ফ্লোর প্রাইস (সর্বনিম্ন দরসীমা) তুলে নেওয়ার ধকল কাটিয়ে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে দেশের দুই পুঁজিবাজার। বিগত সপ্তাহে লেনদেন কমলেও সূচক বেড়েছে। বিদায়ী সপ্তাহে অর্থাৎ ২৮ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ৫৭ পয়েন্ট বেড়েছে।
ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিগত সপ্তাহে লেনদেন আগের সপ্তাহের তুলনায় ২৬৭ কোটি টাকা কমেছে। দৈনিক গড় লেনদেন ৯৭০ কোটি থেকে কমে ৯১৬ কোটি টাকায় নেমে এসেছে।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট চার হাজার ৫৮৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আর আগের সপ্তাহে চার দিনে মোট চার হাজার ৮৫২ কোটি ১৬ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছিল। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ২৬৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
সপ্তাহটিতে ডিএসইর প্রধান সূচক ৫৭.৫৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬,২১৩.৯৯ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ্ সূচক ১০.৬৪ পয়েন্ট বেড়ে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২.১৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১,৩৬২.৯৩ পয়েন্টে এবং ২,১১৬.৭৮ পয়েন্টে।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে ৪০৭টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ১৮২টির দর বেড়েছে, ১৭৫টির দর কমেছে, ৪০টির দর অপরিবর্তিত ছিল এবং ১০টির লেনদেন হয়নি।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইর সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) সামান্য বেড়েছে। তথ্য মতে, বিদায়ী সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ১৩.৩৯ পয়েন্টে। আর সপ্তাহ শেষে ১২.৪৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনের নেতৃত্বে উঠে এসেছে বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ৬ কোটি ৪৩ লাখ ৮১ হাজার ৬৭০টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ছিল ২০৬ কোটি ৭৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। যা ছিল ডিএসইর মোট লেনদেনের ৪.৫১ শতাংশ।
লেনদেন তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ৩১ লাখ ৭ হাজার ৫৬৪টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১৬২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ৩.৫৫ শতাংশ।
তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফু-ওয়াং ফুড লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ৪ কোটি ৪০ লাখ ৫১ হাজার ৫৭৯টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১৩৮ কোটি ১৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ৩.০১ শতাংশ।
এছাড়া সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের ১১৭ কোটি ৩১ লাখ ৪০ হাজার টাকার, ইভিন্স টেক্সটাইলের ১১৪ কোটি ৬৫ লাখ ৪০ হাজার টাকার, কর্ণফুলী ইন্সু্যরেন্সের ৯৭ কোটি ৪১ লাখ ৪০ হাজার টাকার, আফতাব অটোমোবাইলসের ৮২ কোটি ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার, মালেক স্পিনিংয়ের ৭৯ কোটি ২৬ লাখ ৯০ হাজার টাকার, খান ব্রাদার্সের ৭৮ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার টাকার এবং অলিম্পিক অ্যাক্সেসরিজের ৭৭ কোটি ২৯ লাখ ২০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহটিতে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে খুলনা প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং লিমিটেডের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৬০.২৬ শতাংশ।
সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে সিকদার ইন্সু্যরেন্সের ৫৯.৫০ শতাংশ, মালেক স্পিনিংয়ের ৩৪.০১ শতাংশ, আরামিট সিমেন্টের ৩১.০১ শতাংশ, আফতাব অটোমোবাইলসের ৩০.৫৬ শতাংশ, এসএস স্টিলের ২১.৩৭ শতাংশ, ইভিন্স টেক্সটাইলের ২১.১৩ শতাংশ, সেন্ট্রাল ইন্সু্যরেন্সের ২০.৯৪ শতাংশ, শাশা ডেনিমসের ২০.২৯ শতাংশ এবং কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ২০.০৮ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে।
সপ্তাহটিতে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর ১৯.৭৫ শতাংশ কমেছে।
সাপ্তাহিক দর পতনের শীর্ষ তালিকায় স্থান পাওয়া অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে জিএসপি ফাইন্যান্সের ১৬.৬৭ শতাংশ, কেএন্ডকিউয়ের ১৫.০৯ শতাংশ, প্রোগ্রেসিভ লাইফ ইন্সু্যরেন্সের ১২.০০ শতাংশ, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স লিমিটেডের ১১.৮৩ শতাংশ, এসিআই লিমিটেডের ১১.০১ শতাংশ, এমারেল্ড অয়েলের ১০.৬২ শতাংশ, আইপিডিসি ফাইন্যান্সের ১০.৩৬ শতাংশ, ইবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের ১০.১৭ শতাংশ এবং জুট স্পিনার্স লিমিটেডের ৯.৫১ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে।