। এর আগের সপ্তাহে যা ছিল ২০০৮ পয়েন্ট। ডিএসই শরিয়াহ্‌ সূচক বেড়েছে ১০ পয়েন্ট ও ডিএসএমইএক্স কমেছে ৮ পয়েন্ট। বিদায়ী সপ্তাহে বাজার মূলধন হয়েছে ৭ লাখ ৭ হাজার ২৬ কোটি ১০ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে যা ছিল ৭ লাখ ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা। এক্ষেত্রে বাজার মূলধন বেড়েছে ১ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনের নেতৃত্বে উঠে এসেছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড়ে ৩৭ কোটি ৮২ লাখ ১০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা ছিল ডিএসইর মোট লেনদেনের ৩.৯৪ শতাংশ।

লেনদেনের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে লাভেলো আইসক্রিম। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড়ে ৩৪ কোটি ৯৯ লাখ ৬০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ৩.৬৪ শতাংশ।

তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড়ে ৩১ কোটি ২২ লাখ ১০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ৩.২৫ শতাংশ।

এছাড়া প্রতিদিন গড় লেনদেনে সাপ্তাহিক শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানির মধ্যে বেস্ট হোল্ডিংসের ২৯ কোটি ৯৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা, মালেক স্পিনিংয়ের ২৮ কোটি ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, গোল্ডেন সনের ২৭ কোটি ১০ লাখ ৭০ হাজার টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংকের ২৫ কোটি ৫২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ২৫ কোটি ৫৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ওরিয়ন ফার্মার ২২ কোটি ৩০ লাখ ৯০ হাজার টাকা এবং ফার ইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ১৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

সপ্তাহটিতে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেডের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৪২.৪৬ শতাংশ। ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় এই তথ্য জানা গেছে।

সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানির মধ্যে ফারইস্ট নিটিংয়ের ৩৬.৬৭ শতাংশ, মিথুন নিটিংয়ের ৩১.২২, জিকিউ বলপেনের ২৭.৬৭, আইসিবি এএমসিএল সিএমএসএফ গোল্ডেন জুবলি মিউচু্যয়াল ফান্ডের ২৫.০০, রূপালী ব্যাংকের ১৯.৯১, গেস্নাবাল হেভি কেমিক্যালসের ১৯.৮২, ফনিক্স ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচু্যয়াল ফান্ডের ১৯.০৫, তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজের ১৮.৪১ এবং আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের ১৮.১৮ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে।

সপ্তাহটিতে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে উত্তরা ব্যাংক পিএলসির। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর ১৬.১৫ শতাংশ কমেছে।

সাপ্তাহিক দর পতনের শীর্ষ তালিকায় স্থান পাওয়া অন্যান্য কোম্পানির মধ্যে খুলনা প্রিন্টিংয়ের ১০.৩৩ শতাংশ, হামি ইন্ডাস্ট্রিজের ১০.২৬, এইচআর টেক্সটাইলের ১০.২৪, আবতাব অটোমোবাইলসের ৯.৭৯, বাংলাদেশ ল্যাম্পসের ৯.১০, ইস্টার্ন ক্যাবলসের ৭.৯৮, বিচ হ্যাচারির ৬.৪৯, আইটি কনসালট্যান্টসের ৫.৪৬ এবং সি পার্ল হোটেলের ৫.৮৯ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে।

অন্যদিকে সিএসইতে বিদায়ী সপ্তাহে টাকার অঙ্কে লেনদেন হয়েছে ৩৩৮ কোটি ২১ লাখ ৭৪ হাজার ৭২২ টাকা। এর আগের সপ্তাহে যা ছিল ১৮৩ কোটি ৬৭ লাখ ৭৪ হাজার ৮৪৫ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ১৫৪ কোটি ৫৩ লাখ ৯৯ হাজার ৮৭৭ টাকা। সিএসইতে মোট ৩২৯টি কোম্পানি লেনদেনে অংশগ্রহণ করেছে; যার মধ্যে দর বেড়েছে ২০২টির, কমেছে ১০৩টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৪টি কোম্পানির দর।

সিএসই সূত্রে আরও জানা গেছে, সিএসই প্রধান সূচক- সিএএসপিআই গত সপ্তাহে ছিল ১৬ হাজার ৫১ পয়েন্ট। বিদায়ী সপ্তাহে যা দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ২৩২ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে সূচক বেড়েছে ১ শতাংশ। সিএসই৩০ সূচক বেড়েছে দশমিক ৫৮ শতাংশ, সিএসসিএক্স বেড়েছে ১ শতাংশ, সিএসই৫০ সূচক বেড়েছে দশমিক ৪৯ শতাংশ, সিএসআই বেড়েছে ১ শতাংশ এবং সিএসইএসএমইএক্স কমেছে ২ শতাংশ। সিএসইতে বাজার মূলধন বেড়েছে ৩ হাজার ৪০২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।