মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইরানে ট্রাম্পের অর্থনৈতিক ধ্বংসযজ্ঞ ঠেকানো দুষ্কর বাইডেনের

যাযাদি ডেস্ক
  ২৯ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০

ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করা জো বাইডেনের জন্য সহজ হবে বলে জানিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, একটু সদিচ্ছা ও জটিল এই সমস্যা সমাধান করতে পারে। তবে সাধারণ দৃষ্টিতেই বোঝা যাচ্ছে, ইরানের অর্থনীতিতে ট্রাম্পের রেখে যাওয়া বেশির ভাগ ধ্বংসস্তূপ স্থায়ী হবে। খবর বস্নুমবার্গ।

২০১৫ সালে বারাক ওবামা প্রশাসনের সঙ্গে হওয়া পারমাণবিক চুক্তির অধীনে হাজার হাজার ব্যবসার জন্য ইরানের অর্থনীতিতে বৈদেশিক বিনিয়োগের প্রতিশ্রম্নতি দেওয়া হয়েছিল। পরিবর্তে দেশটি আরও বেশি নিষেধাজ্ঞা, আন্তর্জাতিক তেলবাজার থেকে প্রত্যাখ্যাত এবং ২০১৮ সাল থেকে ১২ শতাংশ অর্থনৈতিক মন্দার মুখোমুখি হয়েছে। তারপরও আবার দেশটি নভেল করোনাভাইরাস মহামারিতে মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে সবচেয়ে খারাপভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। পশ্চিমা সংস্থাগুলো ও ইরানের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করা পরামর্শদাতাদের মতে, বাইডেন যুগের কোনো পুনরুদ্ধার এখন শিশুর পদক্ষেপের মতো হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্টদের মধ্যে নীতির নাটকীয় পরিবর্তনের অর্থ হলো নতুন চুক্তির আত্মবিশ্বাস তৈরির লড়াই।

তেহরানভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এরা এন্টারপ্রাইজের প্রধান নির্বাহী সাইরাস রাজ্জাগি বলেন, কোটি কোটি ডলার ক্রেডিট লাইন প্রসারিত হয়েছিল, প্রচুর প্রত্যাশা ছিল এবং তার পরে ট্রাম্প সেই চুক্তি গলা টিপে মেরেছিলেন। এবার সবাই অনেক সতর্ক। প্রত্যাশা কম, তবে উচ্চাশা রয়েছে।

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, তিনি ইরানের সঙ্গে পুনরায় চুক্তিতে ফিরে যাবেন। চুক্তিতে ইউরোপীয় স্বাক্ষরকারীরা পারমাণবিক কর্মসূচি সীমাবদ্ধ করার বিনিময়ে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছিলেন। গত ২৩ নভেম্বর চুক্তি নিয়ে পুনরায় আলোচনা শুরু হয়েছে।

সে সময় ফরাসি তেল জায়ান্ট টোটাল এসই ইরানের তেল মন্ত্রণালয় ও চীনের সিএনপিসির সঙ্গে ৫০০ কোটি ডলারের একটি যৌথ চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। গাড়ি নির্মাণ সংস্থা পিউজিওট এসএ ২০১৮ সালের জুনে ইরানে আরও গাড়ি উৎপাদন করার পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছিল। এর মাধ্যমে এক দশকের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো সংস্থাটি ফ্রান্সের বাইরে তার বৃহত্তম বাজার ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল। ইরানের বাজারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে উভয় সংস্থার কর্মকর্তারা মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন। বারাক ওবামার আরোপিত নিষেধাজ্ঞার চেয়ে ট্রাম্পের তথাকথিত 'সর্বাধিক চাপের' কৌশলটি অনেক বেশি নির্মম ছিল। তেল বিক্রি বন্ধ হওয়ায় ইরানের অর্থনীতিতে ধস নেমেছিল। বস্নুমবার্গের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে অপরিশোধিত তেল রপ্তানির পরিমাণ প্রতিদিন ২০ লাখেরও বেশি ব্যারেল থেকে গত মাসে দিনে ১ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেলে নেমে এসেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে