এ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার দেশের শেয়ারবাজারে দরপতন হওয়ার পর মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রম্নয়ারি) এসে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। ফলে বেড়েছে মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণও।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। এরপরও বেড়েছে সূচক। পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণও।
এর আগে সাত কার্যদিবসের টানা পতনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ১৯০ পয়েন্ট কমে যায়। পাশাপাশি দেড় হাজার কোটি টাকার ওপরে চলে যাওয়া লেনদেন সাতশ' কোটি টাকার ঘরে নেমে আসে।
এমন পতনের পর গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার ডিএসইর প্রধান সূচক ১৭ পয়েন্ট বাড়ে। তবে চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস আবার সূচকের পতন হয়। সোমবার পবিত্র শবেবরাত উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকায় শেয়ারবাজারে লেনদেন হয়নি।
এ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ২১ পয়েন্ট বেড়ে যায়। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকায় লেনদেনর এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ২৮ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
তবে প্রথম দেড় ঘণ্টার লেনদেন শেষ হতেই বাজারের চিত্র বদলে যেতে থাকে। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। এতে ঋণাত্মক হয়ে পড়ে সূচক।
অবশ্য শেষ ঘণ্টার লেনদেনে দাম কমার তালিকা থেকে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় চলে আসে। এর একদিকে দাম বাড়ার তালিকা বড় হয় অন্যদিকে সবকটি মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৮৩টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫২টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৬০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১৩ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৬২ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৭২ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৩৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৬৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৮৯৮ কোটি ২০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৮০৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ৯৩ কোটি ২২ লাখ টাকা।
এ লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে বেস্ট হোল্ডিংয়ের শেয়ার। কোম্পানিটির ৫০ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফু-ওয়াং সিরামিকসের ৪২ কোটি ৯৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৩২ কোটি ৫৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-ওরিয়ন ইনফিউশ, আফতাব অটোমোবাইল, ফরচুন সুজ, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, বিডি থাই অ্যালুমেনিয়াম এবং জেমিনি সি ফুড।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৫৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২০টির এবং ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ২০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১২ কোটি ২১ লাখ টাকা।