বিদু্যতের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্তে উদ্বিগ্ন উদ্যোক্তারা

প্রকাশ | ০৬ মে ২০২৪, ০০:০০

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
ভর্তুকি কমাতে বছরে চারবার বিদু্যতের মূল্য সমন্বয় করবে বিদু্যৎ বিভাগ। আগামী তিন বছর এই প্রক্রিয়ায় বিদু্যৎ খাতে দেওয়া ভর্তুকি কমিয়ে আনতে চায় তারা। সরকার বিদু্যৎ খাতে ভর্তুকি দিয়ে আসছে, এখাতে ভর্তুকি কমানো হলে বিদু্যতের দাম বাড়বে। এ অবস্থায় তিন মাস অন্তর বিদু্যতের মূল্য বৃদ্ধির পরিকল্পনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন খাতের শিল্প কারখানার উদ্যোক্তারা। কয়েকজন উদ্যোক্তা বলেছেন, করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও মধ্যপ্রাচ্যে হামাস-ইসরাইল সংঘাতের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে দেশে ডলারের উচ্চমূল্য এবং বাড়তি দাম দিয়েও নিরবচ্ছিন্নভাবে গ্যাস ও বিদু্যৎ না পাওয়ায় ব্যবসার খরচ বেড়ে গেছে। ব্যাংক ঋণের সুদের হারও বেড়েছে। নতুন করে আবার বিদু্যতের দাম বাড়লে ব্যবসার খরচ আরও বেড়ে যাবে। প্রতিযোগিতা সক্ষমতাও কমে আসবে দেশীয় কোম্পানিগুলোর। তাতে আমদানি বৃদ্ধি ও রপ্তানি কমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। বিদু্যৎ বিভাগের কর্মকর্তারা গত বৃহস্পতিবার ঢাকা সফররত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে ভর্তুকি কমাতে আগামী তিন বছরে মোট ১২ বার বিদু্যতের দাম সমন্বয়ের কথা জানান। ভর্তুকি কমাতে গত বছরের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) তিন দফায় বাড়ানো হয়েছিল বিদু্যতের দাম। সর্বশেষ গত ফেব্রম্নয়ারি মাসে এক দফা দাম বেড়েছে। আইএমএফ গত বছরের ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচি অনুমোদন করে। এ ঋণের জন্য বাংলাদেশকে যেসব শর্ত পালন করতে হবে, তার মধ্যে রয়েছে বিদু্যৎ খাতে ভর্তুকি কমিয়ে আনা এবং জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়ে আন্তর্জাতিক রীতিনীতি অনুসরণ করা। ঋণ কর্মসূচি শুরুর পর বাংলাদেশ দুই কিস্তিতে ১০০ কোটি ডলারের বেশি পেয়েছে। তিন মাস অন্তর বিদু্যতের দাম সমন্বয়ে সরকারি পরিকল্পনা নিয়ে জানতে চাইলে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, 'বিদু্যতে আমাদের সিস্টেম লস কমানো ও সক্ষমতা বাড়ানোর দিকে জোর দিতে হবে। ব্যবসায়ীদের কাছে নিরবচ্ছিন্ন বিদু্যৎ পাওয়াটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের তো ব্যবসা করতে হবে। ভর্তুকি কমাতে গিয়ে যদি বিদু্যতের দাম বাড়ানো হয় এবং সেটি কতটা তার ওপর ভিত্তি করে আমরা মন্তব্য করব।' গাজীপুরের টঙ্গীর মাজুখানে এক্সক্লুসিভ ক্যান নামের কারখানায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের রঙের ছোট-বড় ক্যান, আইসক্রিমের বক্স, ওষুধের বোতল ইত্যাদি তৈরি হয়। গত মাসের শেষ ছয় দিনে মোট ৫৫ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে তাদের উৎপাদন ব্যাহত হয়। পরিস্থিতি সামলাতে মাসে সাড়ে ছয় লাখ টাকা ভাড়ায় এক হাজার কিলোওয়াটের নতুন একটি জেনারেটর ভাড়া করেছে প্রতিষ্ঠানটি। জানতে চাইলে এক্সক্লুসিভ ক্যানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসির বললেন, 'গত বছর তিন দফা এবং চলতি বছর এক দফা বিদু্যতের দাম বাড়ানো হয়েছে। তারপরও আমরা নিরবচ্ছিন্ন বিদু্যৎ পাচ্ছি না। এপ্রিলের শেষ দিনে মোট ১২ ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং হয়েছে। একবার বিদু্যৎ চলে গেলে আবার উৎপাদন শুরু করতে কমপক্ষে ৪০ মিনিট সময় লাগে।