তীব্র গরমেও রাজধানী ঢাকার শীতলীকরণ যন্ত্রের দোকানে ভিড় শুরু হয়নি। এয়ারকন্ডিশনার (এসি), কুলার, ফ্যান, চার্জার ফ্যান বিক্রিতে যেন খরা চলছে। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামসংলগ্ন মার্কেটে গিয়ে দেখা গেছে, ঈদের ছুটি শেষে প্রায় সব দোকান খুললেও চোখে পড়ার মতো ক্রেতা নেই।
বিক্রেতারা জানান, এ বছর গরম পড়তে শুরু করে রমজানের মাঝামাঝি সময়ে। সবাই তখন ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত থাকায় শীতলীকরণ যন্ত্র তেমন বিক্রি হয়নি। এখন ঈদের ছুটি শেষে সবাই ঢাকায় না ফেরায় এসব পণ্যের বিক্রি জমে উঠেনি।
তাছাড়া গত বছরের মতো এবার তেমন লোডশেডিং না হওয়ায় চার্জার ফ্যানেরও চাহিদা নেই। আরও সপ্তাহখানেক পর হয়তো বিক্রি বাড়বে বলে প্রত্যাশা দোকানিদের।
মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, ডিফেন্ডার ব্র্যান্ডের ১২ ইঞ্চির চার্জার ফ্যানের দাম চাওয়া হচ্ছে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা, ১৬ ইঞ্চি চার্জার ফ্যানের দাম চাওয়া হচ্ছে ৪ হাজার ৮০০ থেকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা।
কেনেডি ব্র্যান্ডের ১২ ইঞ্চি চার্জার ফ্যানের দাম চাওয়া হচ্ছে চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা, ১৬ ইঞ্চি চার্জার ফ্যানের দাম চাওয়া হচ্ছে সাড়ে পাঁচ হাজার থেকে ছয় হাজার ২০০ টাকা। এর বাইরেও বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চার্জার ফ্যান পাওয়া যাচ্ছে।
নোভা, হায়ার, মিয়াকো, গ্রি, রেড সুইসসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এয়ার কুলারও পাওয়া যাচ্ছে এ মার্কেটে। গ্রি ব্র্যান্ডের ২০ লিটারের এয়ার কুলারের দাম চাওয়া হচ্ছে ১৫ হাজার থেকে ১৬ হাজার ৯৯০ টাকা। ৬০ লিটারের এয়ার কুলারের দাম চাওয়া হচ্ছে ২০ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ২১ হাজার ৯৯০ টাকা পর্যন্ত।
নোভা ব্র্যান্ডের এয়ার কুলারের দাম চাওয়া হচ্ছে ১১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। মিয়াকো ব্র্যান্ডের এয়ার কুলারের দাম চাওয়া হচ্ছে ১৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৩০ হাজার টাকা। রেড সুইস ব্র্যান্ডের এয়ার কুলারের দাম চাওয়া হচ্ছে ২৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা
বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এসি পাওয়া যাচ্ছে ৩৫ হাজার থেকে শুরু করে এক লাখ ১৫ হাজার ৯০০ টাকা। আছে পোর্টেবল এসিও। এগুলো দাম রাখা হচ্ছে ৪০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা। আছে মিস্ট ফ্যান। এগুলোর দাম রাখা হচ্ছে ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১৫ হাজার টাকা।
স্টেডিয়াম মার্কেটের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কুলার-চার্জার ফ্যান বিক্রেতা বলেন, এসি-কুলারের দাম এখনো স্বাভাবিক আছে। তবে চাহিদা বাড়লে দামও হয়তো বাড়বে। তবে এখন চাহিদা নেই। ঈদের পর এখনো মানুষ আসেনি। এলে হয়তো বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, মার্কেট খুলছে দুই-তিন দিন হয়েছে। রমজানে সবাই ঈদের কেনাকাটা করেছে। এসব দামি জিনিস কেনেনি। রোজার ভেতর এসি-কুলার বিক্রি হয়নি বললেই চলে। আশা করি, আগামী সপ্তাহ থেকে মার্কেট জমে উঠবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্যামসাংয়ের এক বিক্রয়কর্মী বলেন, স্যামসাংয়ের এসির দাম অনেক বেশি। এক টনের একটি এসির দাম ৮০ হাজার টাকা আর দুই টনের দাম এক লাখ ১৫ হাজার ৯০০ টাকা। দাম বেশি হওয়ার কারণে স্যামসাংয়ের এসি খুব একটা বিক্রি হয় না। তবে রোজায় কয়েকটি এসি বিক্রি করেছি। যদিও সেটি সিজন হিসেবে তা খুব বেশি নয়।
গোল্ডেন ইলেকট্রনিকসের স্বত্বাধিকারী মহিবুল বলেন, সকাল থেকে একটি চার্জার ফ্যানও বিক্রি করতে পারিনি। মার্কেটে ক্রেতাও নেই।
অপর এক ইলেকট্রনিকস দোকানের স্বত্বাধিকারী আবু সাদেক বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার এসি-কুলার বিক্রি কম। তবে একেবারেই যে বিক্রি হচ্ছে না-তাও না। কিছু বিক্রি হচ্ছে। মানুষ এখনো ঢাকায় আসেনি। মানুষ পুরোপুরি ঢাকায় এলে বিক্রি আরও বাড়বে।