গরমে চাহিদা বেড়েছে ফ্যান এসির, দামও চড়া
গত মার্চ থেকে ফ্যান ও এসির চাহিদা বেড়েছে। চাহিদার তুলনায় জোগানেও টান পড়েছে। ব্র্যান্ডের শপগুলো লোকাল দোকানগুলোতে চাহিদা মতো ফ্যান দিচ্ছে না। এ জন্য তাদের নন ব্র্যান্ড ও বিদেশি ফ্যান বিক্রি করতে হচ্ছে। অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, ইচ্ছামতো দাম হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারা।
প্রকাশ | ২১ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
গরমে নাভিশ্বাস চরমে। রোদের তাপে বাসার বাইরে থাকার অবস্থা নেই। আবার বাসার ভেতর ফ্যান ছাড়া থাকা যায় না। এমন অসহনীয় তাপমাত্রায় জনজীবন যখন অতিষ্ট তখন ভিড় বেড়েছে ফ্যান ও এসির দোকানে।
শনিবার মিরপুর-১ কো-অপারেটিভ মার্কেটের পেছনে ইলেকট্রনিক মার্কেটের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায়। বেশিরভাগ ক্রেতাই সিলিং ফ্যান ও স্ট্যান্ড ফ্যান কিনছিলেন।
বিক্রেতারা বলছেন, গত মার্চ থেকে ফ্যান ও এসির চাহিদা বেড়েছে। চাহিদার তুলনায় জোগানেও টান পড়েছে। ব্র্যান্ডের শপগুলো লোকাল দোকানগুলোতে চাহিদা মতো ফ্যান দিচ্ছে না। এ জন্য তাদের নন ব্র্যান্ড ও বিদেশি ফ্যান বিক্রি করতে হচ্ছে। অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, ইচ্ছামতো দাম হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারা।
সুরাইয়া ইলেকট্রনিক নামের একটি দোকানে স্ট্যান্ড ফ্যান দরদাম করছিলেন বিশবিদ্যালয় ছাত্র তরিকুল। তবে দামে না মেলায় ফ্যানটি কিনেননি তিনি। তরিকুল বলেন, ছোট নন ব্র্যান্ডের টাইফুন ফ্যানগুলোর দাম চাইছে ৮৫০-৯০০ টাকা। অথচ গত বছর এগুলোর দাম ছিল ৪৫০-৫০০ টাকা। গরম বেড়েছে এখন এক ফ্যানে কাজ হয় না। তাই আরেকটি ফ্যান কিনতে এসেছি।
আরেকজন ক্রেতা বলেন, ডিফেন্ডার ব্র্যান্ডের ১২ ইঞ্চি ফ্যান কোথাও চাইছে তিন হাজার ৫০০ টাকা, কোথাও চার হাজার টাকা। আর একই ব্র্যান্ডের ১৪ ইঞ্চি ফ্যান চাওয়া হচ্ছে পাঁচ হাজার টাকা।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, ছোট স্ট্যান্ড (৯-১০ ইঞ্চি) বা টাইফুন ফ্যান বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকা। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্ট্যান্ড ফ্যান বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ২০০ থেকে আট হাজার টাকায়। এ ছাড়া দেশি ব্র্যান্ডের সিলিং ফ্যান এক হাজার ৭০০ থেকে তিন হাজার ৫০০ টাকা, বিদেশি ব্র্যান্ডের সিলিং ফ্যান বিক্রি হচ্ছে চার হাজার ৫০০ থেকে ১০ হাজার টাকায়।
একই ব্র্যান্ডের ফ্যানের ভিন্ন ভিন্ন দাম প্রসঙ্গে বিক্রেতারা বলছেন, কেউ আগের বছরের অবিক্রীত ফ্যান বিক্রি করছেন, তারা কিছুটা কমে দিতে পেরেছেন। ফ্যানের দাম কিছুটা বেড়েছে, গরম বাড়লে দাম আরও বাড়বে।
মামুন ইলেকট্রনিকসের স্বত্বাধিকারী মামুন হোসেন বলেন, আমাদের ফ্যান বিক্রি হয় গরম বাড়লে। এখন সিলিং ফ্যানের চাহিদা বেশি। যেহেতু বিদু্যতের কোনো সমস্যা নেই, তাই রিচার্জঅ্যাবল ফ্যানের চাহিদা নেই। আবার বিদু্যতের সমস্যা না থাকায় ফ্যানও নষ্ট হচ্ছে কম। বিক্রি ভালোই হচ্ছে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের রিচার্জঅ্যাবল ফ্যান বিক্রি হচ্ছে চার হাজার ৫০০ থেকে সাত হাজার টাকায়।
চাঁদপুর ইলেক্ট্রিক কর্নারের স্বত্বাধিকারী শ্রাবণ বলেন, দেশি ব্র্যান্ডের চাহিদা বেশি। তবে চাহিদা অনুযায়ী ফ্যান পাওয়া যাচ্ছে না। মূলত রমজান মাসের শুরু থেকেই এই ক্রাইসিস শুরু করে প্রতিষ্ঠানগুলো।
ফ্যানের পাশাপাশি চাহিদা বেড়েছে এসির। মিরপুর-১ নম্বরে এসকোয়ার ইলেকট্রনিকসে গিয়ে জানা যায়, এক টনের এসি বিক্রি হচ্ছে ৭৪ হাজার টাকায়, দেড় টনের এসি বিক্রি হচ্ছে এক লাখ ২১ হাজার টাকায়। ভিশন এসি বিক্রি হচ্ছে ৪৭ হাজার ও দেড় টনের ৬৫ হাজার টাকায়। এছাড়া গ্রি এক টনের ৫১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
শোরুমগুলোর বিক্রয় প্রতিনিধিরা বলছেন, ইনভার্টার ও নন-ইনভার্টার দুই এসির বিক্রি ভালো। তবে বেশিরভাগ ক্রেতাই জানেন না, কী ধরনের এসি কিনতে হবে। এ ছাড়া এসি ইন্সটেলশন চার্জ ১০ হাজার টাকা। আর ক্রেতাদের জন্য সামান্য ডিসকাউন্টের ব্যবস্থা আছে।
কল্যাণপুরের ব্যবসায়ী শরীফ ইকবাল বলেন, 'আমার ছোট একটা কাপড়ের দোকানে আছে। তাপমাত্রা যেভাবে বাড়ছে, এতে ফ্যানের বাতাসে কাজ হচ্ছে না। ক্রেতার স্বস্তির কথা ভেবে এসি কিনতে এসেছি। সব কিছু দেখেশুনে একটা দেড় টনের এসি কিনব।'