এশিয়ায় কমছে এলএনজির চাহিদা

মধ্যপ্রাচ্য সংঘাতের কারণে কাতার থেকেও এলএনজির সরবরাহ কমে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। দেশটি এলএনজি রপ্তানিতে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ দেশ

প্রকাশ | ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
এশিয়ার স্পট মার্কেটে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম বেড়ে তিন মাসের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংঘাতের উত্তাপ জ্বালানিটির সরবরাহকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিয়েছে, যা দাম বাড়ার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। এমন পরিস্থিতিতে ভারতসহ এশিয়ার মূল্য সংবেদনশীল ক্রেতা দেশগুলোয় জ্বালানিটির চাহিদা কমতে শুরু করেছে। খবর রয়টার্স। ১৯ এপ্রিল সমাপ্ত সপ্তাহে প্রতি এমএমবিটিইউ স্পট এলএনজির মূল্য দাঁড়ায় ১০ ডলার ৫০ সেন্টে, যা ১৯ জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ। চলতি বছরের শুরু থেকে দাম বেড়েছে ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ। গত মার্চে জ্বালানিটির দাম এমএমবিটিইউপ্রতি ৮ ডলার ৩০ সেন্টে নেমে গিয়েছিল। ডাটা ইন্টেলিজেন্স প্রতিষ্ঠান আইসিআইএসের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক অ্যালেক্স ফ্রোলে বলেন, 'মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের কারণে গত সপ্তাহ থেকেই এলএনজির দাম ঊর্ধ্বমুখী। এ সংঘাতের কারণে প্রভাব পড়েছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দামেও। যুক্তরাষ্ট্রে এলএনজি পস্ন্যান্টগুলোয় ফিডগ্যাসের সরবরাহ কমেছে। পাশাপাশি নরওয়েতে সরবরাহ ঘাটতি ও মিসরে আমদানি প্রবণতা বিশ্ববাজারে সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।' কমোডিটি প্রাইসিং এজেন্সি আরগাসের হেড অব এলএনজি প্রাইসিং স্যামুয়েল গুড বলেন, 'প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম ১০ ডলারের ওপরে ওঠায় ফের এশিয়ান ক্রেতাদের কাছে স্পট এলএনজির চাহিদা কমেছে।' সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্য সংঘাতের কারণে কাতার থেকেও এলএনজির সরবরাহ কমে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। দেশটি এলএনজি রপ্তানিতে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ দেশ। সরবরাহ কমে যাওয়ার এই আশঙ্কাও দাম বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখছে। এদিকে এলএনজির পরিবহণ ব্যয়ও বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। কারণ, ইউরোপমুখী জাহাজগুলো লোহিত সাগর এড়িয়ে চলছে। ফলে বিকল্প পথে এলএনজি পরিবহণে ব্যয় হচ্ছে অতিরিক্ত সময় ও অর্থ। প্রতি এমএমবিটিইউর দাম ১০ ডলারের ওপর উঠে যাওয়ায় ভারত ও চীনসহ এশিয়ার ক্রেতা দেশগুলো ফের আমদানির পরিমাণ কমাতে শুরু করেছে। বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান কেপলার জানায়, গত মাসে ভারত সব মিলিয়ে ২২ লাখ ৬০ হাজার টন এলএনজি আমদানি করেছিল। এপ্রিলে তা কমে ১৯ লাখ টনে নামতে পারে। এলএসইজির হিসাব অনুযায়ী, এপ্রিলে ভারত ১৭ লাখ ৯০ হাজার টন এলএনজি আমদানি করতে পারে, যা চার মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। কেপলার জানায়, এপ্রিলে চীনের এলএনজি আমদানি দাঁড়াতে পারে ৬১ লাখ ৪০ হাজার টনে, যা মার্চের তুলনায় কম। ওই মাসে আমদানির করা হয়েছিল ৬৬ লাখ ৪০ হাজার টন। যদিও চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে চীনের এলএনজি আমদানির গতি শক্তিশালী ছিল। কারণ, তখন জ্বালানিটির দাম তুলনামূলকভাবে অনেক কম ছিল। জাপান বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ এলএনজি ক্রেতা। কেপলারের প্রাক্কলন অনুযায়ী, এপ্রিলে দেশটির আমদানি ৫১ লাখ ২০ হাজার টনে নামতে পারে, যা মার্চের তুলনায় কম। ওই সময় আমদানি করা হয়েছিল ৫৯ লাখ ৬০ হাজার টন। এলএনজি আমদানিতে জাপানের পরই অবস্থান দক্ষিণ কোরিয়ার। দেশটি মার্চে ৩৯ লাখ ৩০ হাজার টন এলএনজি আমদানি করেছিল। এপ্রিলে তা বেড়ে ৪১ লাখ ২০ হাজার টনে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আগামী মাসে দেশটির আমদানি কমে যেতে পারে।