২০২৪-এ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় থাকতে পারে তামার বাজার
প্রকাশ | ৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
বিশ্বজুড়ে চলতি বছর তামার দাম ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় থাকবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে বছরের তৃতীয় ও চতুর্থ প্রান্তিকে মূল্যবৃদ্ধির গতি থাকবে সবচেয়ে বেশি। তবে চীন ও শীর্ষ অর্থনীতির দেশগুলোয় ধীর প্রবৃদ্ধি ধাতুটির চাহিদাকে দুর্বল করে তুলতে পারে। ফলে বছরের বাকি সময় মূল্যবৃদ্ধির গতি থাকবে সীমিত। খবর দ্য হিন্দু বিজনেস লাইন।
ডাচ বহুজাতিক আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান আইএনজি গ্রম্নপের ফাইন্যান্সিয়াল অ্যান্ড ইকোনমিক অ্যানালাইসিস উইং আইএনজি থিংক জানায়, স্বল্পমেয়াদে তামার বাজার নিম্নমুখীই থাকবে। কারণ এ সময় ধাতুটির চাহিদা প্রায় অপরিবর্তিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকের (এপ্রিল-জুন) আগে বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। বাজারদরে উত্থান-পতনের ক্ষেত্রে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদাহার সংক্রান্ত নীতি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে।
চলতি বছর ধাতুটির গড় দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকবে বলেও জানিয়েছে আইএনজি থিংক। একই পূর্বাভাস দিয়েছে বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান ফিচ সলিউশনের গবেষণা ইউনিট বিএমআই। এটি বলছে, চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এখনো অনিশ্চয়তার মধ্যে। শীর্ষ অর্থনীতির দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা। ফলে বিশ্ববাজারে তামার চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। ধীর হতে পারে মূল্যবৃদ্ধির গতি।
ধাতুটিকে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক স্বাস্থ্যের অন্যতম নির্দেশক হিসেবে ধরা হয়। বৈদু্যতিক উপকরণ ও শিল্প খাতের যন্ত্রাংশ তৈরিতে ধাতুটির ব্যবহার ব্যাপক। চলতি বছর ধাতুটির গড় দাম টনপ্রতি ৮ হাজার ৮০০ ডলারে থাকতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিএমআই, যা ২০২৩ সালের গড় দামের চেয়ে বেশি।
লন্ডন মেটাল এক্সচেঞ্জে (এলএমই) সবশেষ শুক্রবার তামার তিন মাসভিত্তিক সরবরাহ চুক্তিমূল্য দাঁড়িয়েছে টনপ্রতি ৮ হাজার ৫৪৩ ডলারে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এটির দাম প্রায় ২ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তন রোধের অংশ হিসেবে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধিতে জোর দিচ্ছে বর্তমান বিশ্ব। ফলে এ খাতে অপরিহার্য ধাতু তামার চাহিদা বাড়ছে লাফিয়ে, কিন্তু বৈশ্বিক সরবরাহ সংকটে এ চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যে ক্রমবর্ধমান ব্যবধানে আকাশচুম্বী হয়ে উঠেছে দাম। দুই বছরের মধ্যে তামার বৈশ্বিক দাম ৭৫ শতাংশেরও বেশি বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বাজার পর্যবেক্ষকরা।
বিএমআইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিচ্ছন্ন জ্বালানিতে স্থানান্তর এবং চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে ডলারের সম্ভাব্য বিনিময় হার হ্রাস তামার বাজারকে ঊর্ধ্বমুখী করে তুলবে।
গত ডিসেম্বরে দেওয়া এক পূর্বাভাসে বিএমআই জানায়, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ঊর্ধ্বমুখী লক্ষ্যমাত্রার কারণে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে অতিরিক্ত ৪২ লাখ টন তামার চাহিদা তৈরি হতে পারে। ফলে ২০২৫ সালের মধ্যে প্রতি টন তামার মূল্য ঠেকতে পারে ১৫ হাজার ডলারে, যা গত বছরের মার্চের রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধির চেয়ে অনেক বেশি।