সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

এশিয়ায় রেকর্ড এলএনজি রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রের

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
  ৩১ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
এশিয়ায় রেকর্ড এলএনজি রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রের

বিশ্ব বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ দুটি জলপথ সুয়েজ ও পানামা খাল। ভূরাজনৈতিক সংঘাত ও খরার কারণে লম্বা সময় ধরেই খাল দু'টি দিয়ে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আফ্রিকা উপকূল (উত্তমাশা অন্তরীপ) ব্যবহার করে এশিয়ার দেশগুলোয় তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রপ্তানি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

এসঅ্যান্ডপি গেস্নাবাল কমোডিটি ইনসাইটের দেয়া তথ্যমতে, ২৭ মার্চ পর্যন্ত উত্তমাশা অন্তরীপ ঘুরে এশিয়ায় পৌঁছেছে ২৪টি মার্কিন এলএনজিবাহী কার্গো, যা এক মাসে রেকর্ড সর্বোচ্চ। এ পথ দিয়ে চলতি মাসে এশিয়ায় ঢুকেছে অন্তত ১৬ লাখ টন এলএনজি।

এসঅ্যান্ডপি গেস্নাবাল পস্নাটসের হিসাব অনুযায়ী, ৩০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের গালফ কোস্ট থেকে যেসব এলএনজি রপ্তানির উদ্দেশ্যে কার্গো বোঝাই করা হবে, ২৭ মার্চ ফি অন বোর্ড চুক্তিতে সেসব এলএনজির মূল্য ছিল প্রতি এমএমবিটিইউ ৮ ডলার ৮৭ সেন্ট, যা এর আগের দিনের তুলনায় ১৬ সেন্ট বেশি।

এল নিনোর প্রভাবে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ খরার মুখে পড়েছে পানামা। ফলে পানামা খালের পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। বিঘ্নিত হচ্ছে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল। রপ্তানিকারকরা আফ্রিকা মহাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল হয়ে উত্তমাশা অন্তরীপ ঘুরে এশিয়ায় পণ্য পরিবহনে বাধ্য হচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে জলপথটির ব্যবহার ব্যাপক বেড়েছে।

পানামা খাল দিয়ে এখনো এলএনজিবাহী কার্গো চলাচলের অনুমতি দেয়া হচ্ছে। তবে এসব কার্গোকে পারাপারে অনেক সময় ধরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বিলম্ব এড়াতে রপ্তানিকারকরা গত বছরের গ্রীষ্মের শুরু থেকেই রুট বদলেছেন।

এসঅ্যান্ডপি গেস্নাবালের তথ্যমতে, চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত পানামা খাল ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এশিয়ায় ঢুকেছে মাত্র ১৪টি এলএনজিবাহী কার্গো। গত বছরের একই সময় যা ছিল ৪০টি। মার্চে পথটি ব্যবহার করেছে মাত্র একটি এশিয়ামুখী এলএনজি কার্গো।

পানামা খালে সৃষ্ট এ জটিলতার কারণে গত বছর রপ্তানিকারকরা এশিয়ায় ঢোকার ক্ষেত্রে একমাত্র দ্রম্নততম জলপথ হিসেবে বেছে নেন সুয়েজ খালকে। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে এ পথ দিয়ে এশিয়ার বাজারে কয়েক বছরের সর্বোচ্চ এলএনজি রপ্তানি করে যুক্তরাষ্ট্র। ওই মাসে সুয়েজ খাল দিয়ে ১৭টি মার্কিন এলএনজিবাহী কার্গো এশিয়ার বন্দরগুলোয় ভিড়েছে।

২০২৩ সালের অক্টোবরে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে সিরিজ হামলা চালালে এ পথ দিয়েও জাহাজ চলাচল অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে। ঝুঁকি এড়াতে উলেস্নখযোগ্য সংখ্যক কোম্পানি এ রুট দিয়ে জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দেয়।

এদিকে ইউরোপের বাজারেও অব্যাহত বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের এলএনজি রপ্তানি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে ইউরোপে এলএনজি আমদানির বড় উৎসে পরিণত হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। চলতি মাসের এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে ১৬টি মার্কিন এলএনজিবাহী কার্গো পৌঁছেছে, যা ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় সর্বোচ্চ। একই সময় নেদারল্যান্ডসে গেছে ১২টি কার্গো। যুক্তরাষ্ট্র আমদানি করেছে ছয় কার্গো মার্কিন এলএনজি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে