রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
২০২৪-২৫ অর্থবছর

ভারতে কয়লা উত্তোলন ১০ দশমিক ৯ শতাংশ বাড়বে

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
  ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
ভারতে কয়লা উত্তোলন ১০ দশমিক ৯ শতাংশ বাড়বে

চীনের পর বৈশ্বিক কয়লা উত্তোলনে বড় হিস্যা ভারতের। ক্রমবর্ধমান চাহিদা মোকাবিলায় এ কয়লার বড় একটি অংশ যাচ্ছে বিদু্যৎ উৎপাদনে। এ কারণে ধাপে ধাপে বাড়ানো হচ্ছে উত্তোলন। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশীয় কয়লা উত্তোলন ১০ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে ১১৩ কোটি টন হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ভারত। দিলিস্নর ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বর্ধিত চাহিদা পূরণে বেসরকারি মালিকানাধীন খনি থেকে কয়লার উত্তোলন বাড়বে। খবর বিজনেস রেকর্ডার।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৭৮ কোটি টন কয়লা উত্তোলনের পূর্বাভাস দিয়েছিল ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান কোল ইন্ডিয়া। বর্তমানে এটি সংশোধন করে আরও সাত কোটি টন বাড়িয়ে সম্ভাব্য উত্তোলনের পরিমাণ ৮৫ কোটি টন প্রাক্কলন করেছে সংস্থাটি। সামগ্রিক উত্তোলনের ক্ষেত্রে ২০২২-২৩ অর্থবছরে কোল ইন্ডিয়ার হিস্যা ছিল ৮০ শতাংশ, উত্তোলন বাড়লেও পরের বছর তা কমে ৭৫ শতাংশ হতে পারে। এখন নতুন পূর্বাভাস অনুযায়ী, প্রত্যাশা পূরণ হলে টানা তৃতীয় বছরের মতো ভারতে কয়লা উত্তোলন ১০ শতাশের বেশি হারে বাড়বে।

সারা বিশ্বে জীবাশ্ম জ্বালানি বিশেষ করে কয়লার ব্যবহার নিয়ে সমালোচনা রয়েছে। জলবায়ু ও পরিবেশ বিষয়ক ফোরামগুলোর অন্যতম এজেন্ডা কয়লার ব্যবহার কমিয়ে আনা। তা সত্ত্বেও বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ভারত এখনো জ্বালানি হিসেবে এ খনিজের ওপর বেশি নির্ভরশীল। এ নির্ভরতার পক্ষে ভারতের মোদি সরকারের যুক্তি হলো, সাশ্রয়ী মূল্যে বিদু্যৎ তাদের অন্যতম এজেন্ডা। এছাড়া জ্বালানির চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে বর্ধিত চাহিদা মেটাতে ভারতকে কয়লা ব্যবহার করতে হচ্ছে। সরকার আরও বলেছে, সারা বিশ্বে ভারতের মাথাপিছু কার্বন নিঃসরণের হার কম। সুতরাং মোট নির্গমন বাড়লেও ভারত কয়লা উত্তোলন বাড়াতে পারে। প্রকৃতপক্ষে ভারতের কয়লাভিত্তিক বিদু্যৎ উৎপাদন ২০২৩ সালে ১১ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে।

২০২২ সালের বসন্তকালীন বিদু্যৎ বিভ্রাট থেকে নিজেদের লক্ষ্যমাত্রা পরিমার্জন করেছে বলে জানায় ভারতের রাষ্ট্রীয় বিদু্যৎ জায়ান্ট এনটিপিসি। তারা এখন আগের চেয়ে জ্বালানি নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। যার প্রভাব পড়েছে বিদু্যৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত জ্বালানির মজুতের ওপর। তাই কয়লা উত্তোলনের সক্ষমতা বাড়ানোয় মনোযোগ দিয়েছে।

বিদু্যৎ উৎপাদনে মূলত তাপীয় কয়লা ব্যবহার করে ভারত। বাজার পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কোলমিন্টের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা ব্যবহারকারী দেশটি বিদু্যতের ব্যাপক চাহিদার কারণে গত বছর তাপীয় কয়লার আমদানি বাড়িয়েছে, যা ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ১৭ কোটি ৬৩ লাখ টনে দাঁড়িয়েছে। এ বছর কয়লাভিত্তিক জ্বালানি উৎপাদন ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে, যা ২০১৯ সালের পর প্রথমবারের মতো নবায়নযোগ্য উৎপাদন প্রবৃদ্ধিকে ছাড়িয়ে গেছে।

পূর্বাভাস অনুযায়ী, অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য কয়লা খনিগুলোয় ২০২৪-২৫ সালে উত্তোলন বেড়ে ১৭ কোটি ৫০ লাখ টনে উন্নীত হবে, যা ২০২৩-২৪ সালে পূর্বাভাসের চেয়ে তিন কোটি টন বেশি।

\হবেসরকারি কোম্পানির কাছে হস্তান্তর করা খনিতে আগামী বছর ৪০ শতাংশের বেশি উত্তোলন বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দুই কোটি টন কয়লা উত্তোলন বাড়বে।

\হছোট খনিগুলো থেকে ২০২৪-২৫ সালে ৭ কোটি ২০ লাখ টন উত্তোলন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এনএলসি ইন্ডিয়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১ কোটি ৭৮ লাখ টন উত্তোলন করবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা চলতি অর্থবছরে ১ কোটি ৪৪ লাখ টন ছিল।

এশিয়ার কয়লাভিত্তিক বিদু্যৎ উৎপাদন বৃদ্ধিতে ভারত সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে। ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও ভিয়েতনামের মতো অন্যান্য কয়লানির্ভর প্রধান অর্থনীতিকে ছাড়িয়ে গেছে।

এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকা, চীন ও পোল্যান্ড এ জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে