সাপ্তাহিক শেয়ারবাজার
ডিএসইতে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার লেনদেন
প্রকাশ | ২০ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেন ও সূচক বাড়ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বিদায়ী সপ্তাহে অর্থাৎ ১৪ থেকে ১৮ জানুয়ারি শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হয়েছে। লেনদেন হয়েছে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকারও বেশি।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জাতীয় নির্বাচন কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে মন্দাবস্থা বিরাজ করছিল। দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনের পরদিন থেকেই ঘুরে দাঁড়ায় শেয়ারবাজার। এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা করছেন পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞরা।
বাজার ইতিবাচক হওয়ায় সপ্তাহের শেষ দিনে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ৩৫ কোম্পানি বাদে সব কোম্পানির শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস তুলে দিয়েছে। আগামীকাল রোববার থেকে এটি কার্যকর হবে।
বিগত সপ্তাহে লেনদেন আগের সপ্তাহের তুলনায় এক হাজার ৪৯৩ কোটি টাকা বেড়েছে। দৈনিক গড় লেনদেন ৫৪৯ কোটি থেকে বেড়ে ৭২৭ কোটি টাকায় উঠে এসেছে। যদিও আগের সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য এক দিন কম লেনদেন হয়েছে। গত সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবসই লেনদেন হয়েছে।
ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে পাঁচ দিনে মোট বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট তিন হাজার ৬৩৭ কোটি ২৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আর আগের সপ্তাহে চার দিনে মোট দুই হাজার ১৯৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছিল। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে এক হাজার ৪৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
সপ্তাহটিতে ডিএসইর প্রধান সূচক ৩৫.০৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬,৩৩৬.৭৬ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ্ সূচক ১২.৩৭ পয়েন্ট বেড়ে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১১.৮০ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১,৩৮৮.২৯ পয়েন্টে এবং ২,১২৯.৭১ পয়েন্টে।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে ৪০৬টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ৯৪টির দর বেড়েছে, ৮৪টির দর কমেছে, ২০৯টির দর অপরিবর্তিত ছিল এবং ১৯টির লেনদেন হয়নি।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইর সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) সামান্য বেড়েছে। তথ্য মতে, বিদায়ী সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ১৩.২৩ পয়েন্টে। আর সপ্তাহ শেষে তা ১৩.২৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সপ্তাহটিতে ডিএসইতে লেনদেনের নেতৃত্বে উঠে এসেছে ওরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ৪০ লাখ ১ হাজার ৫২১টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১৭৬ কোটি ১৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা। যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ৪.৫৮ শতাংশ।
লেনদেনের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট এন্ড স্পা লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ১ কোটি ৩৩ লাখ ৪৩ হাজার ৭২৩টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১৫৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ৪.৩১ শতাংশ।
তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন-বিএসসি। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ৮২ লাখ ৯৯ হাজার ৬২৬টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ৯৯ কোটি ৭৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা। যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ২.৭৪ শতাংশ।
আলোচ্য সপ্তাহে লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে দেশবন্ধু পলিমারের ৮৭ কোটি ২৩ লাখ ৯০ হাজার টাকার, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়ামের ৮৬ কোটি ৭৮ লাখ ৮০ হাজার টাকার, কর্ণফুলী ইন্সু্যরেন্সের ৮১ কোটি ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকার, বিচ হ্যাচারিরর ৭৭ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার টাকার, সন্ধানী লাইফ ইন্সু্যরেন্সের ৭৪ কোটি ৯০ লাখ টাকার, মেঘনা লাইফ ইন্সু্যরেন্সের ৭৪ কোটি ১৭ লাখ ৩০ হাজার টাকার এবং পাওয়ার গ্রিডের ৭১ কোটি ২১ লাখ ৫০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
বিদায়ী সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে ওরিয়ন ইনফিউশনের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ২৫.৮২ শতাংশ। সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিচ হ্যাচারির ২৩.১৩ শতাংশ, সন্ধানী লাইফ ইন্সু্যরেন্সের ২২.০২ শতাংশ, কর্ণফুলী ইন্সু্যরেন্সের ১৬.১৫ শতাংশ, ইনটেক লিমিটেডের ১৪.০৬ শতাংশ, দেশবন্ধু পলিমারের ১৩.৭৬ শতাংশ, খান ব্রাদার্সের ১২.৩২ শতাংশ, এক্সপ্রেস ইন্সু্যরেন্সের ৯.৪৭ শতাংশ, শমরিতা হাসপাতালের ৮.৯৫ শতাংশ এবং কোহিনূর কেমিক্যালের ৮.৪০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে।
সপ্তাহটিতে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে ফাস ফাইন্যান্সের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে ৯.৬৪ শতাংশ। সাপ্তাহিক দর পতনের শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে মাইডাস ফাইন্যান্সের শেয়ারদর কমেছে ৭.০৩ শতাংশ, মিডল্যান্ড ব্যাংকের ৬.৩৩ শতাংশ, আইএফআইএল ইসলামী মিউচুয়াল ফান্ডের ৫.৮৮ শতাংশ, বেঙ্গল উইন্ডশোরের ৫.৬২ শতাংশ, ইয়াকিন পলিমারের ৫.১৩ শতাংশ, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফের ৪.৯২ শতাংশ, প্রাইম ফাইন্যান্স ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ডের ৪.৮৬ শতাংশ, সোনালী লাইফ ইন্সু্যরেন্সের ৪.৮৪ শতাংশ এবং কনফিডেন্সের ৪.৭২ শতাংশ।