বিশ্বজুড়ে রেকর্ড খাদ্যশস্য উৎপাদনের পূর্বাভাস

প্রকাশ | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
২০২৩-২৪ মৌসুমে খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক উৎপাদন রেকর্ড সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছার পূর্বাভাস মিলেছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সরবরাহ ও চাহিদা শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। খবর ওয়ার্ল্ড গ্রেইন ডটকম। প্রতিবেদনে খাদ্যশস্যের উৎপাদন পূর্বাভাস সংশোধন করেছে এফএও। আগের পূর্বাভাসের তুলনায় দানাদার শস্য উৎপাদনের পরিমাণ ১ কোটি ২০ লাখ টন বাড়িয়ে ধরা হয়েছে। সে হিসাবে চলতি মৌসুমে বিশ্বজুড়ে ১৫৩ কোটি ২০ লাখ টন দানাদার খাদ্যশস্য উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মোট খাদ্যশস্য উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ২৮৩ কোটি ৬০ লাখ টনে, যা আগের পূর্বাভাসের তুলনায় ১ কোটি ৩২ লাখ টন এবং গত মৌসুমের তুলনায় ১ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। দানাদার খাদ্যশস্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হতে পারে ভুট্টা। উৎপাদন প্রবৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকা রাখবে কানাডা, চীন, তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্র। এসব দেশে আবাদ, ফলন ও ফসল সংগ্রহে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বৈশ্বিক সরবরাহ খাতে আশা জাগাচ্ছে। এদিকে আলাদাভাবে গমের উৎপাদন পূর্বাভাসও বাড়িয়েছে এফএও। মোট উৎপাদনের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৭৮ কোটি ৮৫ লাখ টন, যা আগের পূর্বাভাসের তুলনায় ১৪ লাখ টন বেশি। তবে ২০২২-২৩ মৌসুমের তুলনায় শস্যটির উৎপাদন ২ দশমিক ২ শতাংশ কমার আশঙ্কা রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি মৌসুমে খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক ব্যবহার দাঁড়াতে পারে ২৮২ কোটি ২০ লাখ টনে। আগের মৌসুমের তুলনায় ব্যবহার ১ দশমিক ২ শতাংশ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্ববর্তী পূর্বাভাসের তুলনায় বাড়তে পারে ৮৯ লাখ টন। সংস্থাটির বিশ্লেষণ অনুযায়ী, পশুখাদ্য উৎপাদন খাত খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক ব্যবহার বাড়াতে প্রধান প্রভাবকের ভূমিকা পালন করবে। বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে এ খাতে বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্যের চাহিদা তৈরি হতে পারে। খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক মজুদ ও ব্যবহারের অনুপাত চলতি মৌসুমে স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অনুপাতের হার দাঁড়াতে পারে ৩১ দশমিক ১ শতাংশে, আগের মৌসুমে যা ছিল ৩০ দশমিক ৯ শতাংশ। এ বছর খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক বাণিজ্যের পরিমাণ পৌঁছতে পারে ৪৮ কোটি টনে, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। দানাদার খাদ্যশস্য বাণিজ্য প্রবৃদ্ধিতে বড় অবদান রাখবে। তবে চাল ও গমের বাণিজ্য কমার আশঙ্কা রয়েছে। জানুয়ারিতে এফএওর খাদ্যশস্যের মূল্যসূচক আগের মাসের তুলনায় ২ দশমিক ২ শতাংশ কমেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কমেছে ভুট্টার দাম। এছাড়া গমের বৈশ্বিক বাজারও ছিল নিম্নমুখী। এফএওর প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ববাজারে গম রপ্তানিতে প্রতিযোগিতা বেড়েছে। জানুয়ারিজুড়ে শস্যটির দাম নিম্নমুখী ছিল। এছাড়া দক্ষিণ গোলার্ধের দেশগুলোয় নতুন গম ওঠায় বাজারে সরবরাহ ছিল পর্যাপ্ত। অন্যদিকে শীর্ষ উৎপাদক দেশ আর্জেন্টিনা ও যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ভুট্টার দাম কমেছে ব্যাপক হারে। তবে জানুয়ারিতে চালের বৈশ্বিক দাম ১ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। থাই ও পাকিস্তানি চালের ঊর্ধ্বমুখী চাহিদা দাম বাড়ার ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করেছে। ভিন্ন একটি প্রতিবেদনে এফএও জানায়, জানুয়ারিতে খাদ্যপণ্যের মূল্যসূচক আগের মাসের তুলনায় ১ শতাংশ কমেছে। গত বছরের একই মাসের তুলনায় কমেছে ১০ দশমিক ৪ শতাংশ। সূচকমান দাঁড়িয়েছে গড়ে ১১৮ পয়েন্টে, যা তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।