শেয়ারবাজারে ১৬ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন

ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ৩২১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৪টির। আর ৩০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে

প্রকাশ | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
আতঙ্ক কাটিয়ে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরেছে দেশের শেয়ারবাজার। প্রায় প্রতিদিন মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে লেনদেনের গতি। ফলে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পালস্না কিছুটা কমে আসছে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। এতে মূল্য সূচকের বড় উত্থান হয়েছে। সূচকের বড় উত্থানের পাশাপাশি ডিএসইতে দেড় হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে। এর মাধ্যমে ২০২২ সালের পর শেয়ারবাজারে আবারও দেড় হাজার কোটি টাকার লেনদেনের দেখা মিলল। সেইসঙ্গে ১৬ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেনের ঘটনা ঘটল। বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, রোববার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৩০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া এ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এমনকি লেনদেনের সময় গাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতাও বাড়তে থাকে। এতে দিনের লেনদেন শেষে ২৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার একদিনে যতটা বাড়া সম্ভব ততটাই বাড়ার তালিকায় স্থান করে নেয়। অর্থাৎ দিনের সর্বোচ্চ পরিমাণ বেড়েছে এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম। লেনদেনের একপর্যায়ে এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দিনের সর্বোচ্চ দামে বিপুল ক্রয়ের আদেশ আসে। বিপরীতে শূন্য হয়ে পড়ে বিক্রিয় আদেশের ঘর। শেয়ারবাজারের ভাষায় এটাকে হল্টেড বলা হয়। দুই ডজনের বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়ে হল্টেড হওয়ার দিনে ডিএসইতে ৩০০-এর বেশি দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ৩২১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৪টির। আর ৩০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৯৬টির দাম ৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে। এর মধ্যে হল্টেড হওয়া ২৫ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রায় ১০০ প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার ক্ষেত্রে এমন দাপট দেখানোর দিনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৬৬ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৮০ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্‌ আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৭১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১২৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার দিনে ডিএসইতে ২০২২ সালের ৬ অক্টোবরের পর সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৫৮০ কোটি ৪০ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১ হাজার ১২২ কোটি ৯ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ৪৫৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এর আগে ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ১ হাজার ৮১০ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এর পর আর এত লেনদেন হয়নি। এ লেনদেন বাড়াতে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার। কোম্পানিটির ৬৯ কোটি ২৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের ৫২ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৪৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফরচুন সুজ। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম, অলিম্পিক অ্যাকসেসরিজ, মালেক স্পিনিং, এনভয় টেক্সটাইল, আইএফআইসি ব্যাংক, একমি পেস্টিসাইড এবং এক্সপ্রেস ইন্সু্যরেন্স। অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ২১৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৯৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২২৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১৭ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।