পুঁজিবাজারে অব্যাহত দরপতনের কারণে বিগত সপ্তাহে লেনদেন কমে অর্ধেকে নেমেছে। বিদায়ী সপ্তাহে অর্থাৎ ১৮ থেকে ২২ ফেব্রম্নয়ারি প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ৬২ দশমিক ৩০ পয়েন্ট কমেছে। লেনদেন কমেছে ৫৪ শতাংশের বেশি।
ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিগত সপ্তাহে লেনদেন আগের সপ্তাহের তুলনায় ৪ হাজার ৭০ কোটি ২৫ লাখ টাকা কমেছে, যা আগের সপ্তাহ থেকে ৫৪ দশমিক ৭০ শতাংশ কম। দৈনিক গড় লেনদেন ১ হাজার ৪৮৮ কোটি থেকে কমে ১ হাজার ৮৪২ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। যদিও বিগত সপ্তাহে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ছুটির কারণে একদিন কম লেনদেন হয়েছে।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে চার কার্যদিবসে মোট বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩ হাজার ৩৭০ কোটি ১৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আর আগের সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবসে মোট ৭ হাজার ৪৪০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছিল। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ৪ হাজার ৭০ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
সপ্তাহটিতে ডিএসইর প্রধান সূচক ৬২ দশমিক ৩০ পয়েন্ট কমে ৬,২৭৩.৯৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়া সূচক ২১ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট কমে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৭ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১,৩৬০.৫২ পয়েন্টে এবং ২,১৩৯.৫৮ পয়েন্টে।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে ৪০৯টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ১২১টির দর বেড়েছে, ২৪৭টির দর কমেছে, ৩০টির দর অপরিবর্তিত ছিল এবং ১১টির লেনদেন হয়নি।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইর সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) সামান্য কমেছে। তথ্য মতে, বিদায়ী সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ১২ দশমিক ৬১ পয়েন্টে। আর সপ্তাহ শেষে তা ১৩ দশমিক ৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
বিগত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনের নেতৃত্বে উঠে এসেছে বেস্ট হোল্ডিংস লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ৩ কোটি ৬৩ লাখ ৮৮ হাজার ৭০৪টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ছিল ১৪৪ কোটি ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা, যা ছিল ডিএসইর মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ২৭ শতাংশ। লেনদেন তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ২০ লাখ ১৫৪টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১৩৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ৪ দশমিক ১১ শতাংশ।
তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফু-ওয়াং সিরামিক লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ৪ কোটি ২৫ লাখ ৪২ হাজার ৯৮২টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১১৩ কোটি ৪৬ লাখ ১০ হাজার টাকা, যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
এছাড়া সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে আফতাব অটোমোবাইলসের ৮০ কোটি ৮৫ লাখ ২০ হাজার টাকার, তৌফিকা ফুডসের ৭৯ কোটি ৭৭ লাখ ৭০ হাজার টাকার, সেন্ট্রাল ফার্মার ৭৫ কোটি ৬৪ লাখ ৪০ হাজার টাকার, মুন্নু ফেব্রিকসের ৭১ কোটি ৩৮ লাখ ৬০ হাজার টাকার, ফরচুন সুজের ৬৫ কোটি ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকার, রবি আজিয়াটার ৬২ কোটি ২১ লাখ ৫০ হাজার টাকার এবং বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশ-বিএসসির ৫৮ কোটি ৯০ লাখ ৯০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহটিতে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে এস্কয়ার নিট কম্পোজিট পিএলসির। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ২২ দশমিক ৯২ শতাংশ। সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে মুন্নু ফেব্রিকসের ১৯ দশমিক ৬৭, সেন্ট্রাল ইন্সু্যরেন্সের ১৮ দশমিক ৪৫, কুইন সাউথ টেক্সটাইলের ১৭ দশমিক শূন্য ৬, ভিএফএস থ্রেড ডাইংয়ের ১৬ দশমিক ৮৮, এএফসি অ্যাগ্রো বায়োটেকের ১৪ দশমিক ৫৮, এইচআর টেক্সটাইলের ১৪ দশমিক ৪২, সানলাইফ ইন্সু্যরেন্সের ১২ দশমিক ৯৪, একটিভ ফাইন কেমিক্যালসের ১১ দশমিক ৪৫ এবং জেমিনি সি ফুড পিএলসির ১১ দশমিক ২৫ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে।
সপ্তাহটিতে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেডের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর ২১ দশমিক ৫৮ শতাংশ কমেছে।
সাপ্তাহিক দর পতনের শীর্ষ তালিকায় স্থান পাওয়া অন্য কোম্পানির মধ্যে মনোস্পুল পেপারের ১৭ দশমিক ০২ শতাংশ, সাফকো স্পিনিংয়ের ১৫ দশমিক ৬৩, ইউনিয়ন ক্যাপিটালের ১৩ দশমিক ৬০, আফতাব অটোমোবাইলসের ১৩ দশমিক ৫৭, মিথুন নিটিংয়ের ১২ দশমিক ৯০, বিকন ফার্মার ১২ দশমিক ৮২, ইন্টার ন্যাশনাল লিজিংয়ের ১২ দশমিক ৩১ শতাংশ, ইয়াকিন পলিমারের ১১ দশমিক ৯৯ এবং সিকদার ইন্সু্যরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে।