২০২৩ সালে ইউরোপে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার কমে ১০ বছরের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। রাশিয়ার ওপর থেকেও নির্ভরতা কমিয়ে জ্বালানি সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতকে শক্তিশালী করেছে অঞ্চলটি। এ কারণেই প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারে এমন ধস নেমেছে। ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিসের (আইইইএফএ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
২০২২ সালের ফেব্রম্নয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে জ্বালানি পণ্যের বৈশ্বিক বাজারে বড় রদবদল দেখা দেয়। ওই সময়ের পর থেকে দুই বছরে ইউরোপের দেশগুলোয় প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা কমেছে ২০ শতাংশ।
আইইইএফএর সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ২০২৩ সালে অঞ্চলটিতে প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা কমে যাওয়ার পেছনে প্রধান প্রভাবকের ভূমিকা পালন করেছে জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাজ্য। অঞ্চলটিতে ২০২৫ সালের মধ্যে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যাবহার সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছার সম্ভাবনাও দেখছে আইইইএফএ।
তথ্য বলছে, ইউরোপের দেশগুলোর জ্বালানি আমদানির সবচেয়ে বড় উৎস ছিল রাশিয়া। ইউক্রেনে হামলার প্রতিক্রিয়ায় দেশটির ওপর কয়েক দফায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সমুদ্রপথে রুশ জ্বালানি তেল আমদানি। পাইপলাইনের মাধ্যমে দেশটি থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানিও সীমিত করা হয়েছে। বিকল্প হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশ থেকে এলএনজি আমদানি বাড়িয়েছে ইউরোপের দেশগুলো। তবে ২০২৩ সালে এক বছরের ব্যবধানে অঞ্চলটিতে এলএনজি আমদানি প্রায় অপরিবর্তিতই ছিল।
এর পরও এ অঞ্চলের বিভিন্ন দেশ নতুন নতুন এলএনজি অবকাঠামো নির্মাণ করছে। ২০২২ সালের ফেব্রম্নয়ারির পর থেকে এখন পর্যন্ত চালু হয়েছে আটটি আমদানি টার্মিনাল। ২০২৩ সালের মধ্যে আরো ১৩টি প্রকল্পের কার্যক্রম চালু হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এর অর্থ চলতি দশকের শেষ নাগাদ ইউরোপে এলএনজির যে পরিমাণ চাহিদা তৈরি হবে, এলএনজি টার্মিনালগুলোর সমন্বিত সক্ষমতা বাড়বে তার চেয়েও দ্বিগুণ।