ঈদ ও পহেলা বৈশাখের টানা ছুটি শেষ হয়েছে। খুলেছে ভোগ্যপণ্যের প্রধান পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ। তবে বন্ধ-পরবর্তী সময়ে লেনদেনে ভাটা পড়ায় কমেছে চিনির দাম। কয়েক দিনের ব্যবধানে মণপ্রতি পণ্যটির দাম কমেছে ১২০ টাকা।
স্বাভাবিক সময়ে গ্রীষ্মে চিনির চাহিদা থাকে তুঙ্গে। ফলে সরবরাহের সঙ্গে বাড়ে দামও। তবে টানা ছুটির পাশাপাশি ব্যাংকিং চ্যানেলে লেনদেন বন্ধ থাকায় চিনিসহ বিভিন্ন পণ্যের লেনদেন কমেছে। এছাড়া ছুটির কারণে মিলগেট থেকে সরাসরি চিনি সংগ্রহ কার্যক্রম কম থাকার বিষয়টিও দামে প্রভাব ফেলেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
পাইকারি বাজারের ট্রেডিং প্রতিষ্ঠান ও পাইকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দেওয়া তথ্যে দেখা গেছে, বর্তমানে পাইকারি পর্যায়ে মণপ্রতি চিনি লেনদেন হচ্ছে ৪ হাজার ৭৮০ থেকে ৪ হাজার ৮০০ টাকায়। ঈদের আগে লেনদেন হয়েছে ৪ হাজার ৯০০ থেকে ৪ হাজার ৯২০ টাকায়। এতে ঈদের পর দাম কমেছে মণপ্রতি ১২০ টাকা বা কেজিতে ৩ টাকারও বেশি। ব্যবসায়ীদের ধারণা, ঈদের প্রভাব চলতি সপ্তাহ পর্যন্ত জারি থাকলে পণ্যটির দাম আরও কমবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পাইকারি চিনি ডিলার ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, '?ঈদ-পরবর্তী সময়ে বাজারে লেনদেন একেবারেই কম। ক্রেতাদের আনাগোনা কম থাকায় চাহিদার সঙ্গে দামও কমেছে। তাছাড়া ঈদের কয়েক দিন আগে ও পরে মহাসড়কে পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকা ও পরিবহণ শ্রমিকরা ঈদের ছুটিতে থাকায় লেনদেনে ভাটা পড়েছে। ফলে গ্রীষ্ম মৌসুম চললেও চিনির দাম কমেছে।'
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের আগে ও পরে যাত্রীবাহী যানবাহনের নিরাপদ এবং যানজটমুক্ত চলাচলের স্বার্থে মহাসড়কে পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। তবে অতি নিত্যপণ্যের যানবাহনের ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা সাধারণত আরোপ করা হয় না। এর পরও জটিলতা এড়াতে ব্যবসায়ীরা এ সময়ে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করলেও পরিবহণ কার্যক্রম স্থগিত রাখে। এ কারণে ঈদের পর ব্যাংকসহ অফিস আদালত চালু হলেও পুরোদমে পণ্য লেনদেন শুরু হয়নি। গ্রীষ্মকালীন মৌসুমে চিনির চাহিদা দ্বিগুণ হয়ে যায়। ফলে বর্তমানে দাম কমলেও আগামী সপ্তাহ থেকে পণ্যটির বাজার চাঙ্গা হতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
জানা গেছে, চট্টগ্রামের পাইকারি বাজারে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় এ অঞ্চলের একমাত্র বেসরকারি পরিশোধনকারী মিল এস আলম সুগারের চিনি। রোজার আগে এ মিলের একটি গুদামে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় চিনি সরবরাহ কার্যক্রম কিছুদিন বিঘ্নিত হয়। পরবর্তী সময়ে কয়েকদিনের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার পর মিলটির সরবরাহ কার্যক্রম স্বাভাবিক করা হলে চিনির দাম স্বাভাবিক হতে থাকে। তাছাড়া রোজার মধ্যে সরকারি মিলগুলো থেকে ডিলার পর্যায়ে জনপ্রতি ৫০০ কেজি হারে সরকার নির্ধারিত দামে চিনি সরবরাহ করার পাশাপাশি ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ন্যায্যমূল্যে পণ্য সরবরাহ কার্যক্রমে চিনি অন্তর্ভুক্ত করায় চিনির দাম নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রেখেছে বলে জানিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।