ভোটের পর শেয়ারবাজারে সূচকের বড় লাফ
সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৪১ কোটি ১৩ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হওয়া ৩৪৪ কোটি ৪৫ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৯৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকা
প্রকাশ | ০৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের শেয়ারবাজারে সূচকের বড় উত্থান দেখা গেছে। এদিন দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্যসূচক বেড়েছে ২৫.৩৪ পয়েন্ট। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে গত দুই মাস ধরে নেতিবাচক ধারায় ছিল শেয়ারবাজার।
ভোটের পর প্রথম কার্যদিবস সোমবার ডিএসইতে বেড়েছে একশ'টির বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দর। অপরদিকে সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দর বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে মূল্যসূচক।
এর আগে সোমবার টানা ৩ দিন বন্ধ শেষে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন রোববার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওইদিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া গত শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি ছিল। এদিন সকাল ১০টা থেকে উভয় পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয়। এ লেনদেন চলে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্রিক রাজনৈতিক অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে গত তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে নেতিবাচক ধারায় ছিল শেয়ারবাজার। নতুন বছর ২০২৪ সালের শুরুতেও শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা যায়। বিনিয়োগকারীদের বিক্রির চাপে প্রায় প্রতিদিনই লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়। সেই সঙ্গে লেনদেন আশঙ্কজনক হারে কমে লেনদেন।
তবে ভোটের আগের কার্যদিবস অর্থাৎ গত বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) বিক্রির চাপ কিছুটা কমে। এতে লেনদেনের গতি খুব বেশি না বাড়লেও দাম বাড়ার তালিকায় চলে এসেছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। ফলে মূল্যসূচকে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা ছিল। ভোটের পর শেয়ারবাজারে অস্থিরতার আশঙ্কা থাকলেও তা হয়নি। বরং শেয়ারবাজার ইতিবাচক ধারায় ফেরার যে ইঙ্গিত দিয়েছিল, ভোটের পর প্রথম কার্যদিবসে সেটি অব্যাহত থাকে।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া এ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এমনকি লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাও বেড়েছে। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ১১৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৪টির। আর ১৬৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২৫.৩৪ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৬৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৬৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১০২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৪১ কোটি ১৩ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হওয়া ৩৪৪ কোটি ৪৫ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৯৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বিডি থাই অ্যালুমেনিয়ামের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৪ কোটি ৫৪ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশনের ১৬ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৪ কোটি ২৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।
এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ফু-ওয়াং ফুড, রূপালী ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ইন্সু্যরেন্স, ইস্টার্ন হাউজিং, ওরিয়ন ইনফিউশ এবং খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজ।
দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কোম্পানি হলো- মিডল্যান্ড ব্যাংক, মাইডাস ফাইন্যান্স, বিডি থাই, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, রূপালী ব্যাংক, ফু-ওয়াং ফুড, এফএএস ফাইন্যান্স, সিএপিএম আইবিবিএল মিউচু্যয়াল ফান্ড, প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচু্যয়াল ফান্ড ও খান ব্রাদার্স পিপি।
দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০ কোম্পানি হলো- স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, স্ট্যান্ডার্ড ইন্সু্যরেন্স, আজিজ পাইপস, শ্যামপুর সুগার, লিব্রা ইনফিউশন, আনলিমা ইয়ার্ন, আরএসআরএম স্টিল, ওরিয়ন ইনফিউশন, জেমিনী সি ফুড ও ইয়াকিন পলিমার।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৬১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২০টির এবং ৭২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।