আসন্ন পবিত্র রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে কিছু পণ্যের আমদানি শুল্ক কমানোর ব্যাপারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কাজ করছে বলে জানিয়েছেন বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। এছাড়া আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বেশ কিছু কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় আগারগাঁওয়ের রাজস্ব ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান তিনি। আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস-২০২৪ উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
আবু হেনা মো. রাহমাতুল মুনিম বলেন, রমজান মাস সামনে রেখে কিছু পণ্যে আমদানি শুল্ক ও কর কমাতে কাজ চলছে। এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব এসেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর কাজ করছে।
এর আগে ২২ জানুয়ারি ভোজ্যতেল, চিনি ও খেজুরের ওপর শুল্ককর ছাড় দিতে এনবিআরকে চিঠি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এসব পণ্যের আমদানি শুল্ক ও কর কমলে ভোক্তা পর্যায়ে পণ্য তিনটির দাম কমতে পারে।
তিনি বলেন, এবার কাস্টমস দিবসের প্রতিপাদ্য 'মিলে নবীন পুরনো অংশীজন, কাস্টমস করবে লক্ষ্য অর্জন'। দিবসটি উপলক্ষে আজ (২৬ জানুয়ারি) এনবিআর ভবনে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। সেমিনারে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী প্রধান অতিথি থাকবেন।
এছাড়া অর্থ বিভাগের সচিব মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম উপস্থিত থাকবেন। যেখানে বাণিজ্যে বিশেষ অবদান রাখা প্রতিষ্ঠান ও এনবিআর কর্মকর্তাকে 'ডবিস্নউ সার্টিফিকেট অব মেরিট-২০২৪' দেওয়া হবে।
এদিকে আইএমএফের দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বিশেষ কিছু কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, আমরা আইএমএফের লক্ষ্য পূরণের জন্য কাজ করছি। আমাদের হাতে যে সময় আছে সে সময়ের মধ্যে কীভাবে লক্ষ্য অর্জন করতে পারি তার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। এর জন্য কাস্টমস, আয়কর, ভ্যাট তিন জায়গাতেই বিশেষ কিছু কৌশল গ্রহণ করেছি।
এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আহরিত মোট ৩ লাখ ৩১ হাজার ৫০২ কোটি টাকার মধ্যে ৯২ হাজার ৭৩২ কোটি এসেছে কাস্টমস থেকে। চলতি অর্থবছরের ডিসেম্বরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আহরিত মোট ১ লাখ ৬৫ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা রাজস্বের মধ্যে ৪৯ হাজার ৬৮ কোটি টাকা বাংলাদেশ কাস্টমস থেকে আহরণ করা হয়েছে। গত অর্থবছরের তুলনায় যার প্রবৃদ্ধির হার ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ।
তিনি বলেন, কাস্টমসের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ভর করে আমদানির ওপর। এসডিজির সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমদানির পরিমাণও বাড়বে। রপ্তানি থেকে তেমন কাস্টমস শুল্ক আসে না, রপ্তানিকে আমরা উৎসাহিত করতে চাই। এসডিজির সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের শিল্প যত দ্রম্নত হতে থাকবে তত এখানে আমদানি বাড়বে। আমরাও এসডিজির সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাব।
পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে কাস্টমস রাজস্ব আহরণ ছাড়াও বাণিজ্য সহজীকরণ, জাতীয় নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদ দমনে কাজ করছে বলেও জানান এনবিআরের এই শীর্ষ কর্মকর্তা।