চলতি ২০২৩-২৪ কফি বর্ষে পানীয় পণ্যটির উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রধান প্রভাবকের ভূমিকা রাখবে দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকার দেশগুলো। ইন্টারন্যাশনাল কফি অর্গানাইজেশনের (আইসিও) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এ মৌসুমে বিশ্বজুড়ে ১৭ কোটি ৮০ লাখ ব্যাগ (প্রতি ব্যাগে ৬০ কেজি) কফি উৎপাদন হতে পারে, আগের বছর যা ছিল ১৬ কোটি ৮২ লাখ। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে উৎপাদন বাড়বে ৯৮ লাখ ব্যাগ।
সংস্থাটির পূর্বাভাস অনুযায়ী এ বছর কফির বৈশ্বিক ব্যবহার আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ২ শতাংশ বাড়তে পারে। ব্যবহারের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ১৭ কোটি ৭০ লাখ ব্যাগে, আগের বছর যা ছিল ১৭ কোটি ৩১ লাখ। যেসব দেশে পণ্যটি উৎপাদন হয় না, সেসব দেশে ক্রমবর্ধমান চাহিদা এর ব্যবহার বাড়ার পেছনে প্রধান ভূমিকা রাখবে।
চলতি বছর বিশ্বজুড়ে যে পরিমাণ কফি উৎপাদন হবে তার ৫৭ দশমিক ৪ শতাংশ হিস্যাই থাকবে অ্যারাবিকার দখলে। জনপ্রিয় এ জাতের কফি উৎপাদন হতে পারে ১০ কোটি ২২ লাখ ব্যাগ, যা আগের বছর ছিল ৯ কোটি ৪০ লাখ। অন্যদিকে রোবাস্তা জাতের কফি উৎপাদন হতে পারে ৭ কোটি ৫৮ লাখে, আগের বছর যা ছিল ৭ কোটি ৪২ লাখ ব্যাগ।
আইসিও জানায়, চলতি বছর দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোয় কফি উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় ৯ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে ৮ কোটি ৯৮ লাখ ব্যাগে উন্নীত হতে পারে। আফ্রিকার দেশগুলোয় উৎপাদন ১ কোটি ৭৯ লাখ থেকে বেড়ে ২ কোটি ১ লাখ ব্যাগে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে এশিয়া ও ওশেনিয়া মহাদেশে উৎপাদন কিছুটা বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৪ কোটি ৯৯ লাখ ব্যাগে। তবে মধ্য আমেরিকার দেশে উৎপাদন কমে ১ কোটি ৮৭ লাখ ব্যাগে নামতে পারে।
দ্বিবার্ষিক চক্র অনুযায়ী এ বছর ব্রাজিলে কফি উৎপাদন তুলনামূলক হারে বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে এল নিনোর প্রভাব থাকলেও উন্নত সেচ ব্যবস্থার সুবাদে ভিয়েতনামেও উৎপাদন নিয়ে আশাবাদী দেশটির খাতসংশ্লিষ্টরা।
তবে এরপরও উৎপাদন পরিস্থিতি বেশকিছু চ্যালেঞ্জের মুখে থাকবে বলে জানিয়েছে আইসিও। বৈরী আবহাওয়া বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। এল নিনোর প্রভাবে ইন্দোনেশিয়াসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে উৎপাদন ব্যাহত হবে।
ব্রাজিল বিশ্বের শীর্ষ কফি উৎপাদক ও রপ্তানিকারক। অ্যারাবিকা কফির জন্য দেশটির বিশ্বজোড়া খ্যাতি হয়েছে। দ্বিবার্ষিক উৎপাদন চক্র অনুযায়ী সেখানে এক বছর উৎপাদন ঊর্ধ্বমুখী থাকলে অন্য বছর নিম্নমুখী থাকে। ২০২৩ সালে ব্রাজিলে প্রায় ৫ কোটি ৫০ লাখ ব্যাগ (প্রতি ব্যাগে ৬০ কেজি) কফি উৎপাদন হয়েছিল। এ বছর তা বেড়ে ৫ কোটি ৮০ লাখ ৮০ হাজার ব্যাগে উন্নীত হতে পারে।
কোনাব আরও জানায়, এ বছর অ্যারাবিকা উৎপাদন ২০২২ সালের তুলনায় ৪ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে ৪ কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার ব্যাগে পৌঁছতে পারে। অন্যদিকে রোবাস্তা উৎপাদন বাড়তে পারে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। বছর শেষে উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াবে ১ কোটি ৭৩ লাখ ৩০ হাজার ব্যাগে।