চলতি বছরের প্রথম চার মাসে এশিয়ায় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানি বেড়েছে। অঞ্চলটির বিভিন্ন দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা বৃদ্ধি আমদানি বাড়ার পেছনে মূল প্রভাবকের ভূমিকা পালন করেছে। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান এলএসইজি। খবর রয়টার্স।
প্রতিবেদনে এলএসইজি জানায়, জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে এশিয়ার বিভিন্ন দেশ দৈনিক অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করেছে ২ কোটি ৭০ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেল। গত বছরের একই সময় থেকে দৈনিক আমদানির এই পরিমাণ ৩ লাখ ব্যারেল বেশি।
তবে চলতি বছরের প্রথম চার মাসে এশিয়ায় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানি বাড়লেও গত এপ্রিলে আগের মাসের তুলনায় অঞ্চলটিতে জ্বালানি তেল আমদানি কমেছে। এ অঞ্চলের শীর্ষ আমদানিকারক দেশ চীনে আমদানির পরিমাণ বাড়লেও অন্যান্য দেশে কমেছে।
এলএসইজির অয়েল রিসার্চের সংকলিত তথ্য অনুসারে, গত মার্চে এশিয়ায় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানির পরিমাণ ছিল দৈনিক ২ কোটি ৭৩ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেল। এপ্রিলে তা কমে দিনপ্রতি ২ কোটি ৬৮ লাখ ৯০ হাজার ব্যারেল হয়েছে। এছাড়া গত ফেব্রম্নয়ারিতে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানির পরিমাণ ২ কোটি ৬৬ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল ছিল বলেও জানিয়েছিল তারা।
এদিকে পেট্রোলিয়াম রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংস্থা ওপেক জ্বালানি তেলের বাজারবিষয়ক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের চাহিদা আগের বছর থেকে চলতি বছর দিনপ্রতি ২২ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল বৃদ্ধি পাবে। আর এ চাহিদার ১২ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেলই আসবে অর্থনৈতিক সহায়তা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি) বহির্ভূত দেশগুলো থেকে।
প্রতিবেদনে ওপেক আরও জানায়, চলতি বছর বিশ্বের বৃহত্তম অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানিকারক দেশ চীনে জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়বে দিনপ্রতি ৬ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের অফিশিয়াল কাস্টমস ডেটা এবং এলএসইজির অনুমান অনুয়ায়ী, জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে মোট ১ কোটি ১১ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে চীন, যা গত বছরের একই সময় থেকে ২ লাখ ৯০ হাজার ব্যারেল বেশি।
চীন ছাড়াও এশিয়ার অন্যান্য দেশেও অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়বে বলে এক পূর্বাভাসে জানিয়েছিল ওপেক। তবে এপ্রিলে চীন ছাড়া অন্যান্য দেশে আমদানি কমানোয় এ সম্ভাবনা অনেকটাই ক্ষীণ হয়ে এসেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তবে ওপেকসহ অন্য বিশ্লেষকরা পূর্বাভাসে জানিয়েছে, এশিয়ার উত্তর অংশে গ্রীষ্মের মাসগুলোয় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়তে পারে এবং চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে তা আরও প্রসারিত হতে পারে। চীনের অর্থনীতি বৃদ্ধির গতি পুনরুদ্ধারসহ মুদ্রাস্ফীতি থেকে বিভিন্ন দেশের উত্তরণের কারণে চাহিদা বৃদ্ধির এমন পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাগুলো।
গত এপ্রিলের এক প্রতিবেদনে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইএস) জানিয়েছে, চলতি বছর বিশ্বব্যাপী দৈনিক ১২ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়তে পারে। আর শুধু এশিয়ার দেশ চীনে জ্বালানি তেলের চাহিদা বৃদ্ধির এ পরিমাণ হবে দৈনিক ৫ লাখ ব্যারেল।